ক্যামেরা কিংবা ছবি উঠানোর কথা বললেই কিছু শব্দ শোনা যায়, ওয়াইড এঙ্গেল, টেলিফটো, ফোকাল লেন্থ ইত্যাদি। কিংবা লেন্সের ক্ষেত্রে বলা হয় অত মিলিমিটার। এই বিষয়গুলি ঠিক কি বুঝায়, ছবিতে এর কি প্রভাব পরে নতুন ফটোগ্রাফারদের কাছে অনেকটাই অশ্পষ্ট মনে হতে পারে। বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হয়ত লক্ষ করেছেন ডিজিটাল ক্যামেরার তুলনা করা হয় ৩৫মিলিমিটার ক্যামেরার সাথে। আগেকার দিনের ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরাকেই এখনও ষ্ট্যান্ডার্ড ধরে তারসাথে তুলনা করা হয়। যেমন উল্লেখ করা হল অমুক লেন্স ১৮-৮৫ মিমি, এরপরই উল্লেখ করা হয় ৩৫ মিমি এর তুলনায়।
খালিচোখে আমরা যেমন দেখি ছবিতে যদি ঠিক তেমনটি পেতে চাই তাকে বলতে পারি নরম্যাল লেন্স। হিসেব করে দেখা গেছে ৫০ থেকে ৫৫ মিমি পর্যন্ত লেন্সে এধরনের ছবি পাওয়া যায়। কাজেই লেন্সের হিসেবে এগুলি ষ্ট্যান্ডার্ড লেন্স নামে পরিচিত।
যদি এরথেকে কম ফোকাল লেন্থ হয় তাহলে সামনের দৃশ্য খালিচোখে যতটা দেখা যায় তারথেকে বেশি দেখা যাবে। লেন্স অনেক বেশি কৌনিক দৃশ্য ধারন করে, সেকারনে একে বলা হয় ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স। মুলত ৩৫ মিমি এর নিচের ফোকাল লেন্ধের লেন্সগুলি ওয়াইড এঙ্গেল নামে পরিচিত। এঙ্গেলের পরিমান যদি খুব বেশি হয় তাহলে সামনের দৃশ্য গোলাকার ধারন করে। অনেকটা মাছের চোখের মত বলে এর নাম ফিস-আই লেন্স।
আবার বিপরীতভাবে ফোকাল লেন্থ যদি বেশি হয় তাহলে সামনের দৃশ্যের জন্য কোন ছোট হয়ে আসে এবং নির্দিষ্ট অংশ দেখা যায়। একে ন্যারো এঙ্গেল লেন্স বলতে পারেন, তবে বাস্তবে একে বলা হয় লং ফোকাস লেন্স, কিংবা টেলিফটো লেন্স কিংবা জুম লেন্স।
নির্দিস্টভাবে লেন্সের যে ভাগগুলি রয়েছে তা হচ্ছে
ফিসআই লেন্স : ৬ থেকে ৮ মিমি। অন্তত ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত ধারন করতে পারে। কখনো কখনো ২২০ ডিগ্রী পর্যন্ত (ক্যামেরার পেছন দিকে) ধারন করার মত লেন্সও রয়েছে।
ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স : ১৮ থেকে ৩৫ মিমি পর্যন্ত। সাধারন কাজের জন্য এগুলি ব্যবহার করা হয়। এতে ডেপথ অব ফিল্ড বেশি পাওয়া যায়, ফলে ল্যান্ডস্কেপ, ইন্টেরিয়র, আর্কিটেকচার ইত্যাদি কাজের জন্য বেশি উপযোগি।
ষ্ট্যান্ডার্ড লেন্স : ৫০ মিমি। মানুষের চোখে দেখার কাছাকাছি বলে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। অনেক বেশি এপারচার ব্যবহার করা যায় বলে কম আলোতে ভাল ছবি পাওয়া যায়।
লং ফোকাস লেন্স : ৮০ থেকে ৪০০ মিমি। বিষয়কে অনেক বড় দেখা যায় বলে দুরের কোনকিছু ছবি উঠানোর জন্য বেশি উপযোগি। স্পষ্টভাবে দুরের কিছুর ছবি উঠানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। দুরত্ব বাড়ার সাথেসাথে ডেপথ অব ফিল্ড কমে যায়।
সুপারজুম বা এক্সট্রিম লং ফোকাস লেন্স : ৪০০ মিমি এর ওপর লেন্সকে এই দলে ফেলা হয়। পাখি বা বন্য প্রানী এই ধরনের বিষয়ের জন্য বেশি উপযোগি। অনেকসময় একে টেলিফটো লেন্সও বলা হয়। সাধারনত এগুলি আকারে বড় এবং ওজন বেশি বলে ট্রাইপড ব্যবহার করতে হয়। ষ্টেডিয়ামে খেলার সময় সাংবাদিকরা এগুলি ব্যবহার করে দুর থেকে ছবি উঠান।
এর বাইরে কিছু বিশেষ ধরনের লেন্স রয়েছে। যেমন;
ম্যাক্রো লেন্স : মাছির চোখ কিংবা ঘাসের ছোট একটি ফুল কাছ থেকে উঠানোর জন্য বিশেষ ধরনের এই লেন্স ব্যবহার করা হয়। যদিও এর ফোকাল লেন্স ৫০ থেকে ২০০ মিমি, এতে বিশেষভাবে ফোকাস করার কারনে বিষয়কে অনেক বড় আকারে পাওয়া যায়। এক্সটেনশন টিউব নামে একধরনের এডাপটার ব্যবহার করে সাধারন লেন্সকে ম্যাক্রো লেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অনেকে নিজেই এধরনের টিউব তৈরী করে নেন। মুলত ক্যামেরা থেকে মুল লেন্সকে কিছুটা দুরত্বে রেখে একাজ করা হয়।
জুম এডাপটার : কোন লেন্সের সর্বোচ্চ ফোকাল লেন্থকে আরো বাড়ানোর জন্য একধরনের এডাপটার ব্যবহার করা হয়। ২এক্স এডাপটার ব্যবহারের অর্থ লেন্সের আগের ফোকাল লেন্থকে দ্বিগুন করা। ক্যামেরা এবং লেন্সের মাঝখানে একে লাগানো হয়।
- ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ডিজিটাল ফটোগ্রাফি
- ভাল ছবি উঠানোর নিয়ম-কানুন
- কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন
- সঠিক এক্সপোজার ব্যবহার
- ট্রাইপড কেন ব্যবহার করবেন
- ফ্লাশ কখন ব্যবহার করবেন না
- ডেপথ অব ফিল্ড ব্যবহার
- জেপেগ বনাম র মোড
- প্যানোরমা ছবি উঠানোর নিয়ম
- পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির নিয়ম
- ফোকাল লেন্থ, এঙ্গেল অব ভিউ এবং নানা ধরনের লেন্স
- ক্যামেরা ব্যাগ – কি দেখে কিনবেন
- সঠিক রঙের জন্য হোয়াইট ব্যালান্স
- মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি
- ফটোগ্রাফির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি
- ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম
- ফটোগ্রাফি থেকে আয়
- ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের নিয়ম
- ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার, মিটারিং মোড
- ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার
- ডিজিটাল ক্যামেরার ফার্মঅয়্যার আপগ্রেড করা
- ক্যানন ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার
- এইচডিআর ফটোগ্রাফি
No comments:
Post a Comment