Tuesday, July 3, 2012

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য স্থানীয় কাজ কেন প্রয়োজন


বাংলা টিউটর সাইটে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যেভাবে লেখা হয় তাতে অনেকে মনে করতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং কাজটি খুব সহজ। কিছুদিন চেষ্টা করলেই ভাল ফ্রিল্যান্সার হওয়া সম্ভব। কারো কারো ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব অবশ্যই, সবার জন্য হয়ত তত সহজ না।
কিভাবে সম্ভব সেটাই আগে পরিস্কার করে নেয়া ভাল। যিনি একে জীবনের অবলম্বন মনে করে পুরো মনোযোগ দিতে পারেন তারপক্ষে সম্ভব।  প্রয়োজনে রাতের ঘুম বাদ দিয়ে যিনি কম্পিউটারের সামনে থাকতে পারেন তারপক্ষে সম্ভব। ইতিহাসে বহু ব্যক্তি দেখিয়ে গেছেন অসাধ্য বলে কিছু নেই। আরেকজন যদি করতে পারে তাহলে আমিও পারব, এই মানষিকতা থাকলে সম্ভব।
বলা সহজ করা সহজ না, এটা প্রবাদ। এখানেও কথাটি চলে আসে। কিংবা অন্যভাবে বলা যায়, ফ্রিল্যান্সিং দ্রুত শেখার জন্য, কাজ সহজ করার জন্য শুধুমাত্র নিজের চেষ্টার সাথে আরো কিছু করা সম্ভব। স্থানীয় কাজ কিভাবে ফ্রিল্যান্সারের উপকার করতে পারে সে বিষয়ে উল্লেখ করা হচ্ছে এই পোষ্টে। এখানে গ্রাফিক ডিজাইনকে উদাহরন হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। অন্য কাজ হলে মানানসই পরিবর্তন করে নিতে পারেন।


স্থানীয়ভাবে কাজ করলে ফ্রিল্যান্সার যে সুবিধেগুলি পেতে পারেন;
.          অভিজ্ঞতা লাভ
অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। শেখার সময় কোন টুল কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, কি কাজ করা যায় ইত্যাদি শেখার দিকেই দৃষ্টি থাকে। বাস্তব কাজে সেগুলি ব্যবহার না করা পর্যন্ত সেকাজ সত্যিকারের শেখা হয় না। সাধারনভাবে মনে হতে পারে টেক্সট ব্যবহার সহজ কাজ। কোন বিজ্ঞাপন ডিজাইন করার সময় ভাবতে হয় কোথায় কোন ফন্ট মানানসই, মাপ কি হবে, কিভাবে থাকবে। বাস্তব কাজ না করা পর্যন্ত এগুলি শেখা যায় না।
.          ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ
একজন ডিজাইনারকে যদি পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন এমন প্রতিস্ঠানের বিজ্ঞাপন ডিজাইন করতে বলা হয় তাহলে তিনি হয়ত সেখানে সবুজ, ধুসর, বাদামী ইত্যাদি রং (আর্থ কালার) ব্যবহার করবেন। কারন গ্রাফিক ডিজাইনের ব্যাকরন তেমনটাই বলে। কিন্তু যার কাজ তিনি পছন্দ করেন কটকটে রং। ডিজাইনারকে সেটাই করতে হয়। বাস্তবে ক্লায়েন্টের কাজ করলে একসময় দ্রুত বুঝে নেয়া যায় ক্লায়েন্ট কি পছন্দ করেন। ডিজাইনের ব্যাকরনের চেয়ে সেটাই বেশি গুরুত্বপুর্ন।
.          প্রয়োজন অনুযায়ী শেখা
সাধারনভাবে কিছু শেখার সময় নির্দিস্ট কিছু টুল বা কাজ শেখার কথা উল্লেখ করা হয়। অথচ প্রতিটি সফটঅয়্যার তৈরী করা হয় বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে। শুধুমাত্র গ্রাফিক ডিজাইনারই ফটোশপ ব্যবহার করেন এমন না, এই সফটঅয়্যারই ব্যবহার করা হয় এনিমেশন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন, ফটো ষ্টুডিও  থেকে নানা ধরনের কাজে। বাস্তব কাজ করার সময় জানা সম্ভব হয় কি শিখতে বাকি আছে।
.          অর্থ উপার্জন
ফ্রিল্যান্সিং থেকে পর্যাপ্ত আয় আসতে কারো কারো যথেষ্ট সময় লাগতে পারে। নিজের উপার্জন না থাকলে সেই সময়ে নির্ভর করতে হয় অন্যের ওপর। একজন শিক্ষিত, আত্মসন্মানবোধ সম্পন্ন ব্যক্তির কাছে সেটা সবচেয়ে বিব্রতকর অবস্থা। স্থানীয় কাজ করার সময় কাজ করবেন টাকার বিনিময়ে। ফলে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য বেশি সময় প্রয়োজন হলেও সমস্যা মুক্ত থাকা সম্ভব হবে।
.          বিকল্প আয়ের পথ তৈরী
ফ্রিল্যান্সিং এ ভাল সময়
মন্দ সময় বলে একটা কথা আছে। একে বলা হয় ফিষ্ট এবং ফেমিন (ভোজ এবং দুর্ভিক্ষ)। একসময় এত বেশি কাজ পেলেন যা করে শেষ করতে পারছেন না, আরেকসময় আদৌ কোন কাজ নেই। যখন কাজ কম তখন এভাবে নিজের খরচ চালানোর পথ খোলা রাখতে পারেন।

প্রশ্ন হতে পারে কাজ কিভাবে পাবেন। কিংবা কোথায় পাবেন। কোন ধরনের কাজ পাবেন।
খুব সহজে একথার উত্তর দেয়া সম্ভব না। আপনাকেই কাজ খুজে নিতে হবে। পরিচিত সবাইকে জানাতে হবে আপনি ঠিক কি কাজ করেন। সেই মুহুর্তে তাদের হাতে কাজ না থাকুক, যখনই কোন ডিজাইনের কাজের প্রয়োজন হবে তারা যোগাযোগ করবেন। পরিচেত কেউ খোজ করলে তার মাধ্যমে কাজ পাবেন।
সাধারন কিছু কাজের উদাহরন দেখা যাক;
.          পত্র-পত্রিকায় প্রতিদিন অসংখ্য বিজ্ঞাপন ছাপা হয়। এগুলি কাউকে না কাউকে ডিজাইন করতে হয়। এধরনের কাজ খোজ করতে পারেন।
.          যারা ভিডিও/এনিমেশনের কাজ করেন তাদের গ্রাফিক ডিজাইন প্রয়োজন হয়। তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
.          ছাপাখানা কাজের যায়গা। তাদের মাধ্যমে কাজের চেষ্টা করতে পারেন।
.          বর্তমানে সাইনবোর্ড, ব্যানার, ফেষ্টুন, বিলবোর্ড সবকিছুই কম্পিউটারে ডিজাইন করে প্রিন্ট করা হয়। প্রতিটি ব্যবসা প্রতিস্ঠানের এধরনের কিছু কাজ প্রয়োজন হয়। কাজ নিয়ে ডিজাইন নিজে করে প্রিন্ট করিয়ে দিতে পারেন। ডিজাইনের আয় ছাড়াও যোগাযোগের কাজের জন্যও আয় আসতে পারে।

আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, অভিজ্ঞতা, শেখা এবং অর্থ উপার্জন এই লক্ষগুলিকে সামনে রেখে স্থানীয় কাজের চেষ্টা করুন। যত ছোট কাজই হোক, যত কম টাকারই হোক, আপনার মুল লক্ষ্য ফ্রিল্যান্সিং একথা মনে করে সামনে যেতে চেষ্টা করুন।

কিছু বাদ পড়ল কি ? আপনি সেটা উল্লেখ করতে পারেন। কিংবা এসব বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞতার কথা জানাতে পারেন অন্যদের।

1 comment:

  1. যারাই স্থানীয কাজ কর্বেন তাদের অবশ্যই পেশাদারিতের পরিচয় দেয়া প্রয়জন । এখেত্রে পরিচিত কারো কাছ থেকে পারিশ্রমিক দাবি কর্তে সংকোচ ঝেড়ে ফেল্তে হবে ।

    ReplyDelete