Tuesday, May 17, 2011

ইন্টারনেটে টাকা আয় : সবচেয়ে বেশি আয় করা যায় কিভাবে - ১

বর্তমান বিশ্ব ক্রমেই ইন্টারনেট নির্ভর হচ্ছে, আর মানুষকেও ক্রমেই এদিকে দৃষ্টি দিতে হচ্ছে। পড়াশোনা, কর্মসংস্থান, বিনোদন যাই বলুন না কেন, ইন্টারনেট সব সমস্যার সমাধান। তারপরও, যিনি চাকরী খুজছেন, কাজ খুজছেন কিংবা বর্তমান আয়ের সাথে অতিরিক্ত আয় যোগ করতে আগ্রহি তাদের সত্যিকারের আগ্রহ ইন্টারনেট ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের দিকে।
এজন্য রয়েছে বহু পদ্ধতি। অন্য কাজ ঠিক রেখে ইন্টারনেটে কিছু সময় ব্যয় করে আয় বাড়ানো যায়, আবার একেই পুরোপুরি পেশা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কাজের মধ্যে রয়েছে সাধারন ডাটা এন্ট্রির মত কাজ যেখানে ইংরেজি পড়তে এবং লিখতে জানাই যথেষ্ট, রয়েছে দক্ষ প্রোগ্রামারের কাজ, আর রয়েছে এই দুইয়ের মাঝামাঝি ধরনের যতকাজ।
এসব ছাড়াও রয়েছে নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আয়। এডসেন্স বিজ্ঞাপন, ইমেইল মার্কেটিং থেকে শুরু করে বহু পদ্ধতি। আর নিজের জিনিষপত্র ইন্টারনেটে বিক্রির বিষয় তো রয়েছেই।
কিন্তু এগুলির মধ্যে কোন পথে সবথেকে বেশি আয় করা যায়।
ইন্টারনেটে আয় সম্পর্কে বেশকিছু ভুল ধারনা প্রচার করা হয়েছে। মুলত ব্যবসায়িক কারনে এগুলি করা। যেমন পেইড-টু-ক্লিক (পিটিসি) পদ্ধতিতে আপনি যতবার ক্লিক করবেন আপনার একাউন্টে তত টাকা জমা হতে থাকবে। কোথাও কোথাও ক্লিক করলে কয়েক ডলার পাওয়া যায়, কাজেই আপনি সারাদিন ক্লিক করে শত কিংবা হাজার ডলার আয় করতে পারেন।
এটা ব্যবসায়িক প্রচারনা। কারন ডলার আয় করা যদি এত সহজ হত তাহলে সবাই এপথেই যেত। আবার এই বক্তব্যকে মিথ্যে বলা যাচ্ছে না কারন ক্লিক করে টাকা পাওয়ার বিষয়টি সত্যি। বাস্তবতা হচ্ছে, আপনি ক্লিক করলে টাকা পাবেন সেটা ঠিক, কিন্তু কতবার ক্লিক করবেন সেটা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। কাজেই এপথে হাজার ডলার আয়ের কোন সম্ভাবনা নেই।
যেভাবে সবচেয়ে বেশি আয় করা যায় সেকথায় যাওয়া যাক;
ইন্টারনেট বর্তমান বিশ্বের ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু। মানুষ কিছু কেনা প্রয়োজন হলে ইন্টারনেটে সার্চ করে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমেই দাম দেয়। সফটঅয়্যার, ইবুক, মিউজিক, ভিডিও হলে নিজেই ডাউনলোড করে নেয়। অন্য কিছু হলে সেগুলি পাঠানো হয় কুরিয়ারে। অনেক ক্ষেত্রেই বস্তুগত বিষয় থাকে না। যেমন অনলাইন কোর্সে ভর্তি বা ভিসার জন্য আবেদন।
এটাই হতে পারে ইন্টারনেটে আয়ের একটি বড় সুত্র। আপনার নিজের দোকান প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন একটি ওয়েবসাইট (কখনো কখনো ওয়েবসাইট ছাড়াও কাজ করা যায়)।  সেখানে আপনার পছন্দের বিষয় এমনভাবে রাখবেন যেন মানুষ আগ্রহ নিয়ে যায়। তারপর সেখানে বিভিন্ন পন্যের বিজ্ঞাপনের লিংক রাখবেন। কেউ যখন সেই লিংকে ক্লিক করে কিছু কিনবেন, আপনি কমিশন পাবেন। আপনি অন্য কোম্পানীর হয়ে প্রচারনার কাজ করছেন। এর নাম এফিলিয়েটেড মার্কেটিং। বর্তমানে একেই সবচেয়ে লাভজনক বলে ধরা হয়। গুগলের এডসেন্স থেকে মাসে ১০ হাজার ডলার আয়ের কথা হয়ত শুনেছেন। সেটা বিরল ঘটনা। কারন এই পরিমান আয়ের জন্য সেই সাইটে অবশ্যই বহ লক্ষ ভিজিটর যেতে হয়। অন্যদিকে এফিলিয়েটেড মার্কেটিং এর জন্য তত বেশি ভিজিটর প্রয়োজন নেই। যেহেগু কমিশনের পরিমান বেশি (কোথাও কোথাও ৭০% কিংবা আরো বেশি) সেহেতু অল্প ভিজিটরই আপনাকে বড় আয় এনে দিতে পারে।
এফিলিয়েটেড মার্কেটিং এ টাকা দেয়া হয় কয়েকভাবে। কোন কোন লিংকে ভিজিটর ক্লিক করে তাদের সাইটে গেলেই আপনি টাকা পাবেন (পিপিসি)। কোন ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফরম পুরন করলে টাকা পাবেন, কোথাও কিছু কিনলে (ইবুক, মিউজিক, সফটঅয়্যার) আপনি কমিশন পাবেন, কোথাও প্রতিস্ঠানে ভর্তি হলে (যেমন ইউনিভার্সিটি বা অনলাইন কোর্স) আপনি কমিশন পাবেন।
এফিলিয়েটেড মার্কেটিং এর একটি বড় সুবিধে হচ্ছে আপনি একবারই টাকা পাবেন এমন না, অনেক যায়গায় আপনাকে সেই ক্রেতা যতদিন কেনাকাটা করবেন ততদিন আপনি কমিশন পাবেন। বেশকিছু ক্রেতার ব্যবস্থা করে দিতে পারলে আপনি রীতিমত বসে থেকেই টাকা পাবেন।
আগামী পর্বে বিভিন্ন ধরনের এফিলিয়েটেড মার্কেটিং সম্পর্কে লেখা হবে।

No comments:

Post a Comment