Saturday, January 14, 2012

ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয়-ব্যয়ের সমতা রাখার ৫ উপায়

আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখা বা রাখতে পারা সাফল্যের নিদর্শন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বহু কারনে ব্যয়ের সাথে তাল মিলিয়ে আয় করা সম্ভব হয় না। ফলে প্রয়োজনীয় বিষয়ে খরচ কমাতে হয়। দ্রব্যমুল্য-যাতায়াত-বাড়িভাড়া বৃদ্ধির মত কারনে যখন খরচ কমানোর যায় না থাকে তখন বাধ্য হয়ে খাবারে খরচ কমাতে  হয় অনেককে। নিম্নমানের কিংবা অপর্যাপ্ত খাবার থেকে হয়।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার সময় এদিকেও লক্ষ রাখা প্রয়োজন। আপনি এমন অবস্থায় পরতে চান না যেখানে জীবনযাত্রার মান কমানোর কথা ভাবতে হয়। কিছু নিয়ম মেনে আপনি ভাল অবস্থানে থাকতে পারেন।
.          খরচ কমান
আয় বাড়ানো যদি একান্তই সম্ভব না হয় তাহলে খরচ কমান। অবশ্যই যেখানে সম্ভব এমন ক্ষেত্রে। কিছু উদাহরন হতে পারে এমন।
টেলিফোন-মোবাইল ফোনের খরচ কমান। ফোনের চেয়ে ইমেইল বেশি ব্যবহার করুন। যে ব্যবস্থায় কম খরচে কাজ করা যায় সেই ব্যবস্থা নিন। কোন ধরনের ইন্টারনেটে কম খরচে কাজ করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দিন। কাজের জন্য কিছু কেনার সময় তারচেয়ে ভাল ব্যবস্থা আছে কিনা খোজ নিন। হয়ত কেনা সফটঅয়্যারের বদলে বিনামুল্যের সফটঅয়্যার দিয়েই কাজ চলতে পারে।
খরচ কমনোর সাথে মান কমানো বলে একটি কথা চলে আসে। এমন কিছু করবেন না যার ফলে আপনার কাজ বাধাগ্রস্থ হয়। বরং সরাসরি কাজের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়ে প্রয়োজনে বেশি খরচ করুন, অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর দিকে দৃষ্টি দিন। বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন (বিজ্ঞানী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট) এবিষয়ে একটি কথা বলেছেন যা প্রবাদের মত ব্যবহার করা হয়, এক টাকা খরচ না করার অর্থ এক টাকা আয় করা।
.          দক্ষতা বাড়ান
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাফল্যের জন্য দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন। নির্দিস্ট কাজে আপনার দক্ষতার কথা বলা হচ্ছে না, আপনার কাজ করার পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে। কাজের সময় ঠিক করে নেয়া, অল্প সময়ে বেশি কাজ করা, সময় নষ্ট না করা, অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে মাথা না ঘামানো ইত্যাদি এই নিয়মের মধ্যে। অনেক ফ্রিল্যান্সার কাজের জন্য এক কম্পিউটার এবং বিনোদনের জন্য ভিন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করেন। কাজের সময় কাজ এবং খেলার সময় খেলা, একে বাস্তবে ব্যবহারের জন্যই।
কাজের তালিকা, সময় ইত্যাদি কাগজে লিখে (কম্পিউটারে না, কাগজের নোটবুক কিংবা ডায়রীতে) খুব সহজেই নিজেকে নিয়মের মধ্যে আনতে পারেন। একসময় সেটা অভ্যেসে পরিনত হবে।
.          কাজের মান বাড়ান
মান বিক্রি হয়। আপনি যেমন কিছু কেনার সময় ভাল জিনিষ বেশি দামে কেনেন তেমনি আপনার কাজের মান উন্নত হলে আপনি বেশি উপার্জনের সুযোগ পাবেন। আপনার কাজে কোন ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট হলে পবর্তিতে আপনাকেই খুজবেন, আপনার ক্লায়েন্ট খুজতে হবে না।
নিজের কাজের মান যাচাই করুন, অন্যদের কাজের সাথে তুলনা করুন, ভাল কাজগুলি দেখুন। কোন সীমাবদ্ধতা থাকলে সেটা দুর করার চেষ্টা করুন। সেই বিষয়ে টিউটোরিয়াল-পরামর্শ দেখুন এবং প্রাকটিস করুন।
.          অন্যের সাহায্য নিন
ব্যবসা প্রতিস্ঠান যখন বড় হয় তখন তারা অন্য যায়গায় শাখা খোলে। বিষয়টি এমন, আপনি কতখানি কাজ করতে পারেন তার একটি সীমা আছে। তারচেয়ে বেশি কাজ পেলেও আপনার পক্ষে করা সম্ভব হবে না। এমন কারো সাথে যোগাযোগ করুন যেখানে আপনার পরিচিতি ব্যবহার করে কাজ নিয়ে বেশি কাজ করা সম্ভব হবে। সেখানে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন আপনার পরিচিতির মানানসই মান, মানানসই কাজের রেট এবং সময়মত কাজ দেয়া এই তিন শর্ত যেন ঠিক থাকে।
.          ভিন্ন কাজে দক্ষতা বাড়ান
কোন বিশেষ কাজে বিশেষ সময়ে সমস্যা হতেই পারে। এধরনের সমস্যা মোকাবেলা করতে একাধিক কাজে দক্ষতা বাড়ান। গ্রাফিক ডিজাইনের সাথে কিছু এনিমেশন শিখে নিন কিংবা ওয়েব ডিজাইন। সাধারনভাবে হয়ত ব্লগ ব্যবহার করা প্রয়োজন হয় না, তাহলেও সেটা অভ্যেস করুন। সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়ে, এফিলিয়েশন ব্যবহার করে এবং আরো নানাভাবে আয় আসতে পারে।

ভাল করার জন্য নিশ্চয়ই আরো বহু পথ রয়েছে। ব্যক্তি, কাজের ধরন, সমাজ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে এই বিষয়গুলিতেও ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু মুল কথাগুলি এটুকুই, যে কাজই করুন সচেতন থেকে করুন।

1 comment: