Monday, August 27, 2012

ফ্রিল্যান্সিং কাজে উইন্ডোজ বনাম ম্যাক


উইন্ডোজ এবং ম্যাকের বিতর্ক বহুদিনের। উইন্ডোজ ভক্তবরা উইন্ডোজের পক্ষে যুক্তি দেখান, ম্যাকের ভক্তরা ম্যাকের পক্ষে। যারা পেশাদার কাজ করতে চান, বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সিং কাজ, তাদের কাছে বিষয়টি কতটা গুরুত্বপুর্ন ?
প্রথমে প্রতিষ্ঠিত যুক্তিগুলি দেখা যাক। ম্যাক ব্যবহারকারীদের বক্তব্য, তাদের সিষ্টেমে সমস্যা খুবই কম হয়, নির্ভরযোগ্য। উইন্ডোজের মত যখন তখন সিস্টেম ক্রাশ করে না, ম্যাকে ভাইরাসের আক্রমন ঘটে না (ভাইরাস একেবারেই নেই একথা এখন বলার উপায় নেই, তারপরও সেটা উইন্ডোজের তুলনায় উপেক্ষা করার মত)।
উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের বক্তব্য, পিসির দাম কম, ইচ্ছেমত আপগ্রেড করা যায়, সব ধরনের সফটঅয়্যার রয়েছে, ডাটাবেজ এর মত কাজে পারফরমেন্স ম্যাকের থেকে অনেক ভাল। সেকারনেই বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ পিসি ব্যবহার করে।

দুপক্ষের যুক্তিই ঠিক। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এদের পার্থক্যও অনেক কমে এসেছে। দুদশক আগে মনে করা হত ডিটিপি কাজ করতে হলে ম্যাক ব্যবহার করতে হবে, পিসিতে একাজ করা যায় না। এরপর গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও ইত্যাদির কাজ কম্পিউটারনির্ভল হলে সেখানেও ম্যাককে একমাত্র ব্যবস্থা মনে করা হত। একসময় মিডিয়া ১০০ নামের ভিডিও যেমন জনপ্রিয় ছিল বর্তমানে ফাইনাল কাট ততটাই জনপ্রিয়। যদিও পিসিতে অনেকে ভিডিওর জন্য এভিড, প্রিমিয়ার ইত্যাদি ব্যবহার করছেন। গ্রাফিক ডিজাইনে ফটোশপ-ইলাষ্ট্রেটর ইত্যাদির উইন্ডোজ এবং ম্যাক উভয় ভার্শনই রয়েছে। অন্যদিকে এনিমেশনের ক্ষেত্রে ম্যাক থেকে পিসি অনেক এগিয়ে। অনেক জনপ্রিয় এনিমেশন সফটঅয়্যারের ম্যাক ভার্শন নেই।
এভাবে দুপক্ষের যুক্তি থেকে কোন সমাধান হচ্ছে না। বরং বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দুইয়ের পার্থকের কারনে যে সমস্যা হতে পারে সেটা দেখা যাক।
একজন ক্লায়েন্ট লেবেল ডিজাইন করবেন। শর্ত হচ্ছে সেটা প্রিন্ট করা হবে স্পট কালারে, লেবেলে বারকোড থাকবে। মুলত তিনি যে কাজ করেন তা হচ্ছে অন্যের কাছ থেকে কাজের অর্ডার নেন, ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে ডিজাইন করিয়ে নেন, সেটা প্রিন্ট করেন কোন প্রতিস্ঠানে। মধ্যস্থতা করে নিজে লাভ করেন।
নির্দিস্ট এই কাজটি তিনি প্রিন্ট করবেন কানাডার একটি প্রতিস্ঠানে। তারা প্রিন্ট করে ম্যাক সিষ্টেমে। স্পট কালার প্রিন্ট করার জন্য প্রিন্টারের প্রোফাইল ব্যবহার করতে হয়। উইন্ডোজের কাজ নিশ্চয়ই ম্যাকে ব্যবহারের কোন ব্যবস্থা আছে (আমার জানা নেই), কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এক্সপেরিমেন্টের যায়গা না।
দ্বিতীয় সমস্যা, ইলাষ্ট্রেটরে নিজস্ব বারকোড তৈরীর ব্যবস্থা নেই (কোরেল ড্র তে আছে)। ইলাষ্ট্রেটরের জন্য একটি প্লাগইন ব্যবহারের সুযোগ আছে যা শুধুমাত্র ম্যাকের জন্য। অন্য বারকোড সফটঅয়্যারগুলি অধিকাংশই বিটম্যাপভিত্তিক যা স্ক্রিন প্রিন্টারে ব্যবহার করা যায় না।
শেষফল, ঝুকি না নিয়ে কাজ ফেরত দেয়া। একজন ফ্রিল্যান্সারের কাছে কাজ ফেরত দেয়ার বিষয়টি বিব্রতকর।
এভাবে বিষয়টি তুলে ধরার কারন, কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য যোগাযোগের সময় উইন্ডোজ না ম্যাক একথাও মনে রাখা প্রয়োজন হয়। দুযায়গায় ইলাষ্ট্রেটর বা ফটোশপ ব্যবহার করা যায় এটুকু জানা যথেস্ট না। বর্তমানের ম্যাকে পিসির মত একই ইন্টেল প্রসেসর ব্যবহার করা হয়, সফটঅয়্যারের দিক থেকেও মিল খুব বেশি। তারপরও শতভাগ কম্পাটিবিলিটি এখন পর্যন্ত নেই।

No comments:

Post a Comment