ইন্টারনেটে কিছু কিনুন অথবা বিক্রি করুন, কাজ করান অথবা নিজে করুন, অর্থ লেনদেনের কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সারতে হয়। এজন্য বেশকিছু পদ্ধতি রয়েছে। আপনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, অয়্যার ট্রান্সফার ব্যবহার করতে পারেন কিংবা পে-পল ব্যবহার করতে পারেন। সহজতার দিক থেকে প-পলের তুলনা নেই। আপনার ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করাই যথেস্ট। তাদের সাইটে গিয়ে একাউন্ট খুলুন, যেখানে লেনদেন করবেন সেখানে ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করুন। অন্যভাবে বললে, আপনার ইমেইল এড্রেসে কেউ অর্থ পাঠালে সেটা জমা হবে আপনার পে-পল একাউন্টে, সেখান থেকে আপনার ব্যাংকে।
সমস্যা হচ্ছে আপনি সেটা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন কি-না। পে-পল ৪ ধরনের একাউন্ট ব্যবহারের সুযোগ দেয়। অবশ্যই আমেরিকানরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ পায়। অন্যগুলি দেশভেদে ভিন্ন। আর কোন কোন দেশে পে-পল ব্যবহারের কোন সুযোগই নেই। যেমন বাংলাদেশ। কিংবা ভারত। ভারতে সবচেয়ে কম সুযোগের পে-পল ব্যবহারের ব্যবস্থা ছিল সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এইসব দেশের কর্তাব্যক্তিরা তাদের দেশে চুল পরিমান দুর্নীতির সুযোগ রাখবেন না।
দেশগুলিতে দুর্নীতির পরিমান আসলে কতটুকু, দুর্নীতি কে করে এসব প্রশ্ন করা অর্থহীন। কারন ক্ষমতা তাদের হাতে। বাকি বিশ্ব যখন দুর্নীতির তালিকায় শীর্ষে এবং অবকাঠামোর তালিকায় তলানীতে স্থান দেয় তখন তারা সাথেসাথে প্রতিবাদ করে বলেন, ওসব ভুল রিপোর্ট। দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করার চেষ্টা।
বিরক্ত হয়ে আপনি একসময় নিজেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, পে-পল ব্যবহারের সুযোগ দিলে লাভ কার, ক্ষতিই বা কার?
লাভ অবশ্যই বাংলাদেশ-ভারতের মত দেশের কোটি কোটি মানুষের। পে-পলে কিছু সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। সেটা দিতে কারোই সামান্যতম আপত্তি নেই। যদি আয়কর দেয়ার কথা ওঠে সেটা দিতেও আপত্তি নেই। প্রসংগত উল্লেখ করা যেতে পারে পেপলের মাধ্যমে মানুষ যা করতে চায় তা হচ্ছে নিজের কাজ বা পন্য বিক্রি করে কয়েকশ, বড়জোর কয়েক হাজার ডলার অর্থ উপার্জন। এটা প্রত্যক্ষ বিষয়। পরোক্ষভাবে দেশের বেকারত্ব কমানো। চাকরী চাই, দিতে হবে বলে পথে নামতে তারা অনিচ্ছুক।
আর ক্ষতি কার ?
হয়ত সরকারের। কর্তা ব্যক্তিদের। যারা দেশকে ডিজিটাল করবেন বলে মুখে ফেনা তুলছেন তাদের। নিজের এক অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ না করে পারছি না। সরকারী বহুকোটি টাকার কাজ, পর্যবেক্ষনের দায়িত্ব বুয়েটের বিশেষজ্ঞের। তিনি পর্যবেক্ষন করলেন হোটেল সোনারগায়ে বসে, ঢেকুর তুলে পকেটে নোটের বান্ডিল নিয়ে ফেরত গেলেন এবং রিপোর্ট লিখে দিলেন। তাদের ক্ষতি তো বটেই।
কিংবা সেইসব আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুদ্ধিজীবীর যাদের সাথে যোগাযোগ করতে হয় পেছনের দরজা দিয়ে। সেটা না করলে তারা জানিয়ে দেন কোন কোম্পানীর কাজ করার সামর্থ্য নেই। সাথেসাথে সেই কোম্পানী কাজ হারায়। তাদের কথা অত্যন্ত দামী। এখানে-সেখানে উপদেষ্টা হিসেবে তাদের নামই ছাপা হয়। ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাবার সুযোগ তারা দেবেন কেন?
আর নিশ্চয়ই নেতাদের। তাদের নামে যে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ সেগুলি সব মিথ্যে। কারন এর কোন ডকুমেন্ট নেই। পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে সরকার লেনদেনের হিসেব রাখার জন্য অনলাইন পেমেন্ট বাধ্যতামুলক করতে চেষ্টা করছেন। তারা খুব ভাল করেই জানেন অনলাইনে লেনদেন করলে টাকা পাচারের বিষয়টি আর মিথ্যে থাকে না।
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পরিমান আয় আসে তৈরী পোষাক থেকে। অনেকেই বলেন তার অবস্থা নড়বড়ে। বাকি বেতনের দাবীতে শ্রমিকদের পথে নামতে হয়, পুলিশের লাঠিপেটা খেতে হয়, সাথে গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংশ করার চক্রান্তের অভিযোগে মামলা। কাজের পরিবেশের বিষয় তো আছেই। যারা ক্রেতা তারা বহুবার বলেছেন তারা এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসা করবেন না। করেন অতিলোভে অথবা এর প্রভাব যে লক্ষ লক্ষ মানুষের ওপর পরবে তাদের কথা ভেবে।
দেশের কয়েক কোটি বেকার হন্যে হয়ে খোজ করছেন কিভাবে ইন্টারনেটে টাকা আয় করা যায়। গুরুত্বগুর্ন একটি বিষয় দৃষ্টির আড়ালে থেকে যাচ্ছে। টাকা কিভাবে হাতে পাবেন। সেটা নিশ্চিত না হলে কিভাবে কত আয় করা যায় জেনে লাভ নেই।
আর পে-পল ব্যবহারের বর্তমান অবস্থা যদি জানা না থাকে তাহলে আরেকবার জেনে নিন। বর্তমানে অনেকে কাজ করছেন ঘুরপথে। অন্য দেশের নাম ব্যবহার করে। অথবা অন্য পদ্ধতিতে। মালয়েশিয়ার কিছু কোম্পানী পে-পল একাউন্ট তৈরীতে সহায়তা করার বিজ্ঞাপন দেয়। বাংলাদেশে পেপল-বিডি নামে একটি ওয়েবসাইটের এডওয়ার্ডস বিজ্ঞাপন হয়ত চোখে পড়েছে, তারা বাংলাদেশে পে-পল ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে। এধরনের বিজ্ঞাপন দেয়া বড় কোম্পানীর পরিচয় বহন করে। কিন্তু তাদের সাইটে পেপল ব্যবহারের নিয়মকানুন উল্লেখ করা নেই। এটা অসত ব্যবসার লক্ষন। যাকে বিশ্বাস করা যায় না তারকাছে নিজের অর্থ জমা রাখতে পারেন না। পে-পল এর নিয়ম অনুযায়ী মধ্যস্থতা করার কোন সুযোগ নেই। তারা যেকোন মুহুর্তে একাউন্ট বাতিল করতে পারে।
আমি কিভাবে বাংলাদেশ থেকে পে-পল অ্যাকাউন্ট খুলবো
ReplyDeleteবাংলাদেশ থেকে পেপল ব্যবহার করা যায় না।
Delete