ডিরেক্টর ব্যবহার করে কিভাবে ইন্টারএকটিভ মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন তৈরী করবেন সেটা দেখানো হচ্ছে এই টিউটোরিয়ালে। যদি কখনো ডিরেক্টর ব্যবহার নাও করেন তাহলেও কাজ শুরু থেকে নিজের পছন্দমত প্রেজেন্টশন তৈরী এবং সাউন্ড, ইন্টারএকটিভিটি যোগ করে চুড়ান্ত প্রোগ্রাম ফাইল তৈরী করা থাকছে এতে।
ডিরেক্টরে যে কাজ করা হয় তার নাম মুভি। যে ইমেজ, টেক্সট, এনিমেশন, ভিডিও ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় সেগুলিকে বলা হয় কাষ্ট। যে মাপের স্ক্রিনে দেখা যায় তার নাম ষ্টেজ। অর্থাত আপনি এখানে পরিচালক। বিভিন্ন বিষয়কে অভিনয় শিল্পীর মত ষ্টেজে ব্যবহার করে মুভি তৈরী করবেন।
কোন কাষ্টকে যখন ষ্টেজে ব্যবহার করা হয় তখন তার নাম স্প্রাইট। ষ্টেজে আনার পর তাকে বড়-ছোট করা থেকে শুরু করে নানাধরনের পরিবর্তণ করতে পারেন। একই কাষ্টকে যতবার প্রয়োজন ব্যবহার করতে পারেন। স্প্রাইটকে পরিবর্তণ করলে মুল কাষ্টের পরিবর্তন হবে না, তবে কাষ্টের পরিবর্তণ করলে (যেমন রং) স্প্রাইটের পরিবর্তণ হবে।
ডিরেক্টরের ভেতরে টুল ব্যবহার করে গ্রাফিক ইমেজ, টেক্সট ইত্যাদি তৈরী করতে পারেন অথবা বিটম্যাপ/ভেক্টর ইমেজ, ফ্লাশ এনিমেশন, ভিডিও, সাউন্ড ইত্যাদি ইমপোর্ট করে ব্যবহার করতে পারেন। সবগুলিকে কাষ্ট লাইব্রেরীতে পাওয়া যাবে।
ইমপোর্ট করার সময় একে পুরোপুরি মুভির মধ্যে রাখতে পারেন অথবা এক্সটারনাল ফাইল হিসেবে রেখে তাকে ব্যবহার করতে পারেন। এক্সটারনাল কাষ্ট ব্যবহারের সুবিধে হচ্ছে এতে মুল মুভির আকার ছোট থাকে ফলে দ্রুত চালূ হয়। আর অসুবিধে হচ্ছে এদেরকে নির্দিষ্ট ফোল্ডারে রাখতে হয়।
সাধারন ভিডিও ফাইল ব্যতিক্রম কারন তাকে সবসময়ই এক্সটারনাল ফাইল হিসেবে রাখতে হয়, ডিরেক্টর মুভির ভেতরে রাখা যায় না।
এবারে ডিরেক্টরের ইন্টারফেস দেখে নেয়া যাক।
আপনি যদি ফ্লাশ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে এরসাথে মিল দেখতে পাবেন। ষ্টেজ নামের কাজের যায়গা, স্কোর নামের টাইমলাইন, কাষ্ট লাইব্রেরী এবং অন্যান্য সাধারন মেনু, টুলবার, টুলবক্স, প্রোপার্টি ইন্সপেক্টর ইত্যাদি পাবেন। যদি আগের ভার্শন ডিরেক্টরে কাজ করেন তাহলে নতুন ইন্টারফেসকে ভিন্ন মনে হতে পারে। সেক্ষেত্রে মেনু থেকে Window – Panel Sets – Drector 8 সিলেক্ট করে আগের ইন্টারফেস ব্যবহার করতে পারেন। এই টিউটোরিয়ালে ডিরেক্টর ৮ ইন্টারফেস ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সুবিধে হচ্ছে এটা সকল ভিডিও এডিটিং বা এনিমেশন সফটঅয়্যারের সাথে মানানসই এবং সহজে ষ্টেজ এবং টাইমলাইন ব্যবহার করা যায়।
মুভির প্রোপার্টি ঠিক করা
কাজ করার সময় আপনার প্রথম কাজ মুভির সাইজ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড রং ঠিক করা। তৈরী মুভি এই মাপে দেখা যাবে। উল্লেখ করা যেতে পারে ডিরেক্টর মুভিকে ফ্লাশের মত ফুলস্ক্রিনে দেখা যায় না। ফুলস্ক্রিন হিসেবে ব্যবহারের সময় স্ক্রীনের বাকি যায়গা ব্যাকগ্রাউন্ড রং দিয়ে পুরন হবে।
. ডিরেক্টর চালূ করুন।
. নতুন একটি মুভি তৈরীর কমান্ড দিন।
. ষ্টেজে ক্লি করে লেক্ট করুন। প্রোপার্টি ইন্সপেক্টরে ষ্টেজ-সাইজ অংশে ড্রপডাউন লিষ্ট থেকে একটি মাপ সিলেক্ট করুন। সাধারনভাবে ৮০০-৬০০ সব মনিটরে দেখার জন্য আদর্শ সাইজ মনে করা হয়। ইচ্ছে করলে লিষ্ট থেকে অন্য মাপ বা টাইপ করে যে কোন মাপ ব্যবহার করতে পারেন।
. কালার অংশে রঙের ওপর ক্লিক করে পছন্দের রং সিলেক্ট করুন। সাধারনত কালো রং বেশি ব্যবহার করা হয়।
. কালার প্যালেট হিসেবে আরজিবি বা ইনডেক্স ব্যবহার করতে পারেন, থ্রিডি ব্যবহারের সময় রেন্ডারার হিসেবে সফটঅয়্যার, ওপেনজিএল বা ডিরেক্টএক্স এর বিভন্ন ভার্শন সিলেক্ট করতে পারেন। বিষয়গুলির ব্যাখ্যা হচ্ছে, ওয়েব পেজে ইনডেক্স কালার ঠিকভাবে দেখা যায়। আর আপাতত থ্রিডি ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে এ নিয়ে মাথা ঘামানো প্রয়োজন নেই।
ডিরেক্টরে যাকিছু ব্যবহার করবেন তার অধিকাংশই আপনি আগে তৈরী করে নেবেন এটাই স্বাভাবিক। এখানে ৮০০-৬০০ রেজ্যুলুশন উল্লেখ করা হয়েছে কাজেই এরসাথে মিল রেখে ইমেজ বা ভিডিও/এনিমেশন তৈরী করবেন সেটাই যুক্তিসংগত।
এই উদাহরনে একটি ব্যাকগ্রাউন্ড ইমেজ এবং তার ওপর প্রতিটি স্ক্রিনের জন্য একটি করে ছবি এবং তারসাথে সম্পর্কিত টেক্সট ব্যবহার করা হচ্ছে। আপনি যে বিষয়ে প্রেজেন্টেশন তৈরী করতে চান তারসাথে মিল রেখে ইমেজগুলি ঠিক করে নিন।
ডিরেক্টরে অনেক সময়ই টেক্সটকে ইমেজফাইল হিসেবে তৈরী করে নেয়া হয়। টেক্সট এর তুলনায় ইমেজ ফাইল দ্রুত কাজ করা একটি কারন, আরেক কারন যে ফন্ট ব্যবহার করা হয়েছে সেটা ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে বিকল্প ফন্ট ব্যবহৃত হলে সৌন্দর্য নষ্ট হয়। যদি ইন্টারএকটিভ/ডায়নামিক টেক্সট প্রয়োজন হয় কেবলমাত্র সেখানেই সরাসরি টেক্সট ব্যবহার করুন। অন্য যায়গার টেক্সট ফটোশপ বা অন্য সফটঅয়্যারে তৈরী করে ইমেজ হিসেবে ব্যবহার করুন।
. ইমপোর্ট করার জন্য মেনু থেকে File - Import কমান্ড দিন।
. আপনি সরাসরি ফাইল সিলেক্ট করে ইমপোর্ট করতে পারেন। তারআগে ইমপোর্ট ডায়ালগ বক্সটি একবার দেখে নিন। একেবারে নিচে মিডিয়া অংশে ষ্ট্যান্ডার্ড ইমপোর্ট লেখা পাবেন। সরাসরি ইমপোর্ট করলে ইন্টারনাল কাষ্ট হিসেবে ইমপোর্ট হবে। এক্সটারনাল কাষ্ট হিসেবে ব্যবহারের জন্য এখানে পরিবর্তণ করে নিন।
. ইমেজ ইমপোর্ট করার সময় কত বিট কালার ব্যবহার করবেন জিজ্ঞেস করবে। যদি ট্রান্সপারেন্সি সহ ইমেজ ব্যবহার করেন তাহলে ৩২বিট সিলেক্ট করুন। জেপেগ ফরম্যাটের জন্য ২৪বিট ব্যবহার করুন।
. ইমপোর্ট করার পর এদেরকে কাষ্ট লাইব্রেরীতে পাওয়া যাবে।
ইমেজ ব্যবহারের সময় ডিরেক্টর নিজস্ব এক ধরনের কম্প্রেসন ব্যবহার করে। কাজেই মুল ইমেজের ফাইল সাইজ ডিরেক্ট মুভির ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখে না।
ইমপোর্ট করা কাষ্টগুলি ব্যবহার করে প্রেজেন্টেশন তৈরীর পদ্ধতি আগামী টিউটোরিয়ালে। এই সময়ের মধ্যে একটি বিষয় ঠিক করে ইমেজ, বাটন ইমেজ, ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড ইত্যাদি তৈরী করে নিন।
No comments:
Post a Comment