Friday, July 8, 2011

অনলাইন লেনদেন কাজে পে-পল, ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সাবধান থাকুন

বর্তমানে বাংলাদেশ (কিংবা ভারত) থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ অনলাইনে কাজ করে অর্থ উপার্জনে আগ্রহি। কোন আউটসোর্সিং সাইটে কাজ করেই হোক, পিটিসি এর মত ব্যবস্থা হোক অথবা ব্লগিং এর মাধ্যমে এডসেন্স এর মত কাজই হোক। সকলের জন্য বড় একটি সমস্যা অনলাইনে টাকা গ্রহন করা কিংবা কাউকে টাকা দেয়া। যেখানে টাকার বিষয় রয়েছে সেখানে লোক ঠকানোর বিষয় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ঠকার আজে জেনে নিন আপনি কিভাবে সাবধান হবেন।
আপনি এডসেন্স ব্যবহার করতে চাইলে আপনার প্রথম প্রয়োজন আপনার ডোমেন-হোষ্টিং এর খরচ দেয়া। কম খরচেই আপনি আমেরিকার হোষ্টি ব্যবহার করতে পারেন। আপনাকে অর্থ দিতে হবে অনলাইনে। আবার আপনি যদি ফ্রিল্যান্সার এর মত প্রতিস্ঠানের মাধ্যমে কাজ করেন তারা টাকা দেবে অনলাইনে। সেটাও আপনাকে হাতে পেতে হবে। কাজেই অনলাইন লেনদেন ছাড়া আপনার গতি নেই।
এজন্য যে পদ্ধতিগুলি রয়েছে তারমধ্যে জনপ্রিয় ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, পে-পল ইত্যাদি। এই প্রধান দুটি ব্যবস্থা ব্যবহারের সুযোগ না থাকায় সবকিছুই জটিল হয়ে রয়েছে। একে সুযোগ হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে, অনেকে ব্যবসাও করছেন।
প্রথমে পে-পলের বিষয়টি দেখা যাক। বাংলাদেশ থেকে পে-পল ব্যবহার করা যায় না (সরকারী নিয়মের কারনে)। তারপরও পে-পল ব্যবহার করতে চাইলে যা করতে পারেন,
.          অন্য দেশের নামে একাউন্ট করা।
.          অন্য কারো একাউন্ট ব্যবহার করা।
প্রথমে একটি বিষয় নিশ্চিত হয়ে নিন। আপনি বাংলাদেশে বসে অন্য দেশের নাম ব্যবহার করতে পারেন না। আপনি যে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন তার আইপি এডেস থেকে তারা আপনার অবস্থান জানবেন এবং আপনার একাউন্ট বাতিল করা হবে।
পে-পল একাউন্ট হস্তান্তরযোগ্য না। একজনের একাউন্ট আরেকজন ব্যবহার করতে পারেন না। সেক্ষেত্রেও একাউন্ট বাতিল হবে এবং আপনার সমস্ত অর্থ হাতছাড়া হবে।
কাজেই কেউ যদি আপনাকে পে-পল একাউন্ট ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার কথা বলে টাকা চায় জানবেন আপনার টাকা বাটপারি হচ্ছে।
তারপরও আপনি অন্যের সাহায্যে পে-পল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার বিস্বস্ত কেউ যদি এমন দেশে থাকে যারপক্ষে পে-পল ব্যবহার করা সম্ভব তাকে বলতে পারেন আপনার হয়ে লেনদেনের কাজ করতে। সেক্ষেত্রে যেখানে প্রয়োজন সেখানে পেপলের এড্রেস (ইমেইল) ব্যবহার করেন, ভুলেও বাংলাদেশ থেকে পেপলের একাউন্টে ঢুকবেন না।
আর বাস্তবতা বলে, এধরনের সহযোগিতা দিতে আগ্রহি এবং নির্ভরযোগ্য মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত কম।
ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড নামে একটি ব্যবস্থা রয়েছে। অনেক কোম্পানী এই সেবা দেয়। যেখানে আপনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন না সেখানে তাদের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ডের মালিক হবেন। বাস্তব প্লাষ্টিক ক্রেডিট কার্ডের মত এটিএম বা ব্যাংকে ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন না, কেবলমাত্র ইন্টারনেটে ব্যবহার করবেন।
নিয়ম হচ্ছে, আপনি টাকা দিয়ে একটি কার্ড কিনবেন, যেভাবে মোবাইল ফোনের প্রিপেইড কার্ড কেনেন। আপনার শুধুমাত্র ইমেইল এড্রেস (এবং টাকা) প্রয়োজন। এরপর সাধারন ক্রেডিট কার্ডের মত ব্যবহার করবেন। বিশেষ ব্যবস্থায় রিচার্জ করার ব্যবস্থা রয়েছে।
আপনি একে সুবিধেজনক পদ্ধতি ভেবে কোনভাবে ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের চেষ্টা করতে পারেন। এখানে একই কথা প্রযোজ্য। আপনার আইপ এড্রেস দেখা হবে। আপনি যার সাথে লেনদেনের কাজ করতে চান তিনি আপনার দেশকে গ্রহনযোগ্য মনে নাও করতে পারেন। ফল হিসেবে আপনি যে অর্থ ব্যয় করেছেন সেটা পানিতে যাবে। বাংলাদেশে ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ডের প্রচলন নেই, সেকারনে বাংলাদেশ থেকে এটা ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহনযোগ্য না।
আপনি যে পদ্ধতিই ব্যবহার করুন না কেন, আগে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনি সহজে সেখানে টাকা জমা করা বা উঠানোর সুযোগ পাবেন, আপনার দেশ সেটা ব্যবহারের অনুমতি দেয় এবং যারসাথে লেনদেন করবেন সে সেটা ব্যবহার করে। এই তিন পক্ষ নিশ্চিত করে তবেই লেনদেনের সিদ্ধান্ত নিন।
আপডেট : বাংলাদেশ ব্যাংক বানিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।

No comments:

Post a Comment