গ্রাফিক
ডিজাইনে রং অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি বৈশিষ্ট। কোন কোম্পানী তাদের লেগো সবসময়ই
একই নিখুত রঙে ব্যবহার করতে চান। বাস্তবে কম্পিউটার মনিটর, টিভি বা কাগজে ছাপা রঙের
বৈশিষ্ট আলাদা। ফলে একই রং মনিটরে যেমন দেখা যায় প্রিন্ট করলে তেমন পাওয়া যায় না।
এর সমাধান কাজ
করার সময়ই ঠিক করে নেয়া সেটা কোথায়, কিভাবে ব্যবহার করা হবে।
কখন কোন রং
ব্যবহার করবেন সেবিষয়ে তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
সাধারনভাবে এবং
এই দুটি রং সম্পর্কে কিছু ধারনা সব গ্রাফিক ডিজাইনারের আছে। সাধারন নিয়ম হচ্ছে
ডিসপ্লেতে ব্যবহারের জন্য এবং প্রিন্ট কাজের জন্য কালার প্যালেট ব্যবহার করবেন।
বিষয়টি আরেকটু বিস্তারিত দেখা যাক।
RGB তে
Red, Green, Blue এই তিনটি মুল রং দিয়ে বাকি রংগুলি তৈরী। একে বলা হয় additive color model,
মুলত আলোর বিকিরনের ওপর নির্ভর করে এটা কাজ করে। অন্যদিকে CMYK হচ্ছে subtractive পদ্ধতি।
প্রিন্ট করার জন্য কালি (রং) ব্যবহার করা
হয় তারওপর ভিত্তি করে কাজ করে।
ওয়েবপেজ,
ভিডিও, এনিমেশন ইত্যাদিতে ব্যবহারের সময় RGB এর বিকল্প নেই। এনিমেশন বা ভিডিও সফটঅয়্যারে CMYK ইমেজ ব্যবহার
করা যায় না।
প্রিন্ট কাজের
জন্য অত্যন্ত পরিচিত একটি ব্যবস্থা অফসেট। CMYK (Cyan, Magenta,
Yellow blacK) এই চারটি
রঙের ৪টি প্লেট তৈরী করা হয়, এরপর নির্দিষ্ট রঙের প্লেট ব্যবহার করে সেই রঙে
প্রিন্ট করা হয়। প্রচলিতভাবে একে ৬ রঙা প্রিন্ট বলা হয় অনেক সময়। অর্থাত সমস্ত
রঙকে ৪ভাগে ভাগ করে চারবার প্রিন্ট করা হচ্ছে।
এই পদ্ধতির
সুবিধে হচ্ছে অনেক বেশি রঙের সমারোহ ব্যবহার করা সম্ভব। যেমন ফটোগ্রাফ। বর্তমানে রঙিন
পত্রিকা, লিফলেট ইত্যাদি এভাবেই প্রিন্ট করা হয়।
অসুবিধের দিক
হচ্ছে ৪ রঙের জন্য ৪টি প্লেট তৈরী করতে হয়। প্লেট তৈরী নিজেই খরচেন বিষয়। যদি
অনেকগুলি কপি প্রিন্ট করা হয় তখন খরচ কমে আসে। ধরে নেয়া হয় অফসেট প্রিন্ট করার সময়
অন্তত হাজার কপি প্রিন্ট করা হবে।
এছাড়া একাধিক
রঙের মিশ্রনে নতুন রঙ তৈরী হয় বলে একেবারে নিখুত রঙ পাওয়া যায় না। এর ওপর কালির (রঙ)
মান, প্রিন্টারের মান, অপারেটরের দক্ষতা ইত্যাদির কারনে রঙ হেরফের হয়।
RGB, CMYK এই দুটির
একটিকে অন্যটিতে পরিবর্তন করা যায়। একই ডিজাইন প্রিন্ট এবং ওয়েব দুযায়গায় ব্যবহার
করা হতে পারে। Red, Green, Blue এই ৩টি মৌলিক রঙ বিবেচনা করে এভাবে হিসেব করতে পারেন।
Blue + Green = Cyan
Red + Blue = Magenta
Blue + Red = Yellow
একাধিক রং
মিশ্রনে নতুন রং তৈরী করা হয় বলে অনেক সময় একে প্রসেস কালার বলা হয়।
অফসেট
প্রিন্টের সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখে ব্যবহার করা হয় স্পট কালার বা সলিড কালার। এই
পদ্ধতিতে একাধিক রঙ মিশিয়ে ব্যবহার না করে নির্দিস্ট রংকে সরাসরি ব্যবহার করা হয়।
বিষয়টি কিছুটা
জটিল মনে হতে পারে। প্রিন্টারগুলি এমনভাবে তৈরী যা নির্দিস্ট রং ব্যবহার করতে
পারে। এই রঙের সংখ্যার সীমাবদ্ধতা প্রায় নেই, যে কোন রংই ব্যবহার করতে পারে। চকচকে
সোনালী বা রুপালী পিন্ট এভাবে করা সম্ভব হয়। কালার বুক নামে একধরনের প্রোফাইল থেকে
রং বলে দেয়া যায়। PANTONE, TOYO, DIC, ANPA ইত্যাদি জনপ্রিয় স্পট কালার সিষ্টেম।
সমস্যা হচ্ছে
প্রতিটি রঙের জন্য পৃথক প্লেট প্রয়োজন হয়। বিষয়টি এভাবে দেখতে পারেন, অফসেটে ৪টি
প্লেট ব্যবহার করে যে কোন রং পাওয়া যায়, স্পট কালারে ৪টি প্লেটে নির্দিস্ট ৪টি রং
পাওয়া যায়।
সেকারনে স্পট
কালার ব্যবহারের সময় রঙের হিসেব জরুরী। রং যত বেশি খরচ তত বেশি। সুবিধে হচ্ছে এক
কপি থেকে অন্য কপিতে রঙের পার্থক্য হয় না। অল্প কপি প্রিন্টের সময় বা নিখুত রং
পাওয়ার জন্য স্পট কালার ব্যবহার করা হয়।
কালার সোয়াচ
প্যালেটের নিচের দিকে প্রথম আইকন ব্যবহার করে, বা ফ্লাইআউট মেনু থেকে Open Swatch Library সিলেক্ট
করে লিষ্ট থেকে যে কোন লাইব্রেরী বেছে নিতে পারেন।
লাইব্রেরীতে
স্পট কালার বিশেষভাবে দেখানো হয়। কোন একটি স্পট কালার ব্যবহার করে লক্ষ্য করুন
নিচের ডানদিকের কোন সাদা ত্রিভুজ এবং মাঝখানে একটি কালো ডট রয়েছে। এর অর্থ এটা
স্পট কালার।
লাইব্রেরীতে স্পট
কালারের ওপর ডাবল-ক্লিক করে কালার টাইপ পরিবর্তণ করে একে প্রসের কালারে
(অথবা বিপরীত) পরিনত করতে পারেন। লক্ষ করলে দেখবেন কালার মোড যখন কালার বুক থাকে
তখন পৃথকভাবে রঙের পরিবর্তন করা যায় না।
কখনো কখনো একই
কাজে প্রসেস কালার এবং স্পট কালার দুইই ব্যবহার করা হয়। মনে রাখা প্রয়োজন প্রসেস
কালারের রটি প্লেটের সাথে স্পট কালারের প্রতিটি রঙের জন্য একটি করে প্লেট যোগ হতে
থাকে। ফলে খরচ বাড়তে থাকে।
It is effective.
ReplyDelete