Tuesday, December 13, 2011

ফ্রিল্যান্সিং কাজে যোগাযোগ ঠিক রাখার কিছু পদ্ধতি

ফ্রিল্যান্সিং কাজে যোগাযোগের সামান্য সমস্যাও বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।  ফ্রিল্যান্সার এবং ক্লায়েন্টর সম্পর্ক তৈরী হয় যোগাযোগের ভিত্তিতেই। সব ফ্রিল্যান্সারকেই এবিষয়ে কমবেশি সমস্যায় পড়তে হয়। অনেকে এই বিষয়কে ততটা গুরুত্ব দেন না।
এখানে যোগাযোগ ঠিক রাখার জন্য কিছু পদ্ধতি উল্লেখ করা হচ্ছে।
.          নিজে উদ্দোগ নিন
ক্লায়েন্টের কাছে কিছু জানার থাকলে নিজে থেকে প্রশ্ন করুন। তিনি আপনার কাছে ভাল কাজ চান কাজেই আপনি উতসাহ দেখানে তিনি বিরক্ত হবেন না। অবশ্য কেউ অপ্রয়োজনীয় প্রশ্নে বিরক্ত হতেই পারেন, সেদিকেও দৃষ্টি রাখুন।
.          অনুমাননির্ভর সিদ্ধান্ত নেবেন না
প্রতিটি ক্লায়েন্ট, প্রতিটি কাজ আলাদা। আগে একই ধরনের কাজ করেছেন বলে সেই অভিজ্ঞতায় আরেক কাজ ঠিকমত হবে ধরে নেবেন না। প্রতিটি কাজকে ভিন্ন কাজ হিসেবে গন্য করুন এবং সেই বিশেষ কাজ সম্পর্কে যতটা সম্ভব জানুন। অমুক কাজ সহজ কিংবা অমুক ক্লায়েন্টর কাজ করা কঠিন এধরনের সিদ্ধান্ত সহসা নেবেন না। পুরোপুরি জেনে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।
.          মনোযোগ দিয়ে শুনুন
ক্লায়েন্ট যে তথ্য দিয়েছেন তার প্রতিটি শব্দ ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। তার লেখাগুলি একাধিকবার পড়ুন। মৌখিক নির্দেশ দিলে প্রয়োজনে সেগুলি লিখে রাখুন।
.          আকার-ইঙ্গিত ইত্যাদির ব্যাখ্যা করুন
অনেক সময় ক্লায়েন্ট কোন বক্তব্য সরাসরি বলেন না। আকারে-ইঙ্গিতে কোন বক্তব্য প্রকাশ করছেন কিনা সেদিকেও দৃষ্টি রাখুন।
.          প্রশ্ন করুন
কোন বিষয় ঠিকভাবে ধরতে না পারলে আবারো প্রশ্ন করুন।
.          যা বুঝেছেন সেটা তুলে ধরুন
তার বক্তব্য আপনি যেভাবে বুঝেছেন সেটা তাকে জানান। আপনার বোঝায় কোন ভুল থাকলে সেটা ধরা পড়বে। ভুলের প্রভাব কাজের ওপর পড়বে না।
.          সামাজিক ভিন্নতার বিষয় মনে রাখুন
ফ্রিল্যান্সার এক সমাজের, ক্লায়েন্ট আরেক সমাজের হতে পারেন। কাজেই সামাজিকতার নানাধরনের পার্থক্য থাকতে পারে। বিষয়টি মনে রেখে যোগাযোগ রক্ষা করুন।
.          নতুন কিছু উপস্থাপন করুন
ক্লায়েন্ট হয়ত নিয়মমাফিক কিছু কাজ করতে বলেছেন, সেখানে যদি নতুনত্ব দেখানোর সুযোগ থাকে সেটা দেখান। তবে যাচাই করে নিন তিনি সেটা কিভাবে দেখছেন। বিশেষজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারও ক্লায়েন্টের কাছে শেখেন। আপনার কারিগরী দক্ষতার চেয়েও অনেক সময় ক্লায়েন্টের বাস্তব অভিজ্ঞতা বেশি ফলদায়ক। দুইয়ের মিলনেই সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়।
.          আবেগ পরিহার করুন
আবেগ ব্যবহার করে কোন বক্তব্য প্রকাশ করবেন না। এটা পেশাদারিত্বের পরিপন্থী। কোন কারনে মন খারাপ থাকলে বা অন্য সমস্যা থাকলে তখন যোগাযোগের কাজ করবেন না। মন ভাল থাকলে তখন যোগাযোগ করুন।
.          নির্ভুল ভাষা ব্যবহার করুন
আপনি কি লিখছেন সেদিকে ভালভাবে দৃষ্টি দিন। ভুল বানান আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারনা তৈরী করতে পারে। বিষয়কেও ভুলভাবে প্রকাশ করতে পারে। ১০.০০ ডলার এবং ১০০০ ডলার এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য একটিমাত্র পয়েন্ট।
.          সবকিছুর হিসেব রাখুন
প্রতিটি কাজ, প্রতিটি যোগাযোগের হিসেব রাখুন। পরবর্তীতে সেদিকে একবার দৃষ্টি দিলে পরের কাজ সহজ মনে হবে।
.          নিয়মিত ইমেইল দেখুন
যোগাযোগের ব্যবস্থা যদি ইমেইল হয় তাহলে নিয়মিত ইমেইল দেখুন, কেউ মেইল করলে সাথেসাথে উত্তর দিন।
.          সমালোচনাকে নিজের ওপর চাপাবেন না
কোন কারনে ক্লায়েন্ট খুশি নাও হতে পারেন, একে আপনার ওপর আক্রমন বলে ধরে নেবেন না। বরং এর সমাধান কিভাবে করা যায় সেই পথ খুজুন।
.          ক্লায়েন্টর কাছে ফিডব্যাক নিন
কাজ পুরো শেষ হওয়ার আগেই ক্লায়েন্টকে মন্তব্য করতে বলুন কাজ সম্পর্কে। এতে আরো উন্নত ফল দেয়া সম্ভব।
.          সমস্যা আগেই জানান
অনেক ফ্রিল্যান্সারই কোন কাজে সমস্যায় পড়লে একেবারে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত সেটা নিয়ে অপেক্ষা করেন। সেটা না করে ক্লায়েন্টকে সমস্যার কথা জানান।  ক্লায়েন্ট শেষ মুহুর্তে সমস্যার কথা শুনতে পছন্দ করেন না। যদি অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হয় সেটা আগেই জানিয়ে দিন।
.          মধ্যস্থতাকারী রাখুন
যদি এতকিছুর পরও ক্লায়েন্টের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করতে সমস্যা মনে করেন তাহলে একাজের দায়িত্ব আরেকজনকে দিতে পারেন। অনেক ফ্রিল্যান্সারই নিজে ব্যস্ত থাকেন কাজে আর যোগাযোগ করান অন্যকে দিয়ে।

No comments:

Post a Comment