Tuesday, October 9, 2012

ফ্রিল্যান্সারের ফোন ব্যবহার করা না করার ভালমন্দ


টেলিফোন আবিস্কার করেছিলেন গ্রাহাম বেল। বর্তমানে টেলিফোন ছাড়া সমাজের কথা ভাবা যায় না অথচ তিনি নিজে একবার বলেছিলেন তিনি সেই যন্ত্র ব্যবহার করেন না।
কারন অনুমান করা সহজ। এতে যে সময় ব্যয় করতে হয়, কাজের ক্ষতি হয় সেটা করতে তিনি নারাজ।
একজন ফ্রিল্যান্সারের কি তার কথা মেনে নিজের কাজে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। নাকি একে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে সুবিধেটুকু নেয়া উচিত।
পক্ষে-বিপক্ষে দুদিকেই যথেষ্ট যুক্তি তুলে ধরা যায়। সিন্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দ, কাজের ধরন ইত্যাদি বহুকিছু বিবেচনায় আসতে পারে। এই পোষ্টে দুপক্ষের যুক্তি তুলে ধরা হচ্ছে।


টেলিফোন ব্যবহারের ভাল দিক
.          নিশ্চিত পরিচিতি
টেলিফোনে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব যারসাথে কথা বলছেন তিনি সেই ব্যক্তি। অন্যান্য যে মাধ্যমগুলি ব্যবহার করা হয় (ইমেইল বা অন্যান্য) সেখানে ভুল পরিচয় ব্যবহার করা সম্ভব হলেও ফোনে সেটা করা হয় না। ফলে টেলিফোনের মাধ্যমে তুলনামুলক সহজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
.          পছন্দের মাধ্যম
একে জনের একেটি পছন্দের যোগাযেগের মাধ্যম থাকে। অনেকের কাছেই সেটা টেলিফোন। বর্তমানে যে কোন যায়গায় থেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যায়। কেউ সামনা সামনি কথা বলতে পছন্দ করেন, কেউ টেলিফোনে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।
.          সহজ সমঝতা
ফ্রিল্যান্সারকে নানা বিষয়ে ক্লায়েন্টের সাথে সমঝতা করতে হয়। কাজের দর থেকে শুরু করে কাজের পদ্ধতি পর্যন্ত সবকিছুই। ইমেইলে একাজ যেভাবে করা যায় টেলিফোনে তারথেকে ভালভাবে করা যায়। বাস্তবতা বলে যারা টেলিফোনে আলাগ করেন তারা অতিরিক্ত সুবিধে আদায় করতে পারেন, কাজের সমস্যাগুলি সহজে দুর করতে পারেন।
.          বিশ্বস্ততা
অনেক ব্যবসার জন্যই টেলিফোন ব্যবহার বিস্বস্ততার পরিচয় হিসেবে দেখা হয়। যেমন কোন ওয়েবসাইটে ফোন নাম্বার দেয়া থাকলে ধরে নেয়া হয় তাকে বিষ্বাস করা যায়। সাধারনত ভুয়া কোম্পানী ফোন নাম্বার প্রকাশ করে না।
.          উন্নত যোগাযোগ
টেলিফোন ব্যবহারকে ইমেইলের চেয়ে উন্নত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাবতে পারেন। এখানে বক্তার বলার ধরন থেকে তার মনোভাব সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। খুশি হওয়া, বিরক্তি, ঠাট্টা ইত্যাদি অনুসরন করে সম্পর্ক সহজ করা যায়।

টেলিফোন ব্যবহারের এই সুবিধেগুলি থাকার পরও অসুবিধে খুব কম নেই। সেগুলি একবার দেখে নেয়া যাক;
.          সময় ব্যয়
টেলিফোন প্রচুর সময় নিতে পারে। অনেকেই কথা বলার সময় মুল বক্তব্য থেকে সরে যান এবং অনবরত কথা বলতেই থাকেন। তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বর্ননা দিতে শুরু করলে বাধ্য হয়ে শুনতে হয়।
.          বিনামুল্যে পরামর্শ
বিনামুল্যে নানাবিধ পরামর্শ দিতে হতে পারে। একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি সেটা করতে পছন্দ করেন না কিন্তু টেলিফোনে প্রশ্ন করলে উত্তর না দিয়ে উপায় থাকে না।
.          রেকর্ড না থাকা
ইমেইলকে রেকর্ড হিসেবে ব্যবহার করা যায়। টেলিফোনে সেটা সম্ভব হয় না। টেলিফোনের নির্দেশ ভুলে যেতে পারেন। সেই মুহুর্তে হয়ত মনে হতে পারে মনে থাকবে, কিন্তু কয়েক দিন, সপ্তাহ বা মাস পার হলে ভুলে যাওয়াই স্বাভাবিক।
.          অতিরিক্ত চাপ
টেলিফোনে কাজের আলাপ করা অতিরিক্ত চাপ তৈরী করতে পারে। বিশেষ করে যারা অভ্যস্থ নন তারা দির্ঘ টেলিফোন আলাপে এতটাই চাপ অনুভব করেন যে সেদিনের কাজ বাদ দিতে হয়।
.          কাজে বাধা
অনেক ফ্রিল্যান্সার তাদের টেলিফোন নাম্বার প্রকাশ করেন না। কারনটা খুবই স্বাভাবিক। যখন কাজে ব্যস্ত থাকেন তখন কেউ ফোন করলে কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ফল হিসেবে সময়ের কাজ সময়ে শেষ হয় না।

টেলিফোনকে যেমন ভালভাবে কাজে লাগানো যায় তেমনি আপনার কাজে বাধা সৃষ্টিও করতে পারে। আপনি যেমন একে বাদ দিতে পারেন না তেমনি টেলিফোন আপনাকে নিয়ন্ত্রন করবে সেটাও হতে দিতে পারেন না।
টেলিফোনের নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা, আলাপ নির্দিস্ট বিষয়ে সিমাবদ্ধ রাখা, ফেঅনের আগেই আলাপের বিষয়গুলি ঠিক করে নেয়া, সাথে ইমেইল ব্যবহার করা ইত্যাদি নিয়ম মেনে সমস্যাগুলি নিয়ন্ত্রন করতে পারেন।

No comments:

Post a Comment