Wednesday, December 19, 2012

ভাইরাল ভিডিও তৈরীর কিছু পরামর্শ


ইউটিউবে ভিডিও প্রচার করে রাতারাতি খ্যাতিলাভ করেছেন এমন উদাহরনের অভাব নেই। কেউ নিজের গান রেকর্ড করে, যারা ভিডিও তৈরীতে আগ্রহি তারা সৃষ্টিশীল ভিডিও তৈরী করে। অনেকে শর্টফিল্ম তৈরী করতে চান, হাত পাকিয়ে একসময় সিনেমা-নাটক বানাতে চান। হয়ত তৈরীও করেছেন কিছু। কোথাও প্রচারের যায়গা পাচ্ছেন না। অনলাইনে প্রকাশ করে প্রচার বাড়াতে পারেন।
অনেকে বলেন বর্তমানে কেউ নিজের চোখে দেখে না। অন্যেরা যা দেখতে বলেন সেটাই দেখেন। কেউ ভাল বললে তাকে বাল বলেন। কোনভাবে পরিচিতি পেলে তার ওপর ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারেন।
কাজেই তাকে প্রচার করুন ইউটিউবের মত যায়গায়। এমনভাবে যেন লোকে সেটা নিয়ে আরোচনা করে। অন্যকে দেখায়। অনেকে একে বলেন ভাইরাল ভিডিও। কম্পিউটার ভাইরাসের মতই একজন থেকে আরেকজনের কাছে যায়।
কাজটি সহজ না। ঠিক কোন কারনগুলির জন্য কোন ভিডিও মানুষ পছন্দ করে বের করা কঠিন। সুখবর হচ্ছে একাজ আপনাকে করতে হবে না, যারা প্রচারনা নিয়ে গবেষনা করেন তারা নির্দিস্ট কিছু বৈশিষ্ট বের করেছেন। তাদের বক্তব্য, এদেরকে সাথর্কভাবে ব্যবহারে করলে আপনিও ভাইরাল ভিডিও তৈরী করতে পারেন।

বিষয়গুলি এখানে তুলে ধরা হচ্ছে। এই পদ্ধতিগুলি ভিডিওমেকার হিসেবে নিজেকে তৈরী করা, ব্যবসায়িক প্রচারনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন যায়গায় কাজে লাগাতে পারেন।

.        বিষয় সহজ রাখুন
ভাইরাল ভিডিওর মুল বৈশিষ্ট যারা হাতে পাবেন তারা অন্যকে দেখাবেন। ভিডিও তৈরীর সময় নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কোন ধরনের ভিডিও হাতে পেলে অন্যকে দেখান। কিংবা নিজে শেষ পর্যন্ত দেখেন।
ভাইরাল ভিডিও প্রধান বৈশিষ্ট এগুলি বোঝা সহজ। সাধারনত ভাইরাল ভিডিওর দৈর্ঘ্য হয় ১৫ সেকেন্ড থেকে ৫ মিনিট। এই সময়ের মধ্যে সহজ কোন বক্তব্য তুলে ধরুন।
.        আকর্ষনীয় বিষয় ব্যবহার করুন
ছোট ভিডিও মানুষ পছন্দ করে কয়েকটি কারনে। সেগুলি দেখতে সুন্দর, মজাদার, ভিন্ন কিছু। সফল ভাইরাল ভিডিও হতে হলে তাকে অবশ্যই ব্যতিক্রমি কিছু হতে হবে। কখনো ব্যতিক্রমি বিষয়, কখনো ভিডিও তৈরীর পদ্ধতি ইত্যাদিতে ব্যতিক্রম দেখানো হয়। ভিডিওর গতি কমিয়ে বা বাড়িয়ে, বিশেষ রং বা ইফেক্ট ব্যবহার করে। যা-ই হোক না কেন, সাধারনভাবে প্রচলিত ভিডিওকে সরাসরি দেখানোর বদলে কোন বক্তব্য বা বিশেষ বৈশিষ্ট থাকা জরুরী।
.        নতুনভাবে মিউজিক ভিডিও তৈরী করুন
গান শুনতে সবাই পছন্দ করে। আপনি একজন বিখ্যাত শিল্পীকে অনুকরন করে ভিডিও তৈরী করলে সেটা অনেকেই পছন্দ করবেন না এটাই স্বাভাবিক। ধরে নেয়া হবে আপনি ব্যর্থভাবে তাকে অনুকরন করার চেষ্টা করছেন।
প্যারোডিকে এখানে উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনি বিখ্যাত শিল্পীকে অনুকরন করছেন না, তকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করছেন। এই নিয়মে পরিচিত কোন মিউজিক নিজের মত করে ব্যবহার করতে পারেন। 
.        ভীতিকর ভিডিও সহজে জনপ্রিয় হয়
কেউ হরর মুভি দেখতে পছন্দ করেন, কেউ এড়িয়ে চলেন। তারপরও একটা বিষয়ে মিল রয়েছে, যারা হরর মুভি দেখেন না তারাও ভীতিকর ঘটনার ভিডিও দেখেন।
ভাইরাল ভিডিওর মুল লক্ষ সবসময়ই হাস্যকর কিছু। সবসময় সেটা সম্ভব হয় না। তারই বিকল্প হিসেবে ভীতিকর ভিডিও ব্যবহার করে সফল হওয়া সম্ভব।
.        ষ্টান্ট ভিডিও তৈরী করুন
ষ্টান্ট কি নতুনভাবে হয়ত বলা প্রয়োজন নেই। সিনেমার নায়ক গাড়ির ওপর দিয়ে মোটর সাইকেল চালালেন এমন দৃশ্যের সময় নায়ক নিজে মোটর সাইকেল চালান না। একাজে দক্ষ কেউ তার হয়ে কাজটি করেন। তিনিই ষ্ট্যান্ট।
জনপ্রিয় ভিডিওর তালিকার ষ্ট্যান্ট বিষয়টি শুরুর দিকে। ঝুকিপুর্ন কোন দৃশ্য কিভাবে তৈরী করা হয়েছে মানুষ জাতে আগ্রহি। এধরনের কোন বিষয় নিয়ে ভাইরাল ভিডিও তৈরী হতে পারে। অন্য কথায়, কোনকিছু সরাসরি যেভাবে দেখা যায় এবং এর পেছনের যা দেখা যায় না এই দুটির সমম্বয় নিয়ে ভিডিও তৈরী করলে জনপ্রিয় হওয়া সম্ভব।
.        মতামতের ভিডিও ব্যবহার করুন
অনলাইনে কোন খবর যতটা আকর্ষনীয়, অনেকের কাছে সেই খবরের ওপর পাঠকের মন্তব্য তারচেয়েও বেশি আকর্ষনীয়। অনেকে ব্লগের পোষ্ট যতটা মনোযোগ দিয়ে পড়েন তারচেয়েও বেশি মনোযোগ দেন সেই পোষ্টের বিষয়ে মন্তব্য পড়ার দিকে।
একে ভিডিও তৈরীতে কাজে লাগানো যায়। কোন ঘটনা বা বিষয় নিয়ে সাধারনের মন্তব্য নিয়েই জনপ্রিয় ভিডিও হতে পারে।
.        শিশু বা প্রানী যোগ করুন
সত্যজিত রায় বলেছিলেন কোন দৃশ্যে যদি শিশু এবং সাথে অন্য নামকরা অভিনেতা-অভিনেত্রি থাকেন তাহলে দর্শক শিশুর দিকে বেশি মনোযোগ দেন। একথা প্রযোজ্য প্রানীর ক্ষেত্রেও। কুকুর, বিড়াল, পাখি ইত্যাদি পোষা হোক আর বন্যই হোক, আগ্রহ সর্বজনীন। প্রানী বিষয়টি কতটা জনপ্রিয় জানার জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ডিসকভারি কিংবা বিবিসির কথা মনে করতে পারেন। তারা সারা পৃথিবী ঘুরে এসব ভিডিও করেন।
তাদের সমমানের না হোক, আপনি অনায়াসে শিশু কিংবা কোন প্রানীর মজাদার ভিডিও তৈরী করতে পারেন।

সব ভাইরাল ভিডিও হঠাত করে তৈরী হয় একথা মনে করার কারন নেই। অনেক কোম্পানী এর পেছনে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করে। অন্যদিকে একেবারে আনকোড়া কারো ভিডিও বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় হয়েছে এমন উদাহরনও রয়েছে।
যেভাবেই তৈরী হোক না কেন, এদের নির্দিস্ট কিছু বৈশিস্ট রয়েছে। সেদিকে দৃষ্টি দিয়ে আপনি নিজেও তৈরী করতে পারেন ভাইরাল ভিডিও।
কোন ভিডিও একবার ইন্টারনেটে ভাইরাল হলে তাকে নিয়ন্ত্রন করা যায় না। ক্রমাগত ছড়াতে থাকে। নির্মাতা হিসেবে আপনি নিশ্চয়ই কৃতিত্ব আশা করতে পারেন।
ভিডিও সাথে নিজের পরিচিতি দিতে ভুলে যাবেন না। এমনভাবে পরিচিতি প্রকাশ করুন যা আপনার কোন উপকারে আসে।

No comments:

Post a Comment