যারা
ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে পরামর্শ দেন বা লেখালেখি করেন তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন
ফ্রিল্যান্সার কাজকে কিভাবে দেখেন তার ওপর।
আরো স্পষ্ট করে বললে, তিনি ক্লায়েন্টের সাথে কিভাবে যোগাযোগ করেন তার ওপর।
এদিক থেকে বিবেচনা করে ফ্রিল্যান্সারদের সরাসরি দুটি দলে ভাগ করা হয়। ইরেজিতে Passive এবং proactive.
খুব সহজ
ব্যাখ্যায় ধরনদুটি হচ্ছে, প্রথমটিতে ফ্রিল্যান্সার কাজের জন্য ক্লায়েন্টের পেছনে
ততটা ঘোরেন না, নিজে থেকে যোগাযোগ করেন না। নিজের যোগ্যতা বাড়ানোর দিকে বেশি
গুরুত্ব দেন। সরাসরি যোগাযোগ না করে পরিচিতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। সেই পরিচিতির কারনে ক্লায়েন্ট তারসাথে যোগাযোগ
করেন।
পরের ধরন ঠিক
বিপরীত। ফ্রিল্যান্সার নিজেই খোজ নিয়ে ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ করেন, নিয়মিত
যোগাযোগ রাখেন, তারসাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এসবের ভিত্তিতে কাজ নেন।
কোন ধরন ভাল
কিংবা মন্দ সরাসরি বলার সুযোগ নেই। দুদিকেই ভাল-মন্দ রয়েছে। তারচেয়েও যা
গুরুত্বপুর্ন, এক পদ্ধতি একজনের জন্য মানানসই হলেও আরেকজনের জন্য সুবিধেজনক হবে
এমন কথা নেই। কেউ বেশি আলাপ পছন্দ করেন, কেউ অপ্রয়োজনে আলাপ আদৌ করেন না। একজন
অন্যজনকে অনুকরন করতে গেলে সমস্যা তৈরী হতে পারে।
দুধরনের
ফ্রিল্যান্সারের ভাল-মন্দ দিকগুলি তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
প্যাসিভ
ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল দিক
.
মার্কেটিং এর
জন্য সময় ব্যয় না করে তাকে দক্ষতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করা যায়। ফলে অন্যদের থেকে
এগিয়ে থাকার সুযোগ থাকে। ব্লগ বা ওয়েব সাইটের মাধ্যমে পরিচিতি বাড়ানোর চেষ্টা করলে
সেগুলি থেকে ভিন্নভাবে আয় সহ অন্যান্য উপকার পাওয়া যায়।
.
কম যোগাযোগ
করতে হয় বলে কাজের জন্য বেশি সময় পাওয়া যায়।
.
পার্টটাইম
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সহায়ক।
মন্দ দিক
.
ফ্রিল্যান্সিং
পেশায় হাতে কাজ না থাকাকে বলে ফেমিন পিরিয়ড বা দুর্ভিক্ষের সময়। প্যাসভি
ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে এধরনের সম্ভাবনা বেশি।
.
ক্লায়েন্ট নিজে
যোগাযোগ করেন বলে কাজের নিয়ন্ত্রনও মুলত ক্লায়েন্টের হাতে থাকে। কাজের মুল্য, কাজ
কতদিনে শেষ হবে সেটাও ক্লায়েন্ট ঠিক করেন।
.
স্বাভাবিকভাবেই
এভাবে কাজ কম পাওয়া যায়, ফলে আয় কম হওয়ার সম্ভাবনা।
প্রোএকটিভ
ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল দিক
.
সবসময় কাজের
নিশ্চয়তা থাকে। কখনো কাজ কম থাকার সম্ভাবনা থাকলে অতিরিক্ত কাজের জন্য চেষ্টা করার
সুযোগ থাকে।
.
কাজের শর্তগুলি
নিজের সুবিধে অনুযায়ী ঠিক করে নেয়া যায়।
.
দক্ষতা
তুলনামুলক কম থাকলেও মার্কেটিং এর গুনে নিয়মিত কাজ পাওয়া যায়, ফলে আয় বেশি।
খারাপ দিক
.
প্রোএকটিভ
ফ্রিল্যান্সিং এর সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে অনেকেই নিজে থেকে যোগাযোগ করতে
ইতস্তত বোধ করেন। যারা সৃষ্টিশীল কাজ করেন তাদের মধ্যে এই প্রবনতা তুলনামুলক বেশি।
ফলে ইচ্ছে থাকলেও অনেকে সফল হন না।
.
বেশি কাজের
জন্য চেষ্টা করার অর্থ বেশিবার কাজ না পাওয়ার সম্ভাবনা। অনেকে কাজের চেষ্টা করে
কাজ না পেলে মনে কষ্ট পান। নিজের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন করেন। অনেকের পক্ষে বিষয়টি
মানিয়ে নেয়া কষ্টকর।
.
প্রতিবার কাজের
জন্য পরিকল্পনা, যোগাযোগ, হিসেব রাখা ইত্যাদিতে প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়।
সাধারনভাবে
ফ্রিল্যান্সার প্যাসিভ ফ্রিল্যান্সিং হিসেবেই কাজ শুরু করেন। প্রোএকটিভ
ফ্রিল্যান্সিং যখন লাভজনক তখন চেষ্টা করলে যোগাযোগ বাড়িয়ে, মার্কেটিং কাজে জোর
দিয়ে সেদিকে যাওয়া সকলের পক্ষেই সম্ভব।
প্যাসিভ নাকি
প্রোএকটিভ, যার জন্য যেটা মানানসই এভাবে না দেখে বরং দুদিকেই দক্ষতা বাড়ানো ভাল।
বলা হয় সত্যিকারের ফ্রিল্যান্সার হতে কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয়। কাজেই একটি
বা কয়েকটি কাজে ব্যর্থ হলে হতাস হওয়ার কিছু নেই। প্রত্যেকেই এধরনের ব্যর্থতার
অভিজ্ঞতা লাভ করে একসময় সফল হয়েছেন।
No comments:
Post a Comment