Monday, November 21, 2011

ফ্রিল্যান্সিং এর অবাক করা কিছু বিষয়

ইন্টারনেট থেকে যথেস্ট পরিমান অর্থ উপার্জন করা যায় একথা বিশ্বাস করি না। একথা যদি কেউ বলেন অবাক হবেন না নিশ্চয়ই। কারন ফ্রিল্যান্সিং যত জনপ্রিয়ই হোক এই ধারনা এখনও থেকে গেছে বহু মানুষের মধ্যে। এদের কেউ কেউ চেষ্টাও করেছেন। ব্লগ তৈরী করে সেখানে এডসেন্স বা এফিলিয়েটেড বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে কিংবা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজের জন্য বিড করে। সফল হননি। কাজেই এধরনের মন্তব্যকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
বিষয়টি অন্যভাবে দেখা যাক। ফ্রিল্যান্সিং সারা বিশ্বের জনপ্রিয় হচ্ছে। বাংলাদেশে যারা বেশ কিছুদিন ধরে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে দেশ ধনী হওয়ার কথা বলছেন তারাও এখন ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশে কাজ করছেন অনেকেই (সত্যিকারের তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে না কারন সরকারীভাবে একাজকে স্বিকার করা হয় না। সবচেয়ে বড় প্রমান পেপল বন্ধ রাখা, ব্যাংকে হয়রানি),কাজেই বিপরীত দিককে অস্বিকার করবেন সে উপায় নেই। বরং এর মাধ্যমে চাকরীর বেতন থেকে বেশি আয় করা যায়, ব্যবসার ঝুকি এড়িয়ে ভালভাবে থাকা যায় এটাই প্রমানিত। ফ্রিল্যান্সিং এর বেশকিছু বিষয় অন্যান্য পেশা থেকে আলাদা। এধরনের কিছু অবাক করা বিষয় যা নন-ফ্রিল্যান্সারদের জানা নেই সেগুলি এখানে তুলে ধরা হচ্ছে।


.          ব্যবসা শুরুর খরচ নেই
বাংলা টিউটর সাইটে ফ্রিল্যান্সিংকে ব্যবসা হিসেবে দেখার কথা বলা হয়েছে বহুবার। কাজেই একে ব্যবসা হিসেবেই কল্পনা করুন। সাধারনভাবে ব্যবসা করার জন্য আপনার পুজি প্রয়োজন। ঢাকার মত শহরে কেউ ব্যবসা করতে চাইলে জানেন সেটা কতটা দুঃসাধ্য। যায়গা ভাড়া নিতে পুজির সমস্ত অর্থ চলে যায়। ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা শুরুতে সেতুলনায় কোন বিনিয়োগ নেই। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট এই যথেষ্ট। যায়গা ভাড়া করা, লোক নিয়োগ দেয়া, কাউকে কোনধরনের ফি দেয়ার বিষয় নেই। এমনকি যেখানে কাজ পাবেন সেখানেও কোনধরনের ফি দিতে হয় না।
.          নিয়ম মেনে চলা
ছাত্র অবস্থায় আপনাকে বলা হয়েছে কখন কি করতে হবে, চাকরী করার সময় আপনাকে বলা হয় কোন কাজ কিভাবে করতে হবে, কোন নিয়মে চলতে হবে। আপনি যখন ফ্রিল্যান্সার তখন কারো উপদেশ প্রয়োজন নেই। আপনি নিজেই বোঝেন কখন কতটুকু কাজ করতে হবে। ফ্রিল্যান্সারের জীবন যাপন কাজের সাথে মানানসই নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে।
.          বিক্রি করার যোগ্যতা
একজন ফ্রিল্যান্সার নিশ্চয়ই নিজেকে বিক্রেতা মনে করেন না। অথচ তার কাজ অন্যঅর্থে বিক্রি করা। যে কাজ করতে পারেন সেটা বিক্রি করেন ক্লায়েন্টের কাছে। এরফলে যে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী হয় তা কাজে লাগানো যায় অন্যখানে।
.          অনলাইন সমাজে সম্পৃক্ততা
ইন্টারনেটে নিজের প্রচারের জন্য এবং কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে ইন্টারনেটে নতুন এক সমাজের সাথে জড়াতে হয়। এই সমাজ পুরো বিশ্ব। বিশ্বের কোথায় কখন কি ঘটছে, কোথায় কে কি করছে তারই মধ্যে আপনি বাস করছেন। আপনি একজন বিশ্বনাগরিক।
.          নিজেই নিজের কর্তৃত্বে
আপনি যখন চাকরী করেন তখন আপনার উর্ধতন বলে দেন আপনাকে কি করতে হবে। তার মতের বিপক্ষে যাওয়ার অধিকার আপনার নেই। এমনকি তিনি নিশ্চিত ভুল করছেন জেনেও সেটা বলার উপায় নেই। ফ্রিল্যান্সার নিজেই নিজের বস।
.          দক্ষতা এবং কাজের মানে উন্নতি
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনাকে প্রতিদ্বন্দিতা করতে হয় সারা বিশ্বের ফ্রিল্যান্সারদের সাথে। আপনার সুযোগ আছে অন্যদের কাজের সাথে নিজের কাজের তুলনা করার, নিজের কোথায় ভুল হয়েছে সেটা জানার, অন্যেরা কিবাবে সমাধান করে সেটা জানার। ফল হিসেবে দক্ষতা বাড়ে এবং কাজের মান উন্নত হয়।
.          বিশ্বমানের মজুরী
চাকরী বা স্থানীয়ভাবে কাজ করার সময় আপনাকে স্থানীয়ভাবে মজুরী হিসেব করতে হয়। আপনি বাংলাদেশে বা ভারতে কাজ করে বৃটেনের হিসেবে মজুরী নিতে পারেন না। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার সময় কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করছে না আপনি কোন দেশের। যখন বৃটেনের কাজ করবেন তখন তাদের হিসেবে মজুরী পাবেন।
.          সমস্যা রয়েছে এখানেও
এতক্ষন যে কথাগুলো বলা হল তাতে মনে হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং কাজে সবই ভাল দিক। বাস্তবতা হচ্ছে এর ক্ষতিকর দিক নেই এমন না। চাকরী করলে আপনি সপ্তাহে যে ছুটি পান ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সেই সুযোগ হারাবেন। অন্যান্য যে সমস্যাগুলি তৈরী হয় সেগুলি নিয়ে বেশকিছু লেখা রয়েছে বাংলা টিউটর সাইটে।

No comments:

Post a Comment