Sunday, May 6, 2012

Foreign Exchange Market বা Forex বা FX পরিচিতি


Foreign Exchange Market বা Forex বা FX বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুদ্রাবাজার। প্রতিদিন এখানে গড়ে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থ হাতবদল হয়। পরিমানের দিক থেকে আমেরিকার সবগুলি শেয়ারবাজার এর পরিমান থেকে ৩০ গুনেরও বেশি।
অন্যান্য মুদ্রাবাজারের মত ফোরেক্স এর নির্দিষ্ট ভৌগলিক অবস্থান নেই।  যে কোন যায়গা থেকে ২৪ ঘন্টা এটা ব্যবহার করা যায়।  দিনের হিসেবে এটা শুরু হয় সিডনিতে এরপর টোকিও, লন্ডন, নিউ ইয়র্ক এভাবে পুরো পৃথিবীতে অবস্থান করে।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ যে কোন দেশ থেকে এতে অংশ নিতে পারেন।  ইন্টারনেটে আয়ের পদ্ধতি হিসেবে অনেকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এই বিষয়ে। ঢাকা শহরে ফোরেক্স শেখানোর বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছে। একজন ভিজিটরের আগ্রহে ফোরেক্স এর পরিচিতি তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
ফোরেক্স কে শেয়ার বাজারের সাথে তুলনা করা সবচেয়ে সুবিধেজনক। আপনি সুবিধেজনক সময়ে শেয়ার কিনবেন, দাম বাড়লে বিক্রি করবেন এবং লাভ করবেন। ফোরেক্স এর ক্ষেত্রে কেনা-বেচার বিষয়টি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা।
বাস্তব উদাহরন দিয়ে দেখা যাক। আপনার মনে হল ইউরোর বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে পারে। আপনি কিছু ডলার কিনলেন। বাস্তবে যখন ডলারের দাম বাড়ল তখন বিক্রি করলেন। ফলে যে পরিমান বৃদ্ধি হয়েছে সেটা আপনি পেলেন লাভ হিসেবে। মুদ্রার মুল্য হ্রাসবৃদ্ধির ঘটনা প্রতি মুহুর্তে ঘটে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি সব ধরনের কারনে এটা ঘটে। যারা অভিজ্ঞ তারা কোন বিশেষ ঘটনার সাথে সাথে বুঝে যান মুদ্রাবাজারে এর কি প্রভাব পড়তে পারে। সেই হিসেবে ব্যবসা করেন। নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে সেই মুহুর্তের মুদ্রার হার প্রচার করা হয়।
ফোরেক্স বাজারে মুদ্রার হিসেবে সবসময়ই দুটি মুদ্রার। যেমন ডলার-ইয়েন, কিংবা ডলার-ইউরো। একটির তুলনায় অন্যদির পরিমান কত। প্রথমে যাকে উল্লেখ করা হয় সেটা কেনা হয়।
অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের মত এখানেও বিড (bid) বা আস্ক (ask) করতে হয়। এই মুহুর্তে কোন মুদ্রার দাম কত জেনে সেটা কোন আগ্রহ দেখাতে পারেন।  বিড হচ্ছে আপনি যে দামে বিক্রি আপনি বিক্রি করতে পারেন, আর আস্ক হচ্ছে যে দামে আপনি কিনতে পারেন। দুইয়ের পার্থক্যকে বলে Spread. এটাই মুলত লাভ-লোকসানের পরিমান।
সরলভাবে বিষয়টি দেখা যাক, আপনি কিভাবে একে কাজে লাগাতে পারেন ?
শেয়ার ব্যবসায় যেমন ব্রোকার থাকে এখানেও কোন ব্রোকারের মাধ্যমে আপনি এই ব্যবসা করতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এধরনের প্রতিস্ঠানগুলি বিনা খরচে সদস্য হওয়া যায়। ইন্টারনেটে বহু বিজ্ঞাপন হয়ত দেখে থাকবেন। অনেক প্রতিস্ঠান তাদের সদস্য হওয়ার সাথে সাথে সদস্যদের নামে কিছু টাকা জমা দেয় (ধরুন ১০০ ডলার)। অন্যদের সদস্য করলে সেজন্যও টাকা পাওয়া যায়। শুরুতেই যেকথা বলা হয় না (যদি আপনার জানা না থাকে) তা হচ্ছে আপনাকে মুল ব্যবসার জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। এই বিনিয়োগের পরিমান অনেক বেশি। শুধুমাত্র প্লাটিনাম মেম্বারশিপের জন্য হয়ত শুরুতে লক্ষ ডলার জমা দিতে হবে। সবচেয়ে কম সিলভার মেম্বারশিপের জন্য হয়ত ২ থেকে ৫ হাজার ডলার। এরপর সিলভার মেম্বার সেই অর্থের ৫০ গুন পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন, সেগুলি ছোট ছোট স্প্রেডে বিভক্ত হতে পারে। প্লাটিনাম মেম্বার করতে পারেন ১০০ গুন।
বিষয়টি হয়ত এরই মধ্যে জটিল মনে হচ্ছে। বাস্তবে শেয়ার বাজারের চেয়েও ফোরেক্স বাজার অনেক বেশি জটিল। যে বিষয়গুলির ওপর মুদ্রার দাম ওঠানামা করে সেগুলি জানা, ব্যবহারিক পদ্ধতির নানা নিয়ম এবং সবচেয়ে বড় বিষয় বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগের ক্ষমতা এগুলি থাকলে তবেই এদিকে দৃষ্টি দেয়া যেতে পারে। শেয়ার বাজারের মত এখানেও লাভ যেমন হতে পারে তেমনি সামান্য ভুলে ক্ষতিও হতে পারে।
বাংলা-টিউটর সাইটে যেসকল বিষয়ে আয়ের পরামর্শ দেয়া হয় তারসাথে ফোরেক্স বেমানান। ব্রেকারদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট না হয়ে ভালভাবে বিষয়টি নেয়াই ভাল। যদি সত্যিকার আগ্রহি হন তাহলে যথেস্ট সময় নিয়ে এই বিষয়ে পড়াশোনা করে তবেই বিনিয়োগ করুন।

No comments:

Post a Comment