ফটোশপ ব্যবহার করে তৈরী ইমেজ বা ডিজাইন আপনি ব্যবহার করতে পারেন নিজস্ব প্রিন্টারে, কিংবা ছাপাখানার অফসেট প্রিন্টারে। ব্যবহার করতে পারেন ওয়েব পেজ, মাল্টিমিডিয়ায় বা এনিমেশন-ভিডিও এডিটিং কাজে। কিংবা নিজের বা অন্যের কম্পিউটারে। কোথায় ব্যবহার করা হবে তার ওপর নির্ভর করে আউটপুট ইমেজ ফরম্যাট ঠিক করে নিতে হয়। কোথায় কি ফরম্যাট ব্যবহার করবেন এবং কি কি বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে একবার জেনে নিন।
ইমেজ মোড ব্যবহার
কম্পিউটার এর ডিসপ্লেতে ব্যবহৃত হয় আরজিবি (রেড-গ্রিন-ব্লু) নামে তিনটি রং, কিন্তু চাররঙা ছাপা যাকে বলে সেই অফসেটে ব্যবহৃত হয় সিএমওয়াইকে (সায়ান-ম্যাজেন্টা-ইয়েলো-ব্লাক) নামে চারটি রং। আপনি যদি আরজিবি মোডের ইমেজ অফসেট প্রিন্টারে প্রিন্টের জন্য জমা দেন তাতে ভাল ফল পাওয়া যাবে না। কাজেই যদি সিএমওয়াইকে প্রিন্টারে ব্যবহার ব্যবহার করা হয় তাহলে ইমেজ মোড পরিবর্তন করে নিন।
. ইমেজ মোড পরিবর্তন করা যাবে মেনু থেকে Image – Mode কমান্ড ব্যবহার করে সেখানকার লিষ্ট থেকে।
. যদি সাদাকালো হিসেবে প্রিন্ট করতে হয় তাহলে আগেই Grayscale মোডে কনভার্ট করে নিন। এরফলে ব্রাইটনেস-কন্ট্রাষ্ট ইত্যাদি সঠিকভাবে পাওয়া যাবে।
এর বাইরে অধিকাংশ সময় আরজিবি মোড ব্যবহার করা হয়। কিছু কিছু ফিল্টার যা আরজিবি মোডে কাজ করে যা সিএমওয়াইকে মোডে কাজ করে না। যদি এধরনের ফিল্টার ব্যবহার করতেই হয় তাহলে আরজিবি মোডে পরিবর্তন করে নিন। ফাইনাল কাজের সময় মোড পরিবর্তন করুন।
ফটোশপ ফরম্যাটে সেভ করা
পরবর্তীতে আবারও কাজ করতে হতে পারেন এমন ফরম্যাট হিসেবে ফটোশপের নিজস্ব ফরম্যাট সবচেয়ে সুবিধেজনক। সরাসরি সেভ কমান্ড দিলে এই ফরম্যাটে সেভ হয়। এই ফরম্যাটে সমস্ত বিষয় অপরিবর্তিত থাকে, ফলে ছাপাখানায় দেয়ার সময়ও এই ফরম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
অন্য নামে বা অন্য ফোল্ডারে সেভ করার জন্য Save এর বদলে Save As কমান্ড ব্যবহার করুন।
অন্যান্য ফরম্যাটে সেভ করা
যদি ফটোশপের পুরনো ভার্শন ব্যবহার করেন তাহলে ফটোশপে কাজ করার পর জেপেগ কিংবা অন্য ফরম্যাটে সেভ করার জন্য কমান্ড দিতে হবে Save as a copy. এরপর আপনি ফরম্যাট পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন। নতুন ভার্শনে সরাসরি Save As কমান্ড দিয়েই ফরম্যাট পরিবর্তন করা যায়।
ফটোশপ ফরম্যাট সাধারনভাবে ফটোশপ ছাড়া ওপেন করা যায় না। আবার অন্যান্য ফরম্যাটে সেভ করলে মান নষ্ট হয়। ফটোশপের ফরম্যাট ছাড়া উচু মান ঠিক রাখার জন্য ফরম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
মাল্টিমিডিয়া বা ইন্টারনেটে ব্যবহারের সময় ফাইলের আকার ছোট রাখা গুরুত্বপুর্ন। এজন্য জেপেগ সবচেয়ে জনপ্রিয়। অবশ্যই মনে রাখবেন, জেপেগ ফরম্যাটে লেয়ার থাকে না। কাজেই একাধিক লেয়ার নিয়ে কাজ করলে সেগুলি একসাথে একটিমাত্র লেয়ারে পরিনত হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ব্যবহার
ফটোশপ ফরম্যাটে সরাসরি ট্রান্সপারেন্সি ব্যবহার করা যায় কিন্তু জেপেগে ট্রান্সপারেন্সি থাকে না। অথচ ওয়েবপেজ, এনিমেশন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজে ট্রান্সপারেন্সি গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। সব ধরনের ফরম্যাটে ট্রান্সপারেন্সি রাখা যায় না।
. ট্রান্সপারেন্সিসহ ইমেজ সেভ করার জন্য মেনু থেকে Save for web and Devices কমান্ড দিন। নতুন একটি উইন্ডো পাওয়া যাবে।
. ইমেজ ফরম্যাটের জন্য PNG সিলেক্ট করুন।
. Transparency অপশনের টিক চিহ্ন নিশ্চিত করুন।
. কম্পিউটারের মনিটর এবং ইন্টারনেটের রঙের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কোথায় ব্যবহার করা হবে সেই অনুযায়ী প্রিভিউ দেখে নিতে পারেন।
. ইমেজ প্রিভিউ এর নিচে বামদিকে ফাইলসাইজ লক্ষ্য করুন। ফাইল সাইজ এবং ইন্টারনেটে কত স্পিডে ব্যবহার করতে কত সময় লাগবে জানা যাবে। ইন্টারনেটের বিভিন্ন স্পিডের জন্য সময়ের বিষয় জানতে পারেন পাশের তালিকা থেকে স্পিড পরিবর্তন করে।
. এখানেই ইমেজের আকার পিক্সেলে অথবা শতকরা হারে পরিবর্তন করে আউটপুট নেয়া যাবে।
. মোবাইল ফোনে ব্যবহার করতে চাইলে Device Central বাটনে ক্লিক করুন। বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য প্রিভিউ দেখা যাবে। আপনার প্রয়োজনীয় ডিভাইস সিলেক্ট করুন।
. জিফ এবং পিং ফরম্যাটে ট্রান্সপারেন্সি ব্যবহার করা যায়। সীমিত রং হলে জিফ ব্যবহার করুন, অন্যথায় পিং ব্যবহার করুন।
. সবকিছু ঠিক থাকলে Save বাটনে ক্লিক করুন।
গুরুত্বপুর্ন কিছু ইমেজ ফরম্যাট
ইমেজ ফরম্যাট বাছাইয়ের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি ফরম্যাট ব্যবহার করা সুবিধেজনক। এজন্য যে নিয়ম মেনে চলতে পারেন তা হচ্ছে;
. ভাল মান এবং আগামীতে পরিবর্তন করা প্রয়োজন হতে পারে এজন্য ফটোশপের নিজস্ব PSD ফরম্যাট।
. অফসেট প্রিন্ট করার জন্য PSD অথবা TIFF ফরম্যাট।
. শুধূমাত্র প্রিন্ট হাউজে দেয়ার জন্য EPS ফরম্যাট।
. সাধারন ব্যবহার, ওয়েব এবং মাল্টিমিডিয়ার জন্য JPG, JPEG ফরম্যাট।
. ট্রান্সপারেন্সিসহ ওয়েবে ব্যবহারের জন্য PNG ফরম্যাট।
. ট্রান্সপারেন্সি সহ এনিমেশন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি কাজের জন্য PNG, TGA ফরম্যাট।
No comments:
Post a Comment