একসময় ডিজনি ষ্টুডিওতে ছবি আকা হত কাগজে, তারপর স্ক্যান করে এনিমেশনের কাজে ব্যবহার করা হত। মাঝখানে প্রথাগত ড্রইং এবং ডিজিটাল ড্রইং দুই চালু ছিল, বর্তমানে শুধুমাত্র ডিজিটাল ড্রইং। এথেকে ধরে নিতে পারেন ডিজিটাল ড্রইং এবং পেইন্টিং কতটা অগ্রগতি লাভ করেছে। অনেক শিল্পী সাধারন ক্যানভাসের বদলে ডিজিটাল ক্যানভাস ব্যবহার করছেন। পেইন্টিং বিষয়টি বেশ জটিল। শিল্পী নানা মাপের নানা ধরনের তুলি ব্যবহার করেন, একাধিক রঙের মিশ্রনে নতুন রং তৈরী করেন, হাতের কারুকাজে তুলি থেকে নানারকম বৈচিত্র বের করে আনেন। এর বিকল্প হিসেবে যখন সফটঅয়্যার ব্যবহার করা হয় তখন সেখানেও এই সুযোগগুলি থাকা প্রয়োজন হয়। ফটোশপে এর সবই আছে।
ফটো আপনি কিভাবে পেইন্টিং এর কাজ করতে পারেন জেনে নিন। একটা কথা আগেই জানিয়ে রাখা ভাল, পেইন্টিং এর সময় মাউসের বদলে গ্রাফিক ট্যাবলেট ব্যবহার করলে কাজ করা সহজ হবে এবং এমনকিছু সুবিধে পাবেন যা মাউসে পাওয়া যায় না। এবিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে এখানে।
ব্যাকগ্রাউন্ড এবং ফোরগ্রাউন্ড কালার, পছন্দের রং সিলেক্ট করা
ফটোশপে যে কোনসময় ব্যবহারের জন্য দুটি রং নির্ধারিত করে রাখতে পারেন। ফটোশপের ডিফল্ট এই দুটি রং কারো এবং সাদা। টুলবক্সে এই দুটি রং দেখাতে পাবেন। ওপরেরটির নাম ফোরগ্রাউন্ড, নিচেরটি ব্যাকগ্রাউন্ড কালার। আপনি ব্রাস ব্যবহার করে ক্যানভাসে দাগ দিলে সেটা হবে ফোরগ্রাউন্ড কালারে। আর ইরেজার টুল ব্যবহার করে কিছু মুছে দিলে সেই অংশ পুরন হবে ব্যাকগ্রাউন্ড কালার দিয়ে (যদি ট্রান্সপারেন্সি না থাকে)। যদি অন্য রং থাকে তাহলে এদের বামদিকে ছোট্ট সাদাকালো আইকনে ক্লিক করে ডিফল্ট সাদা-কারো রং পাওয়া যাবে। দুদিকে এরো চিহ্নিত আইকনে ক্লিক করলে ফোরগ্রাউন্ড এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কালার পাল্টাপাল্টি হবে।
এছাড়াও আপনি যে কোন সময় পছন্দের রং সিলেক্ট করতে পারেন কালার প্যালেট, সোয়াচ থেকে।
. কালার প্যালেট ওপেন করুন। আপনার ডকুমেন্টের ধরন অনুযায়ী আরজিবি/সিএমওয়াইকে মান দেখা যাবে।
. কালার প্যালেটে একটি রঙের বার রয়েছে। এখানে মাউস পয়েন্টার আনলে আইড্রপার টুল হিসেবে দেখা যাবে। পছন্দের রং ক্লিক করুন।
. রঙের আরজিবি (অথবা সিএমওয়াইকে) এর মান দেখা যাবে ওপরের অংশে। এখানে স্লাইডার ব্যবহার করে মান পরিবর্তন করতে পারেন, অথবা নির্দিস্ট রয়ের মান জানা থাকলে সেটা টাইপ করে নিখুত রং পেতে পারেন।
. সোয়াচ প্যানেল থেকে পছন্দের রং ব্যবহারের জন্য সোয়াচ (swatches) ট্যাবে ক্লিক করুন এবং পছন্দের রং ক্লিক করুন।
কোন রং সিলেক্ট করার পর সেটা ফোরগ্রাউন্ড কালার হিসেবে পাওয়া যাবে এবং পরিবর্তন না করা পর্যন্ত সেখানেই থাকবে।
ছবি থেকে রং সিলেক্ট করা
অনেকসময়ই ক্যানভাসে যে রংগুলি রয়েছে সেখান থেকে কোন রং পেইন্টিং কাজে ব্যবহার করা প্রয়োজন হতে পারে। এমনকি ফটোগ্রাফ থেকেও।
. টুলবক্সে আইড্রপার টুল সিলেক্ট করুন।
. নির্দিস্ট যায়গার রঙের ওপর ক্লিক করুন।
আইড্রপার টুল সিলেক্ট না করেও ব্রাস টুল সিলেক্ট করা অবস্থায় Alt কি চেপে সাময়িকভাবে আইড্রপার টুল ব্যবহার করা যায়।
আইড্রপার টুল সিলেক্ট না করেও ব্রাস টুল সিলেক্ট করা অবস্থায় Alt কি চেপে সাময়িকভাবে আইড্রপার টুল ব্যবহার করা যায়।
ব্রাস সিলেক্ট করা
আপনি পেইন্ট করবেন ব্রাস টুল ব্যবহার করে। সঠিক পেইন্টের জন্য ব্রামের মাপ, ধরন ইত্যাদি বিভিন্ন হতে পারে।
. টুলবক্সে ব্রাসটুল সিলেক্ট করুন
. প্রোপার্টিজ বারে ব্রাসের আইকনে ক্লিক করুন। এখানে এয়ারব্রাস, পেইন্টব্রাস এবং ট্রান্সপারেন্ট স্প্রে তিন ধরনের ব্রাশ অপশন রয়েছে। এয়ারব্রাসের ধারগুলি সফট পাওয়া যাবে, পেইন্টব্রাসের সাধারন রং পুরোটাই ব্যবহার কবে এবং স্প্রে ব্যবহার করলে স্প্রেয়ারের মত ইফেক্ট পাওয়া যাবে। আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী যে কোনটি সিলেক্ট করুন।
. পরবর্তী আইকনে ক্লিক করে ব্রাসের সেপ (ব্রাস-টিপ) কেমন হবে, কতটা মোটা হবে, ধারগুলি কতটা হাল্কা হবে এই বিষয় ঠিক করে নিতে পারেন। প্রথমে নিচের অংশ থেকে ব্রাসের ধরন সিলেক্ট করুন, এরপর প্রয়োজন হলে তার সাইজ এবং হার্ডনেস পরিবর্তন করে নিন।
বিভিন্ন ধরনের সেপের ব্রাস পৃথকভাবে ইনষ্টল করে ব্যবহার করা যায়। ফটোশপের সাথেও অনেকগুলি ব্রাস পৃথক ফাইল হিসেবে দেয়া হয়।
বিভিন্ন ধরনের সেপের ব্রাস পৃথকভাবে ইনষ্টল করে ব্যবহার করা যায়। ফটোশপের সাথেও অনেকগুলি ব্রাস পৃথক ফাইল হিসেবে দেয়া হয়।
. পেইন্টিং এর জন্য মোড সিলেক্ট করবেন এর পরের অংশ থেকে। নরমাল মোডে এক রঙের ওপর আরেক রং পেইন্ট করলে আগের রংটি পেছনে ঢাকা পড়বে। অন্যান্য মোডে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে।
. অপাসিটি অংশ থেকে পেইন্ট করা অংশ কতটুকু স্বচ্ছ আ অস্বচ্ছ হবে সেটা ঠিক করে দিন। অপাসিটি ১০০ অর্থ পেছনের কিছুকে পুরোপুরি ঢেকে দেবে। কমতে থাকলে এর ভেতর দিয়ে পেছনের অংশ দেখা যাবে।
. ব্রাস প্যানেল বাটনে ক্লিক করে নিজের পছন্দমত ব্রাস তৈরী করে নিতে পারেন।
এগুলি ছাড়াও প্রেসার সেনসিটিভ ট্যাবলেটের জন্য কিছু সেটিং রয়েছে।
পেইন্ট করা
আপনার পছন্দের ব্রাস, পছন্দের রং সিলেক্ট করে ক্যানভাসের ওপর ড্রাগ করুন। মাউস বা গ্রাফিক পেনের গতিপথ অনুযায়ী পেইন্ট হবে। ভাল ছবি আকা অবশ্যই অন্য যোগ্যতা।
ইরেজার টুল
ইরেজার টুল ব্যবহার করা হয় কিছু মুছে দেয়ার জন্য। ট্রান্সপারেন্ট লেয়ারের ক্ষেত্রে এই টুল সিলেক্ট করে যেখানে ক্লিক-ড্রাগ করবেন সেই অংশে যা আছে সেটা মুছে যাবে।
ইরেজার টুলের জন্যও ব্রাসের মত নানাধরনের সেপ ব্যবহার করা যাবে।
কিছু লক্ষনীয় বিষয়
. ফটোশপে একবার মাত্র আনডু ব্যবহার করা যায়। কিছু পেইন্ট করার পর বাদ দিতে হলে হিষ্টোরী ব্যবহার করুন।
. ফটোশপ বিটম্যাপ আর্ট ব্যবহার করে। একবার পেইন্ট করার পর তাকে পরিবর্তন করতে পারেন না। সেটা বাতিল করতে পারেন কিংবা মুছে দিতে পারেন।
ব্রাশের নানারকম ব্যবহার
ব্রাশের নানারকম ব্যবহার
No comments:
Post a Comment