মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন তৈরী করা প্রয়োজন হয় বিবিধ কারনে। ব্যবসা প্রতিস্ঠানের প্রেজেন্টেশন থেকে শুরু করে শিক্ষা ক্ষেত্রে কিংবা ব্যক্তিগত কাজে। যে কারনে ভাল প্রেজেন্টেশন তৈরীতে দক্ষ ব্যক্তির চাহিদা বিশ্বব্যাপি। যারা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ইন্টারনেটে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে চান তাদের পছন্দের একটি বিষয় প্রেজেন্টেশন। এই সফটঅয়্যার খুব দ্রুত শিখে নেয়া যায় এবং কাজ পাওয়া যায় তুলনামুলক সহজে। মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন, প্রিন্টের জন্য স্লাইড তৈরী ছাড়াও সরাসরি ওয়েবপেজ হিসেবে সেভ করে ওয়েবসাইট তৈরী করা যায় এই সফটঅয়্যারে।
মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন তৈরীর জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। কারন একদিকে এর ব্যবহার যেমন সহজ অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটঅয়্যার মাইক্রোসফট অফিস এর সাথে এই সফটঅয়্যার থাকে।
পাওয়ারপয়েন্ট ব্যবহার করে কিভাবে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন তৈরী করবেন জেনে নিন। প্রথমে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের কিছু বৈশিস্ট সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
. একটি প্রেজেন্টেশনকে অনেকগুলি ছাপানো পৃষ্ঠার সাথে তুলনা করতে পারেন। প্রতিটি পৃস্ঠাকে বলা হয় একটি স্লাইড। ছাপানো কাগজ থেকে এর পার্থক্য হচ্ছে এতে ভিডিও কিংবা শব্দ ব্যবহার করা যায়।
. একটি স্লাইড থেকে পরবর্তী স্লাইডে যাওয়ার জন্য কিবোর্ড, মাউস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা নির্দিস্ট সময় বলে দিতে পারেন। যেমন ২০ সেকেন্ড সময় ঠিক করা হলে ২০ সেকেন্ড পর পরবর্তী স্লাইড দেখা যাবে।
. পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ব্যবহার করা যায় পাওয়ারপয়েন্ট সফটঅয়্যার দিয়ে অথবা প্রোজেক্টর নামের বিশেষ সফটঅয়্যার দিয়ে। সেভ করার সময় প্রোজেক্টর সহ সেভ করা যায়। সরাসরি EXE ফাইল তৈরী করা যায় না।
. সবশেষ ভার্শনে (২০১০) পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনকে ভিডিও ফাইল হিসেবে এক্সপোর্ট করা যায়।
. পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন সহজে তৈরীর জন্য সফটঅয়্যারের সাথে টেম্পলেট থাকে, এছাড়া পৃথকভাবেও পাওয়া যায়। এতে ফন্ট, গ্রাফিক ষ্টাইল ইত্যাদি সাজানো থাকে। শুধুমাত্র টেক্সট এবং ছবি পাল্টে উচুমানের প্রেজেন্টেশন তৈরী করা যায়।
একেবারে শুরু থেকে প্রেজেন্টেশনে বিভিন্ন বিষয় যোগ করার পদ্ধতি দেখে নেয়া যাক।
· পাওয়ারপয়েন্ট শুরু করলে এধরনের একটি স্ক্রীন পাবেন (এখানে অফিস ২০০৩ ভার্শন ব্যবহার করা হয়েছে)। দুটি টেক্সট বক্স থেকে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে দুটি ভিন্ন ধরনের ফন্ট ব্যবহার করে টেক্সট লেখার ব্যবস্থা রয়েছে। টাইটেল লেখার জন্য ওপরের টেক্সট বক্সে ক্লিক করুন এবং টাইটেল টাইপ করুন।
· সাবটাইটেল লেখার জন্য নিচের টেক্সটবক্সে ক্লিক করুন এবং সাবটাইটেল টাইট করুন।
· অথবা, পুরোপুরি নতুনভাবে শুরু না করে টেম্পলেট ব্যবহারের জন্য মেনু থেকে File - New সিলেক্ট করুন।
· From design template অপশন সিলেক্ট করুন।
· পছন্দের একটি টেম্পলেট সিলেক্ট করুন। এরফলে সেই টেম্পলেটের গ্রাফিক্স এবং ফন্ট সহ স্লাইড তৈরী হবে।
· নতুন স্লাইড যোগ করার জন্য মেনু থেকে Insert – New Slide সিলেক্ট করুন (কিবোর্ডে Ctrl – M)
· স্লাইড লে-আউট থেকে সেই স্লাইডে টেক্সট, ইমেজ, গ্রাফ ইত্যাদি কিভাবে থাকবে সিলেক্ট করুন।
· টেক্সট লেখার জন্য টেক্সট বক্সে ক্লিক করুন এবং প্রয়োজনীয় টেক্সট টাইপ করুন।
· ক্লিপআর্ট ব্যবহারের জন্য ক্লিপআর্ট বক্সে ডাবলক্লিক করুন এবং ক্লিপআর্ট সিলেক্ট করুন। নির্দিস্ট ছবি, ফটোগ্রাফ, ভিডিও ইত্যাদি ব্যবহারের জন্য Import Picture ডায়ালগ বক্সে Import বাটনে ক্লিক করুন এবং ছবি, ভিডিও, শব্দ ইত্যাদি সিলেক্ট করুন।
· গ্রাফ যোগ করার জন্য গ্রাফ বক্সে ডাবলক্লিক করুন এবং গ্রাফের জন্য মান টাইপ করে দিন।
· নিজের পছন্দমত টেক্সটবক্স, ছবি, ভিডিও, সাউন্ড ইত্যাদি যোগ করার জন্য Insert মেনু থেকে নির্দিস্ট অপশন সিলেক্ট করুন।
· নির্দিষ্ট অবজেক্টের জন্য এনিমেশন ব্যবহার করতে মেনু থেকে Animation Schemes সিলেক্ট করুন। ডানদিকের লিষ্ট থেকে পছন্দের এনিমেশন সিলেক্ট করুন।
· স্লাইড শো দেখার জন্য মেনু থেকে কমান্ড সিলেক্ট করুন, Slide show – View show অথবা কিবোর্ডে F5 চাপ দিন।
স্লাইডগুলিকে যদি সামনে-পিছনে করা প্রয়োজন হয় তাহলে স্লাইড শর্টার ভিউ ব্যবহার করুন। স্ক্রীনের নিচে বামদিকে এজন্য বাটন রয়েছে (ছবি)। শর্টার ভিউতে স্লাইডকে ড্রাগ করে এক যায়গা থেকে অন্য যায়গায় নেয়া যাবে।
এছাড়া একটি স্লাইড থেকে পরবর্তী স্লাইডে যাওয়ার পদ্ধতি বলে দেবেন ডানদিকের Advance slide অপশনে। On mouse click (ডিফল্ট) সিলেক্ট করলে মাউস ক্লিক করার পর পরবর্তী স্লাইডে যাওয়া যাবে। এছাড়া নির্দিষ্ট সময় টাইপ করে দেয়া যাতে পারে।
প্রেজেন্টেশনের সবগুলি স্লাইড তৈরীর পর এক স্লাইডের পর আরেক স্লাইড আসার সময় কি ইফেক্ট ব্যবহার করা হবে বলে দেয়ার জন্য ট্রানজিশন ব্যবহার করতে পারেন।
ট্রানজিশন ব্যবহারের জন্য য স্লাইডে ট্রানজিশন ব্যবহার বরবেন সেটা সিলেক্ট করুন। টুলবারে Transition লেখা বাটনে ক্লিক করুন (অথবা মেনু থেকে Slide Show – Slide transition সিলেক্ট করুন) এবং ডানদিকের লিষ্ট থেকে ট্রানজিশন সিলেক্ট করুন।
Modify transition অংশ থেকে ট্রানজিশনের গতি পরিবর্তণ করা যাবে এবং শব্দ যোগ করা যাবে।
সেভ করা এবং ওয়েবসাইট তৈরী করা
· প্রেজেন্টেশনকে সেভ করার জন্য অন্যান্য সফটঅয়্যারের মত File – Save কমান্ড ব্যবহার করুন। শুধূমাত্র পাওয়ার পয়েন্ট সফটঅয়্যার ব্যবহার করে এই প্রেজেন্টেশন ওপেন করা যাবে।
· পাওয়ারপয়েন্ট ভিউয়ার সহ সেভ করার জন্য মেনু থেকে File – package for CD কমান্ড দিন। এরফলে প্রেজেন্টেশন যে কোন কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে।
· ওয়েবপেজ হিসেবে সেভ করার জন্য Save as web page কমান্ড ব্যবহার করুন।
পাওয়ার পয়েন্টের মুল কাজ এটুকুই। আপনি কত ভাল প্রেজেন্টেশন তৈরী করতে পারেন সেটা নির্ভর করে আপনার চেষ্টার ওপর। এডভান্সড ফিচারগুলি উল্লেখ করা হবে অন্য টিউটোরিয়ালে।
power point
ReplyDelete