Saturday, April 2, 2011

ভিডিও এডিটিং টিউটোরিয়াল : ভিডিও ক্যাপচারের জন্য হার্ডঅয়্যার এবং সফটঅয়্যার

একসময় ভিডিও রেকর্ড করা বলতে শুধুমাত্র টেপে রেকর্ড করা বুঝাত। এডিটিংএর জন্যও ব্যবহার করা হত ভিসিআর জাতিয় যন্ত্রপাতি। বর্তমানে ভিডিও এডিটিং এর জন্য ব্যবহার করা হয় কম্পিউটার। কাজেই ভিডিও যদি টেপে থাকে তাহলে তাকে কম্পিউটারের ভিডিও ফাইল হিসেবে পেতে হয়। সাধারন ধারনায় এটাই ভিডিও ক্যাপচার।
ভিডিও ক্যাপচারের জন্য প্রয়োজন ক্যাপচার কার্ড নামের বিশেষ হার্ডঅয়্যার। এরসাথে ভিসিআর কিংবা ক্যামেরা সংযোগ দিয়ে সেটা প্লে করা হয় এবং বিশেষ সফটঅয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারে রেকর্ড করা হয়।
যদি টেপ ব্যবহার করা হয় (মিনি-ডিভি, এইচডিভি, ডিভিক্যাম, হাই-৮ কিংবা বেটাক্যাম) তাহলে এটা এখনও প্রচলিত পদ্ধতি। পার্থক্য হচ্ছে কোন কোন ক্যামেরায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্যাপচার করার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন এইচডিভি কিংবা মিনি ডিভি থেকে রেকর্ড করার জন্য প্রচলিত ক্যাপচার কার্ডের বদলে ফায়ারঅয়্যার পোর্ট (আইইই-১৩৯৪) ব্যবহার করা যায় এবং এই কার্ড অনেক সময় কম্পিউটারের মাদারবোর্ড কিংবা গ্রাফিক্সকার্ডের সাথে বিল্টইন অবস্থায় থাকে। যদি না থাকে তাহলেও হাজারখানেক টাকার মধ্যে এই কার্ড কিনে নেয়া যায়। কোন কোন ক্যামেরা থেকে ইউএসবি পোর্ট ব্যবহার করেও ভিডিও ফাইল সেভ করা যায়।
ইদানিং এইচডিএমআই পোর্ট ব্যবহার করে হাই-ডেফিনিশন ভিডিও ক্যাপচারের কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বেশকিছু কার্ড বাজারে এসেছে। অনেকে বলছেন এটাই হবে ভবিষ্যতের সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য পদ্ধতি।
বর্তমান টেপের ব্যবহার কমে আসছে দ্রুত। অনেক কোম্পানী টেপভিত্তিক ক্যামেরা তৈরী বন্ধ করে দিয়েছে। এর বদলে যা ব্যবহার করা হচ্ছে সেখানে ক্যাপচার শব্দটি বেমানান, কারন সেখানে ক্যামেরাতেই ভিডিও ফাইল হিসেবে ফাইল সেভ হয়। তাকে কম্পিউটারে সরাসরি কপি করা যায়।
মাধ্যমগুলি হতে পারে ডিভিডি, হার্ডডিস্ক, বিল্টইন ফ্লাশ কার্ড কিংবা সাধারন মেমোরী কার্ড। এদের মধ্যে কার্ডভিত্তিক ক্যামেরার দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। বর্তমানের অধিকাংশ ডিজিটাল ষ্টিল ক্যামেরাতেও ভিডিও করার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রফেশনাল ক্যামেরাগুলি ব্যবহার করছে এই মাধ্যম। কাজেই ভিডিও ক্যাপচার ধারনাটি ক্রমেই বদলে যাচ্ছে।

ভিডিও ক্যাপচার কার্ড
ভিডিও ক্যাপচার এবং এডিটিং এর জন্য কোন ধরনের কার্ড এবং যন্ত্রপাতি প্রয়োজন সেটা জেনে নিন।
পেশাদারী কাজের জন্য ভাল মানের ক্যাপচার কার্ড প্রয়োজন। এগুলি কাপচার করার পাশাপাশি এডিটিং এর সময় নানারকম সুবিধে দেয়। কোন কোন ইফেক্ট এধরনের কার্ড না থাকলে ব্যবহার করা যায় না। এতে প্রসেসর থাকে। ফলে প্রসেসিংএর সময় কাজ দ্রুত হয়। এজন্য ম্যাটরক্স, ক্যানোপাস, পিনাকল, এটিআই এদের নানারকম দামের কার্ড রয়েছে। কয়েক হাজার টাকা থেকে শুরু করে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত। হলিউডের মানের কাজের জন্য আরো আরো দামী কার্ড এবং এডিটিং হার্ডঅয়্যার প্রয়োজন হয়।
মধ্যম মানের কাজের জন্য পিনাকল, স্ন্যাজি এদের কার্ড বাংলাদেশে প্রচলিত। কিছু কার্ড ইউএসবি পোর্টে লাগিয়ে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া কিছু টিভিকার্ডেও যথেস্ট ভাল মানের ভিডিও ক্যাপচার করা যায়।
ক্যামেরা থেকে খোলা যায় এমন কার্ড ব্যবহারের জন্য একটি কার্ড রিডারই যথেষ্ট। একই পদ্ধতিতে ডিভিডি ভিত্তিক ক্যামেরার ভিডিও সরাসরিই কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে।
কার্ড খোলা যায় না, অথবা ইন্টারনাল হার্ডডিস্ক রয়েছে এধরনের ক্যামেরাকে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ দিতে হয়। ক্যামেরা অনুযায়ী এই সংযোগ ইউএসবি, ফায়ারঅয়্যার থেকে শুরু করে এনালগ পর্যন্ত সবকিছুই হতে পারে। নির্দিষ্ট ক্যামেরার তথ্য ক্যামেরার ম্যানুয়েলে উল্লেখ করা রয়েছে।
ইউএসবি পোর্টে ব্যবহারের জন্যও ক্যাপচার ডিভাইস পাওয়া যায়। এর সুবিধে হচ্ছে ল্যাপটপে ব্যবহার করা যায় অনায়াসে। কোন কোন টিভি কার্ড ব্যবহার করে ভাল মানের ভিডিও ক্যাপচার করা যায়।
কাজেই ভিডিও ক্যাপচারের জন্য আপনার প্রয়োজন হতে পারে ভিডিও সোর্স অনুযায়ী নিচের যে কোনটি (বা একাধিক)
.          এনালগ ক্যাপচার কার্ড
.          ডিভি/এইচডিভির জন্য ফায়ারঅয়্যার/আইইই-১৩৯৪ পোর্ট (বা কার্ড)
.          মেমোরীকার্ড এর জন্য কার্ড রিডার
.          ইউএসবি বা ইন্টারনাল টিভিকার্ড
.          ভিডিও প্লে করার জন্য ভিসিআর/ক্যামেরা

ক্যাপচারের জন্য সফটঅয়্যার
সাধারনত ক্যাপচার কার্ডের সাথে ক্যাপচার এবং ভিডিও এডিটিং সফটঅয়্যার দেয়া হয়। যেমন কোন কোন কার্ডের সাথে এডবি প্রিমিয়ার, ইডিয়াস, ভিডিও ষ্টুডিও, পিনাকল ষ্টুডিও ইত্যাদি সফটঅয়্যার দেয়া হয়। সাধারনভাবে সব ভিডিও এডিটিং সফটঅয়্যারের সাথে ভিডিও ক্যাপচারের ব্যবস্থা থাকে। কিছু কার্ড শুধুমাত্র তাদের দেয়া সফটঅয়্যার থেকে ব্যবহার করা যায়। যেমন পিনাকল ষ্টুডিও কার্ডের এনালগ ক্যাপচারের জন্য পিনাকল ষ্টুডিও সফটঅয়্যার ব্যবহার করতে হয়। স্ন্যাজি কার্ডের জন্য তাদের সফটঅয়্যার ব্যবহার করতে হয়।
সাধারনভাবে ব্যবহৃত কোন কোন সফটঅয়্যার থেকে ক্যাপচার করার পর সেখান থেকেই সরাসরি ডিভিডি রাইট করা যায়। যেমন কোরেল ডিভিডি মুভি ফ্যাক্টরী (আগের ইউলিড), সাইবারলিংক পাওয়ার প্রডিউসার ইত্যাদি। উল্লেখ করা যেতে পারে ভিডিও ডিভিডি তৈরীর জন্য ভিডিওর নির্দিষ্ট ফরম্যাট প্রয়োজন হয়। ক্যামেরার ফাইলকে সরাসরি ডিভিডিতে রাইট করলে ভিডিও ডিভিডি হিসেবে কাজ করে না। এজন্যই এই সফটঅয়্যারগুলি প্রয়োজন হয়।
বর্তমানে ভিডিও কাজের জন্য নানারকম পদ্ধতি, অসংখ্য হার্ডঅয়্যার এবং সফটঅয়্যার রয়েছে। আপনার জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি উপযোগি সে সম্পর্কে ভালভাবে জেনে তবেই সেটার দিকে যান।

No comments:

Post a Comment