ইমেজ এডিটিং এর ক্ষেত্রে ফটোশপের তুলনা নেই। গ্রাফিক ডিজাইনের ক্ষেত্রেও। যদি ডিজিটাল ড্রইং এবং পেইন্টিং এর কথা তোলা হয় তাহলেও ফটোশপ ব্যবহারকারীরা বলবেন, সবই করা যায়।
কথাটা একটু বাড়িয়ে বলা। বাস্তবে একজন শিল্পী যেভাবে ছবি আকেন সেকথা একবার মনে করুন তো। জলরং, তেলরং, পেনসিল, কলম, চক, কয়লা, মোম বহুকিছু। আপনি কি ফটোশপে এমন কিছু আকতে পারেন যা দেখে মনে হবে সত্যিকারের পেনসিলে আকা, কিংবা রঙিন চক দিয়ে আকা।
একটিমাত্র সফটঅয়্যারই একাজ করতে পারে। সেটাই কোরেল পেইন্টার। বাস্তবে যেভাবে পেনসিল কখনো চেপে, কখনো হাল্কাভাবে ধরে, এদিক-ওদিক ঘুরিয়ে ছবি আকেন সেভাবেই কাজ করা যাবে পেইন্টারে। অন্য মাধ্যমগুলির ক্ষেত্রেও একই কথা। জলরং এর তুলি একপ্রান্তে একধরনের রঙ তৈরী করে আরেক প্রান্তে আরেক রকম। পেইন্টারে সেটা সম্ভব। আর ফটোশপের মতো ইমেজ এডিটিং, কম্পোজিট ইমেজ তৈরী, ফটোগ্রাফের যাবতীয় সমস্যা দুর করা এসব তো রয়েছেই। এমনকি ফ্রেম বাই ফ্রেম একে যদি এনিমেশন তৈরী করতে চান সেটাও করা যায় সরাসরিই।
পেইন্টারের সুবিধে কি কি একবার জেনে নেয়া যাক।
. আপনি একেবারে শুরু থেকে ছবি আকতে পারেন। পেইন্টার তৈরী করা হয়েছে শিল্পীর হাত অনুসরন করে। ছবি আকার সময় শিল্পীর হাত যেমন নানাদিকে নানারকম ভঙ্গিতে কাজ করে আপনি সেটা করে একই ফল পেতে পারেন পেইন্টারে। অবশ্য একাজ মাউস ব্যবহার করে করতে পারেন না। ট্যাবলেট নামের ইনপুট ডিভাইস (প্রেসার সেনসিটিভ ট্যাবলেট) থাকলে সত্যিকারের সুবিধে পাবেন। বর্তমানে ২০০-২৫০ ডলারের মধ্যে ওয়াকমের উন্নতমানের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। কাজেই এটা খুব বড় সমস্যা হওয়ার কথা না।
. একেবারে শুরু থেকে ছবি না একে ফটোগ্রাফ থেকে আকতে চান ? ট্রেসিং পেপার আপনাকে সেই সুবিধে দেবে। ছবি এনে তার ওপর দিয়ে একে যান। তার ওপর দিয়ে যেমন আকার সুবিধে পাবেন তেমনি সেখান থেকে ক্লোন করার সুবিধে পাবেন।
. ফটোগ্রাফকে পেইন্টিংএ পরিনত করতে চান ? খুজ সহজেই করে নিতে পারেন।
. নানা ধরনের মিডিয়া ব্যবহারের সুযোগ। পেনসিল, কলম, জলরং, তেলরং, মোম, কয়লা যাকিছু কল্পনা করতে পারেন তার সবই রয়েছে পেইন্টারের ঝুলিতে। পেনসিলের কথাই ধরুন না কেন, ২বি হোক আর ৬বি হোক, আপনি বলে দেয়াই যথেষ্ট। যে কোন মিডিয়াকেই যে কোন ধরনের কাষ্টমাইজ করার সুযোগ রয়েছে। আপনি শুনে অবাক হতে পারেন, পেইন্টার ১১ ভার্শনে মোট ব্রাশের সংখ্যা ৮৭৩টি।
. শিল্পীরা তাদের রং পরিক্ষা করার জন্য একটি যায়গা ব্যবহার করেন। এই কাজের জন্য মিক্সার প্যালেট নামে একটি যায়গা রয়েছে যেখানে সঠিক রং পরীক্ষা করে নিতে পারেন।
. ঘাসে ভর্তি মাঠ আকতে চান ? সেকাজে সাহায্য করবে ইমেজ হোস নামের বিশেষ ধরনের ব্রাস। যে কোন ইমেজের আকৃতি এবং রঙের ইমেজ ব্যবহার করে পেইন্ট করতে পারেন এটা দিয়ে। ঘাসের উদাহরনই ধরুন, একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে একবারে টেনে যাবে, সেখানে ভিন্ন আকারের, ভিন্ন আকৃতির ঘাস তৈরী হতে থাকবে।
. নানা ধরনের টুল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ফটোশপের সাথে তুলনা করে বলতে পারেন, তার থেকেও বেশি।
. ফটোশপের মতই লেয়ার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে পেইন্টারে।
. সব ধরনের ফাইল সাপোর্ট। আপনি প্রিন্টের জন্য কাজ করুন অথবা স্ক্রীনের জন্যই কাজ করুন, কোন সীমাবদ্ধতা নেই।
পেইন্টার ব্যবহার করতে কি হার্ডঅয়্যার প্রয়োজন হবে জেনে নিন। প্রয়োজন সামান্যই।
. পেন্টিয়াম ৪, ৭০০ মেগাহার্টজ
. ১ গিগাবাইট মেমোরী
. হার্ডডিস্কে ৫০০ মেগাবাইট যায়গা
. উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা, ৭ অথবা ম্যাকিন্টোস
. ২৪ বিট কালার ডিসপ্লে, ১০২৪-৭৬৮ রেজ্যুলুশন
. মাউস অথবা ট্যাবলেট
পেইন্টার সব বিষয়ে ফটোশপের থেকে উন্নত একথা ধরে নেবেন না এই লেখা পড়ে। কিছু কিছু কাজ ফটোশপে যত ভালভাবে করা যায় পেইন্টারে তত ভালভাবে করা যায় না। টেক্সট ব্যবহার একটা উদাহরন। বরং পেইন্টারের সুবিধের কারনে অনেক শিল্পী সত্যিকারের রঙের বদলে পেইন্টার ব্যবহার করেন।
যদি ক্রিয়েটিভ ডিজাইনকে পেশা হিসেবে নিতে চান অথবা ফটোগ্রাফকে ক্রিয়েটিভিটি দিতে চান তাহলে পেইন্টার আপনার পছন্দ হতেই পারে।
আর কিভাবে শিখবেন এনিয়ে যদি চিন্তত হন তাহলে উল্লেখ করতে হচ্ছে, সফটঅয়্যারের সাথেই রয়েছে টিউটোরিয়াল, ইউজার গাইড ইত্যাদি। আর এই সাইটে নিয়মিতভাবে টিউটোরিয়াল পাবেন।
No comments:
Post a Comment