ফ্রিল্যান্সিং
এর শুরুটাই সবচেয়ে কঠিন। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে যখন এত আলোচনা চলছে এবং অনেকেই
একে পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন তখন কোন বিষয়কে বেছে নেবেন সেটাও অনেকের
কাছে বড় প্রশ্ন। অমুক ধরনের কাজে আয় বেশি, এধরনের তথ্য অনুসরন করে সেদিকে কাজের
চেষ্টা করছেন। সফল না হয়ে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়কেই দোষারোপ করছেন।
যারা নির্দিস্ট
কোন কাজের সাথে পেশাগতভাবে জরিত নন তাদের সিদ্ধান্ত নেয়া বেশি কঠিন। নির্দিষ্ট
কাজে অভিজ্ঞতা না থাকার তাদের কাছে সব বিষয়ই মোটামুটি সমান। অনেকে ভুল করে ভেবে
বসেন যে কোনটাতে হাত দিলেই একসময় ভালকিছু করা যাবে। স্থানীয়ভাবে কাজের সুযোগ কম
থাকা একটি কারন, বাস্তবমুখি শিক্ষার সুযোগ না থাকাও একটি বড় কারন।
কোন বিষয়
নির্বাচনের সময় কোনদিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন সে সম্পর্কে আলোকপাত করার হচ্ছে এখানে।
প্রথমে বলে
নেয়া ভাল, ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং এর সবচেয়ে দামী কাজ প্রোগ্রামিং। যদি
প্রোগ্রামিং এর সাথে সম্পর্ক আছে এমন বিষয়ে পড়াশোনা না থাকে তাহলে একে হিসেব থেকে
বাদ দেয়াই ভাল। যদিও ব্যক্তিগতভাবে এমন আন্তর্জাতিক প্রতিস্ঠানের প্রোগ্রাম দেখার
সুযোগ হয়েছে যিনি নিজের চেষ্টায় প্রোগ্রামার হয়েছেণ। এটা ব্যতিক্রম।
ওয়েব ডিজাইন
ফ্রিল্যান্সিং
সাইটগুলিতে কাজের তালিকা দেখলে দেখা যাবে বড় একটি অংশ ওয়েব ডিজাইনের। এখানেও
এইচটিএমএল, জাভাস্ক্রিপ্ট, পিএইচপি ইত্যাদি কোড ব্যবহার করতে হলেও সাধারনভাবে
প্রোগ্রামিং থেকে সহজ। শিক্ষিত কারো পক্ষে চেষ্টা করলে শেখা সম্ভব। ভাল করা সম্ভব।
বাস্তবে একজন একটিমাত্র সাইট বিশ্লেষন করে ওয়েব ডিজাইনের কাজ করতে পারেন। বিশেষ
কোন কাজে কোড প্রয়োজন হলে ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। ভিজ্যুয়াল ডিজাইনের জন্য রয়েছে
ড্রিমওয়েভার সহ বহু সফটঅয়্যার।
ওয়েব ডিজাইনকে
বেছে নেয়ার আগে একটি ওয়েবসাইটের কোডগুলি ভালভাবে দেখে নিন। এর পুরোটা লেখা প্রয়োজন
না হলেও আপনাকে বুঝতে হবে কোন কোড কি কাজ করে, কখনো কখনো সেখানে পরিবর্তণ করতে
হবে। যদি মনে করেন সেটা করা সম্ভব তাহলে সময় নষ্ট না করে দৈনিক ১ ঘন্টা করে সময়
ব্যয় করুন।
গ্রাফিক ডিজাইন
ফ্রিল্যান্সিং
কাজে গ্রাফিক ডিজাইন কাজের পরিচিতি সবচেয়ে বেশি আলোচিত। ওয়েব সাইটের ভিজুয়াল
ডিজাইন, বিজ্ঞাপন ব্যানার, লোগো, বিজনেস কার্ড, ই-বুকের কাভার, ফ্লাইয়ার ইত্যাদি
সব ধরনের ডিজাইনের কাজের সুযোগ রয়েছে। ডিজাইন বিষয়ে আগ্রহ থাকলে যে কারো পক্ষে
শেখা সম্ভব। শেখার বিষয়ও তুলনামুলক সীমিত, ফটোশপ এবং ইলাষ্ট্রেটর শিখলে সমস্ত কাজ
করা সম্ভব।
সিদ্ধান্ত
নেয়ার ক্ষেত্রে মুল বিষয়, সৃষ্টিশীল বিষয়ে আগ্রহ কতটা যাচাই করা। ভাল একটি ডিজাইন
দেখে যারা অবাক হয়ে ভাবেন কাজটি কিভাবে করা হয়েছে তারা আগ্রহি ধরে নেয়া যায়। আর
ডিজাইন ভাল নাকি মন্দ সেটা নিয়ে যারা মাথা ঘামানোর স্বাভাবিক প্রবনতা যাদের নেই
তাদের জন্য অন্য বিষয় খোজাই ভাল।
ফটোশপ-ইলাষ্ট্রেটরে
যথেস্ট অভিজ্ঞতা লাভ করলে এরসাথে ফ্লাশ এর মত সফটঅয়্যার যোগ করে এনিমেশনের কাজ করা
যেতে পারে।
লেখালেখির কাজ
পরিমানের দিক
থেকে সবচেয়ে বেশি যে কাজ পাওয়া যায়, কিংবা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার যে
কাজ করেন সেটা লেখালেখি। কপিরাইটার, ঘোষ্টরাইটার, রিভিউ রাইটার, ব্লগপোষ্ট রাইটার,
আর্টিকেল রাইটার নানা ধরনের নামে একাজের পরিচিতি। একেবারে সৃষ্টিশীল লেখা থেকে কোন
বিষয়ে রিভিউ লেখা হয়ে একেবারে দায়সারা গোছের ব্লগপোষ্ট লেখা পর্যন্ত সবধরনের লেখার
কাজই করার সুযোগ রয়েছে। অনেকের মুল বক্তব্য, যে কোন বিষয় নিয়ে ব্লপোষ্ট লিখতে হবে
যেখানে বিশেষ কয়েকটি কি-ওয়ার্ড কয়েকবার থাকতে হবে।
লিখতে হয় ইংরেজিতে।
কাজেই প্রধান যে যোগ্যতা প্রয়োজন হয় তা হচ্ছে ইরেজিতে লেখার দক্ষতা। ইচ্ছে করলে এই
দক্ষতা বাড়ানো যায়। ইংরেজির সাথে অন্য কোন ভাষা জানা থাকলে অনুবাদের কাজ পাওয়া
যায়।
বাংলাদেশে কলেজ
পর্যন্ত ইংরেজি শেখানো হয় বাধ্যতামুলকভাবে। ইংরেজি শেখার জন্য প্রতিস্ঠান রয়েছে,
নানা ধরনের বইপত্র রয়েছে। এদিকে আগ্রহ থাকলে কয়েক মাসের চেষ্টায় দক্ষ কপিরাইটার
হওয়া সম্ভব।
ডাটা এন্ট্রি
যদি একেবারেই
সহজ কাজ করতে হয় তাহলে দেখে দেখে টাইপ করার কাজ বা ডাটা এন্ট্রি পছন্দ হতে পারে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট পিডিএফ ফরম্যাটের ডকুমেন্ট দেন, তাকে ওয়ার্ড ডকুমেন্ট
হিসেবে টাইপ করতে হয়। কখনো কখনো এক্সেল বা এক্সেস ডাটাবেজের চাহিদাও থাকতে পারে।
ডাটা এন্টি
কাজের জন্য ওয়ার্ড শেখাই যথেষ্ট। সেইসাথে দ্রুত এবং নির্ভুল টাইপিং এর দক্ষতা
প্রয়োজন। যেহেতু ইংরেজি টাইপ করতে হয় এবং যোগাযোগ ইংরেজিতে করতে হয় সেহেতু
ইংরেজিতে কিছুটা দক্ষতা প্রয়োজন হয়।
এগুলি
ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলির মুল কয়েকটি ভাগ। কিংবা সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাগ বলা যেতে পারে।
বাস্তবে ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলিতে পাওয়া যায় না এমন কাজ নেই। সেখানে কয়েকদিন চোখ বুলিয়ে ধারনা পাওয়া সম্ভব
কার জন্য কোন কাজ বেশি উপযোগি।
আগের কথা আরেকবার
উল্লেখ করতে হচ্ছে। শুরু করাটাই সবচেয়ে কঠিন। কাজের জন্য চেষ্টা করলে সাথেসাথে কাজ
পাবেন এমন কথা নেই। প্রথম কাজ পাওয়ার জন্য কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। প্রতিবার
কাজের চেষ্টা করার পাশাপাশি নিজের কোথায় ভুল হচ্ছে খোজ করা, দক্ষতার কতটা উন্নতি
হচ্ছে সেদিকে দৃষ্টি রাখা এই নিয়মে খুব দ্রুতই দক্ষ ফ্রিল্যান্সারে পরিনত হওয়া
সম্ভব।
কনফুসিয়াসের
একটি বিখ্যাত উক্তি, গন্তব্য যত দুরই হোক চলতে থাকলে একসময় পথ শেষ হয়।
চলতে শুরু করা
এবং চলতে থাকাই গুরুত্বপুর্ন।
Bid kora beparta amar kache besh jotil o biroktikor mone hoy...:(
ReplyDeleteEtto gulo bid er modhe amar bid ta accept korar somvabona koto tuku?
বিড করার বিষয় আসলেই বিরক্তিকর, কিন্তু না করে উপায় নেই। যাদের নামের পাশে আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তারা প্রাধান্য পায়। সেজন্য শুরুতে কাজ পাওয়া কষ্টকর। বলা হয় প্রথম কাজ পাওয়ার জন্য ২-৩ মাস চেষ্টা করতে হতে পারে।
Deleteপ্রথম কাজ পাওয়ার জন্য সহজ কাজ কম টাকায় করতে চেষ্টা করুন। আগেই কাজ করে নমুনা আপলোড করুন।