Tuesday, June 11, 2013

সাধারন যে ভুলগুলি ফ্রিল্যান্সারের বিপদ ডেকে আনতে পারে



হয়ত লক্ষ করেছেন ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যোগ দেয়া মানুষের সংখ্যা যেমন বিপুল তেমনি এদের বড় একটি অংশ দুএক বছরের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং থেকে সরে যান।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে, এটা কেন হচ্ছে ?
কিছু ব্যক্তি ক্রমেই ভাল করছেন, ফ্রিল্যান্সিং এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ আর কিছু ব্যক্তি অপছন্দ করছেন, অবশ্যই দৃশ্যমান কারন রয়েছে।

অনেকে মনে করেন কাজের যোগ্যতা হয়ত একমাত্র কারন। বাস্তবে দক্ষতা থাকার পরও ফ্রিল্যান্সিং ছেড়ে যাওয়ার কারনগুলি বিশ্লেষন করে সাধারন কিছু ভুল পাওয়া যায়। এই বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতন থেকে যে কেউ ক্রমাগত ভালোর দিকে যেতে পারেন।

যে ভুলগুলি কাউকে ফ্রিল্যান্সিং থেকে সরে যাওয়ার কারন হতে পারে সেগুলি তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
.        খুব বেশি আন্তরিকতা দেখানো
বিশেষ করে শুরুর দিকে ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্টকে যতটা সম্ভব সুযোগ দিতে চেষ্টা করেন। এর খারাপ দিক হচ্ছে ক্লায়েন্ট ক্রমাগত চাপ বৃদ্ধি করতে থাকেন। উদাহরন দিয়ে দেখা যাক, হয়ত একজন ক্লায়েন্টের লোগো ডিজাইন করে দিলেন। এরপ তিনি বললেন সেটা বিজনেস কার্ডে কেমন দেখাবে জানতে চান। একবার একাজ শুরু করলে খাম, লেটারহেড, ওয়েব ব্যানার থেকে শুরু করে নানাবিধ কাজ তুলে ধরবেন। ফল হিসেবে আয়ের তুলনায় পরিশ্রম এতটাই বেড়ে যায় যে স্বাভাবিক কাজ সময়মত করা সম্ভব হয় না।
কাজে পেশাদারিত্ব দেখিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। ক্লায়েন্ট অতিরিক্ত কাজ চাইলে তাকে এটাও জানিয়ে দিন, সেটা অতিরিক্ত। সেকারনে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে।
.        কাজে গাফিলতি করা
অতিরিক্ত আন্তরিকতার ঠিক বিপরিত চিত্র কাজে গাফিলতি দেখানো। ক্লায়েন্ট যা করতে বলেছেন তারথেকে কম করা বা সময়মত না করা। একারনে কাজশেষে কোন কোন ক্লায়েন্ট যেমন খুশি হন তেমনি কোন কোন ক্লায়েন্ট বিরক্ত হন। ক্লায়েন্ট খুশি রাখা ফ্রিল্যান্সারের অন্যতম দায়িত্ব। একজন খুশি ক্লায়েন্ট পরবর্তীকে কোন প্রশ্ন ছাড়াই কাজ দেন, এমনকি পরিচিত কারো কাজের জন্য সুপারিশ করেন।
.        ক্লায়েন্টের বক্তব্যে মনোযোগ না দেয়া
অনেকেই ক্লায়েন্টের দেয়া তথ্যের ওপর একবার চোখ বুলিয়ে যোগাযোগ শুরু করেন। একারনেই ফ্রিল্যান্সারদের বড় একটি অংশ সমস্যায় পড়েন। হয়ত কোন ডিজাইনের বিষয়ে দুএক শব্দে পছন্দের রং বা ফন্ট সম্পর্কে বলেছেন যা লক্ষ করা হয়নি।
কাজের নির্দেশ ভালভাবে একাধিকবার পড়ে, ভালভাবে বুঝে তবেই সেই কাজের দিকে যাওয়া উচিত। কোথাও সামান্য সমস্যা থাকলে সেটা জানার চেষ্টা করুন, এরপরও স্পষ্ট না হলে সেকাজ বাদ দিয়ে অন্য কাজের চেষ্টা করুন।
.        সময়মত যোগাযোগ না করা
কোন ফ্রিল্যান্সার মনে করতে পারেন, তিনি সময়মত কাজ করছেন, সময়মত ভালভাবে সেটা বুঝিয়ে দেবেন। মাঝখানে কোন মেসেজ পাঠালে তার জবাব না দিলেও চলে। এই ভুলের কারনে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। হয়ত কোন বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত বদল করতে চান।  
সাধারন নিয়ম, ক্লায়েন্ট যে মেসেজগুলি দেন সেগুলি যতটা সম্ভব দ্রুত দেখুন এবং উত্তর দিন। তিনি বিরক্ত হলে কাজ বাতিল করে দিতে পারেন।
.        কাজের হিসেব না রাখা
প্রতিদিন হয়ত অনেকগুলি কাজের জন্য যোগাযোগ করছেন, অনেকের কাজ করছেন। তাদের প্রত্যেকের হিসেব রাখা কঠিন। কিন্তু কাজটি জরুরী। একটি ফরম তৈরী করে সেখানে সহজে কাজ, ক্লায়েন্ট, আয় ইত্যাদির হিসেব রাখা যেতে পারে।
.        চুক্তি ব্যবহার না করা
ক্লায়েন্টের কাজ শুরু আগে চুক্তি না করা বড় ধরনের সমস্যার কারন হয়ে দাড়ায়। ঠিক কি কাজ করতে হবে, কতদিনে করা হবে, কতবার পরিবর্তণ করা হবে, অর্থের পরিমান কত, কতদিনে-কিভাবে দেয়া হবে এই বিষয়গুলি আগেই ঠিক করে নেয়া ইচত। এরফলে পরবর্তীতে অর্থ পেতে সমস্যা হলে ফ্রিল্যান্সিং সাইট চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পেতে সহায়তা করতে পারে।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, নিজস্ব কাজে দক্ষতার বিকল্প নেই বলেই সেটা উল্লেখ করা হচ্ছে না। ধরে নেবেন না দক্ষতা ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং কাজে ভাল করা যায়। যে বিষয়ে কাজ করবেন সেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন একেবারে প্রাথমিক দায়িত্ব।

1 comment:

  1. আমাদের দেশের সম্মান বৃদ্ধিতে ফ্রিল্যান্সারদের অনেক বেশি সচেতন ভূমিকা পালন করা উচিৎ। এবং ভাইয়া বেশ ভালো কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। শুধু কাজ জানলেই হয় না, আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোও দক্ষতার সাথে পালন করা প্রয়োজন।

    ReplyDelete