Wednesday, September 28, 2011

ফ্রিল্যান্সিং এ সমস্যার কারন খুজুন

ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে বছরে লক্ষ ডলার আয় করা যায়, সাধারন পোষাক পড়ে সারাদিন বাড়িতে বসে থাকা যায়, এধরনের কথা শুনলে নিশ্চয়ই মনে হবে এরচেয়ে লোভনীয় পেশা আর নেই। বাস্তবে আপনি যখন কাজে হাত দিলেন তখন দেখলেন এত দ্রুত ধনী হওয়া যায় না।  বরং পরিবর্তে পেলেন ক্রমাগত চেষ্টা করে যাওয়া, অনেক সময় সাফল্য ছাড়াই।
ফ্রিল্যান্সিং অবশ্যই দ্রুত ধনী হওয়ার পথ না। আবার বিপরীতভাবে আপনি চেষ্টা করে সফল হবে না এমনটাও না। যদি আপনি ঠিক পথে চলেন সাফল্য পাবেন। আর ঠিকপথে চলার জন্য আপনার জানা প্রয়োজন  সেটা আসলে কোন পথ।
ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সাধারন কিছু ভুল এড়ানোর বিষয় উল্লেখ করা হচ্ছে এখানে।
.          ফ্রিল্যান্সিংকে ব্যবসার বদলে শখ হিসেবে ব্যবহার করা
নিজের ইচ্ছেমত সময়ে কাজ করা, এই ধারনা থেকে অনেকে ধরে নেন অন্য সবকাজ করার পর যতটুকু সময় পাওয়া যায় সেটুকু সময় ব্যয় করেই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় ভাল করা সম্ভব। এটা ভুল ধারনা। আপনার কাজ সরাসরি ক্লায়েন্টের সাথে সম্পর্কিত। তিনি আপনার কাছে নিষ্ঠঅ আশা করেন। তবেই আপনি কাজ পাবেন। এরপর মানের বিষয় যদি উল্লেখ করতে হয়, আপনি যত বেশি কাজ করবেন তত দক্ষতার সাথে কম সময়ে ভাল কাজ করার যোগ্যতাসম্পন্ন হবেন। বস্তুত যারা নিয়মিত কাজ করেন তারা সহজে কাজ পান এবং সেই কাজ কম সময়ে ভালভাবে করেন। বিপরীতে শখ হিসেবে যারা কিছু করতে চান তারা ততটা সফল হন না।
.          সব কাজের জন্য যোগাযোগ করা
আপনি মনে করতে পারেন যত বেশি কাজের জন্য যোগাযোগ করবেন কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। বাস্তবে আপনি যত বেশি কাজের চেষ্টা করবেন আপনার মনোযোগ তত বিক্ষিপ্ত হবে, কোনটাতেই খুব ভাল করার সুযোগ থাকবে না। বরং আগেই নির্দিষ্ট কিছু কাজ বাছাই করে সেগুলির জন্য আরো ভালভাবে চেষ্টা করে ভাল ফল পাওয়া যায়।
প্রতিটি চেষ্টার সাথে সময়, অর্থ, শ্রম, মেধা সবকিছু জড়িত। আগেই যদি যাচাই করে নিতে পারেন সেই কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু তাহলে এগুলির শাস্রয় করতে পারেন।
.          মার্কেটিং এর পরিকল্পনা না থাকা
কোকাকোলার মত বিশাল কোম্পানী এত বড় কিভাবে হয়েছে একবার ভেবে দেখেছেন কি ? তারা নিজ দায়িত্বে তাদের পন্য দোকানে দোকানে পৌছে দেয়, এমনকি ফুটপাতের দোকানে পর্যন্ত। যে কোন ব্যবসায় মার্কেটিং যত উন্নত ব্যবসায় সাফল্যের সম্ভাবনা তত বেশি। ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে মার্কেটিং বিষয়টি তুলনামুলক জটিল। আপনি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন না কিংবা কাজের জন্য ধর্না দিতে পারেন না। কৌশলে নিজের প্রচারের ব্যবস্থা করতে হয়।
সাধারনভাবে ফ্রিল্যান্সার এধরনের কাজ খুব পছন্দ করেন না। বাস্তবতা হচ্ছে যারা নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ব্লগ ব্যবহার করেন, সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ব্যবহার করেন, বিভিন্ন সাইটে কমেন্ট লেখেন তাদের পরিচিতি বাড়তে থাকে এবং তারা সহজে কাজ পান।
.          কাজ শেষে যোগাযোগ না রাখা
কোন ক্লায়েন্টের সাথে একবার কাজ করার পর তারকাছে পরবর্তীতে কাজ পাওয়া তুলনামুলক সহজ। এজন্য কাজ শেষ হলেও তারসাথে সম্পর্ক রাখা জরুরী।  তার আরো কাজ থাকতে পারে অথবা তার পরিচিত কারো কাজ থাকতে পারে।
.          অর্থ বিষয়ে উদাসিন থাকা
ফ্রিল্যান্সিং যদি অতিরিক্ত আয়ের উতস মনে করেন তাহলে এদিকে খুব দৃষ্টি না দেয়া একধরনের সমস্যা তৈরী করে। ক্লায়েন্টকে যদি বলেন তার খুশিমত অর্থ দিলেই চলবে সেটা ফ্রিল্যান্সার সম্পর্কে খারাপ ধারনা তৈরী করে। বরং এসব ক্ষেত্রে পেশাদারী মনোভাব দেখালে ভাল ফল পাওয়া যায়। আপনি যতটুকু কাজ করবেন সেজন্য আপনার পাওয়া বুঝে নেয়ার দায়িত্ব আপনার।
.          নিজেকে যথেষ্ট যোগ্য মনে না করা
ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে একটি সাধারন সমস্যা সারা বিশ্বের দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের কাছে নিজেকে ছোট মনে করা। বিষয়টা একেবারে অসত্য না, কিন্ত যাকে সবচেয়ে দক্ষ মনে করছেন তারদিকে একবার দৃষ্টি দিন তো। তিনি একসময় আপনার মতই নবীন ছিলেন, বহু বছর চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। তাহলে আপনি হবেন না কেন ? একসময় আপনি অবশ্যই অন্যদের ছাড়িয়ে যাবেন।
এই বিষয়গুলির কোনটির সাথে কি আপনি নিজের মিল খুজে পাচ্ছেন ? তাহলে সেটা সংশোধনের চেষ্টা করুন।
অথবা যদি ভিন্নমত পোষন করেন তাহলে মন্তব্য লিখে জানান।

No comments:

Post a Comment