Thursday, June 20, 2013

অল্প পরিশ্রমে বেশি সাফল্য পেতে ফ্রিল্যান্সার কি করতে পারেন



সফল হওয়ার নানা পরামর্শ দিয়ে বিশ্বখ্যাতি লাভ করেছেন ডেল কার্নেগী। তার একটি উদাহরন একজন সেলসম্যান সম্পর্কে। তিনি প্রতিদিন নানা যায়গায় ঘোরেন ক্রেতা তৈরী করার আশায়। যা পরিশ্রম হয় সে অনুযায়ী ফল পান না। একদিন তিনি ভাবতে বসলেন। সম্ভাব্য ক্রেতাদের তালিকা তৈরী করলেন। যেখানে সম্ভাবনা বেশি তাদের শুরুতে রাখলেন। এরপর এদের কাছে বেশি সময় দিতে শুরু করলেন। অন্যদের সময় দেয়া বন্ধ করলেন।
ফল হিসেবে কিছুদিনেই দেখা গেল তার বিক্রি বেড়েছে, অন্যদিকে পরিশ্রম কমেছে। যেখানে সম্ভাবনা কম সেখানে তিনি সময় ব্যয় করছেন না।

ফ্রিল্যান্সার কি এই নিয়ম কাজে লাগাতে পারেন ?
উত্তর যে হ্যা হবে এতে কারোই সন্দেহ নেই। বরং সত্যিকারের প্রশ্ন, সেটা কিভাবে সম্ভব ?
কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় এনে ফ্রিল্যান্সার এই নিয়ম কাজে লাগাতে পারেন।


.        কাজ যাচাই করুন
জবসাইটে বহু কাজ রয়েছে। ইচ্ছে করলেই যতটা সম্ভব বেশি সময় ব্যয় করে বেশিসংখ্যক কাজে অংশ নিতে পারেন।
সেই বিক্রেতার উদাহরন বিবেচনায় আনুন। অংশ নেয়ার অর্থ সেই কাজ থেকে উপার্জন হওয়া না। বরং যেকাজে শেষ পর্যন্ত সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি শুধুমাত্র সেকাজে সময় দিন।
ফ্রিল্যান্সারের ডিজাইন প্রতিযোগিতার উদাহরন বিবেচনা আনতে পারেন। ডিজাইন জমা দিলে আপনি পয়েন্ট পাচ্ছেন, ডিজাইনের ৪ বা ৫ ষ্টার রেটিং এর জন্য পয়েন্ট পাচ্ছেন। অন্যদিকে ক্লায়েন্ট ডিজাইন বাতিল করলে পয়েন্ট বাদ যাচ্ছে। কখনো এমন হতে পারে আপনার পরিশ্রমের পুরস্কার হচ্ছে অন্য কাজের জমা আয় নষ্ট হওয়া। যদি পয়েন্ট বাড়ার সম্ভাবনা থাকে শুধুমাত্র তাহলেই অংশ নিন। নইলে সেটা বাদ দিয়ে অন্য কাজের দিকে দৃষ্টি দিন।
.        কাজের অর্থমুল্য বিবেচনায় রাখুন
বেশি টাকার কাজ করলে আয় বেশি। সেকারনে বেশি টাকার কাজে বেশি সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়। বিষয়টিকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখুন। কোন ক্লায়েন্ট বেশি টাকা দিচ্ছেন কারন তিনি উচু মানের কাজ চান। সেই কাজে সেরা ডিজাইনাররা অংশ নেবেন এটাই স্বাভাবিক। সেকারনে সেখানে প্রতিযোগিতা অত্যন্ত বেশি।
আপনার জন্য কোনটা লাভজনক বিবেচনা করুন। একটি কাজ করে ৫০০ ডলার আয় হতে পারে, ৫০ ডলারের ১০টি কাজ করেও একই পরিমান আয় হতে পারে। যেটা মানানসই সেটা বেছে নিন।
.        ক্লায়েন্ট যাচাই করুন
সাধারনভাবে ক্লায়েন্ট যাচাই করার বিষয়টি ফ্রিল্যান্সার খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না। অনেকে তাদের নাম দেখাও প্রয়োজন বোধ করেন না। অথচ বিষয়টি ক্রমেই গুরুত্বপুর্ন হয়ে দাড়াচ্ছে। অনেক ফ্রিল্যান্সার নিজেই ক্লায়েন্টে পরিনত হচ্ছেন। ৫০০ ডলারের কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকলে সেটা নিচ্ছেন, ফ্রিল্যান্সারকে ৫০ ডলার দিয়ে সেকাজ করিয়ে নিচ্ছেন।
কোন ক্লায়েন্ট অত্যন্ত সহানুভৃতিশীল। সবধরনের পরামর্শ দিয়ে ভাল কাজ করতে উতসাহ দেন। কেউ ঠিক বিপরীত। একজন বলেই বসলেন অংশ নেয়া ডিজাইনারদের থেকে তার ৮ বছরের মেয়ে ভাল ডিজাইন করতে পারে।
কোন ক্লায়েন্টের আচরনগত সমস্যা দেখলে সেকাজ থেকে দুরে থাকুন। প্রয়োজনে তাদের নামের তালিকা তৈরী করুন যেন ভবিষ্যতে সহজে তাদের চিনতে পারেন।
.        নিজেকে যাচাই করুন
অনেকে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজে অংশ নেন পুর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই। লোগো ডিজাইন করেছেন অথচ লোগোর সাধারন নিয়মগুলি মানেননি, এমনকি কোন সফটঅয়্যারে কাজ করবেন, কোন ফরম্যাটে কাজ দেবেন এবিষয়টিও জানা প্রয়োজনবোধ করেননি। এভাবে নিজেকে হাস্যকর করে তোলা হয়।
যে কাজই করুন, সেকাজের জন্য আপনার দক্ষতা কতখানি যাচাই করে নিন। অভিজ্ঞ কাউকে দেখিয়ে তাদের মতামত নিন। দক্ষতায় ঘাটতি থাকলে সেটা পুরন করুন। কাজ পাওয়ার জন্য যে পরিশ্রম হয় সেই পরিশ্রম দক্ষতা বাড়ানোতে ব্যয় করুন।

প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং কাজ যেমন পৃথক, ক্লায়েন্ট পৃথক তেমনি ফ্রিল্যান্সারও প্রত্যেকে নিজের মত। একজনের নিয়ম অন্যজনের কাজে লাগবে এমন কথা নেই। সেকারনেই প্রতিটি কাজ, প্রতিটি ক্লায়েন্ট এবং নিজেকে ভালভাবে জানা প্রয়োজন।
এরফলে আপনি কম পরিশ্রমে বেশি সাফল্য পেতে পারেন।

3 comments:

  1. ফটোগ্রাফী নিয়ে ইদানিং একদমই লিখছেন না

    ReplyDelete
  2. ওডেস্কে কোন জব এ অ্যাপ্লাই করার পর নির্বাচিত হলে ইন্টারভিউ নেয়া হয়। এই ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য কি অনলাইনে থাকতে হবে? নাকি কোন প্রাইভেট মেসেজের মত যেকোন সময় রিপ্লাই দিলেই হবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. মুল যোগাযোগ হয ইমেইলের মাধ্যমে। জবসাইটের যে কোন মেসেজ ইনবক্সে পাওয়া যায়। অধিকাংশ সময় এভাবেই কাজ চলে। কোন কোন ক্লায়েন্ট স্কাইপ ব্যবহার করতে বলেন।
      যে কোন ধরনের যোগাযোগের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। সাধারনভাবে ধরা হয় সর্বোচ্চ ২ দিনের মধ্যে যোগাযোগ করতে হবে। কাজেই সবসময় অনলঅইনে থাকা প্রয়োজন হয় না।

      Delete