ফ্রিল্যান্সিং এর নানা পথ

ফ্রিল্যান্সিং যত জনপ্রিয় হচ্ছে তত নতুন নতুন কাজের পথ খুলে যাচ্ছে।  যারা আগে ফ্রিল্যান্সিং এর কথা ভাবেননি তারাও ভাবছেন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন কি-না।

অন্যান্য বিষয়ের মত এখানেও ভাল এবং মন্দ সবই রয়েছে। এখানে প্রধান কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে।

.          পড়াশোনা শেষ করার পর ফ্রিল্যান্সিং
ভাল দিক
চাকরী খোজার চেয়ে ফ্রিল্যান্সিং দ্রুত শুরু করা যায়। এখানে খোজাখুজির কোন বিষয় নেই, সরাসরি কাজ শুরু করা।
নতুন যারা চাকরীতে ঢোকেন তাদেরকে সাধারনত কম বেতনে কাজ করতেহয়। অনেক সময় নিজের খরচ চালানোর চেয়েও কম আয় করে চলতে হয়। তারা অতিরিক্ত আয়ের পথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
পঢ়শোনা শেষ করার পরই কাজে যোগ দেয়ার সময় একধরনের উতসাহ-উদ্দিপনা থাকে। তাদের পক্ষে ফ্রিল্যান্সিং এ ভাল করার সুযোগ বেশি।
খারাপ দিক
বাস্তবে কাজ করার অভিজ্ঞা না থাকায় প্রতিযোগিতা করা কঠিন হতে পারে।
একই কারনে মনোবলে ঘাটতি থাকতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং কাজে ক্লায়েন্ট ইতস্তত মনোভাব পছন্দ করেন না, দৃঢ় মানসিকতা আশা করেন।
শিক্ষাপ্রতিস্ঠানের মুক্ত পরিবেশের পর হঠাত করে সরাসরি কাজের দায়িত্ব নেয়ার মধ্যে জড়ানো অনেকের জন্য মানসিকভাবে মেনে নেয়া কঠিন হয়। পড়াশোনার সময় শিক্ষক বা অন্য কেউ সমাধান দেবেন এই নিশ্চয়তা থাকে, ফ্রিল্যান্সিং-এ সেটা থাকে না।

.          অন্য কোথাও কাজ করার পর
ভাল দিক
অন্য কাজ থেকে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চ হয়েছে তাকে সরাসরি কাজে লাগিয়ে তারথেকে বাল কিছু করার সুযোগ তৈরী হয়।
কাজ করার সময় যে পরিচিতি তৈরী হয়েছে সেটা ব্যবহার করে কাজ পাওয়া সহজ হয়। অন্তত স্থানীয় ফ্রিল্যান্সিং পুরোপুরি এর ওপর নির্ভর করে হতে পারে।
আগে কাজ করার কারনে আস্থার সমস্যা দুর হয়।
মন্দ দিক
আগে কাজ করার দরুন নতুনদের যে উদ্দিপনা থাকে সেটা কম থাকতে পারে। পুরোপুরি উতসাহ ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং এ ভাল করা কঠিন।
আগে চাকরী করার কারনে একধরনের নিজস্ব পরিবেশ তৈরী, অন্যরা তার ওপর নির্ভর করতে পারেন, সময়ের নির্দিষ্ট ছক তৈরী হতে পারে। সেকারনে ফ্রিল্যান্সিং কিছুটা বেমানান মনে হতে পারে।
নির্দিষ্ট চাকরীতে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করলেই চলে, ফ্রিল্যান্সারকে নানা ধরনের কাজ করতে হয়।

.          পার্ট টাইম ফ্রিল্যান্সিং
অনেকেই অন্য কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেন। এটাই বাস্তবসম্মত মনে করেন। এর সুবিধে হচ্ছে অন্য কাজ যেমন ঠিক রাখা যায় তেমনি নিজের সুবিধেমত সময়ে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়।
সমস্যার দিক হচ্ছে, অনেক সময়ই কাজের চাপ বেড়ে যায়। নিরীক্ষায় দেখা গেছে যারা পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন তাদের অধিকাংশই একসময় ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার হন।

.          চাকরী না থাকা বা চাকরী চলে যাওয়া
চাকরী না পাওয়া সারা বিশ্বেই প্রধান সমস্যা। এদের অনেকে ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে চলে যান। হঠাত করে চাকরী যাওয়া অনেকের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরী করে। তারাও ফ্রিল্যান্সিংকে বিকল্প চাকরী হিসেবে দেখেন। এদের অনেকে আগে কখনো ফ্রিল্যান্সিং এর কথা ভাবেননি, নিতান্ত বাধ্য হয়ে কাজ করেন, অনেকে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টিকে কখনই পছন্দ করেন না।
তাদের সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে কম টাকায় কাজ করা, অর্থসংকট, কাজের পরিবেশ পছন্দ না হওয়া ইত্যাদি।

এই পথগুলির সাথে অবশ্যই স্বাভাবিক ফ্রিল্যান্সিং পথ যোগ করতে পারেন যেখানে কেউ আগ্রহ নিয়ে শুরু করেন, ক্রমেই দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে কাজকে আরো ভালবাসেন। তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা একেবারে নেই একথা বলা ঠিক না। শুরুতে কাজ পাওয়া কঠিন বলে অনেকেই কিছুদিন চেষ্টার পর হতাস হয়ে পড়েন।

যে পথ ধরেই আসুন না কেন ফ্রিল্যান্সিং এর মুলমন্ত্র হচ্ছে ধৈর্য্য ধরে চেষ্টা করা। কয়েক মাস ধরে চেষ্টা করে কাজ না পাওয়ার ঘটনা যদি ঘটে তাকেও স্বাভাবিক মনে করে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। যারা সহজে কাজ পান তারাও একসময় এভাবেই শুরু করেছিলেন একথা মনে রাখা।