Tuesday, April 12, 2011

ফ্লাশ এনিমেশন টিউটোরিয়াল : মোশান টুইন এবং সেপ টুইন

টুডি এনিমেশন বা সেল এনিমেশনের সাধারন ধারনা হচ্ছে প্রতিটি ফ্রেম আপনাকে একে নিতে হবে। কাগজে একে স্ক্যান করাই হোক অথবা কম্পিউটারেই আকা হোক। ওয়াল্ট ডিজনি শুরু করেছিলেন হাতে আকা পদ্ধতিতে, বর্তমানে সবকাজই করা হয় কম্পিউটারে।
কম্পিউটারে টুডি এনিমেশনের সুবিধেগুলির একটি নিশ্চয়ই একই ছবিকে বারবার ব্যবহারের সুযোগ। কিন্তু সত্যিকারের সুবিধে হচ্ছে আপনাকে প্রতিটি ফ্রেম আকতে হয় না। একটি বল ওপর থেকে নিচে পড়ছে বিষয়টি ১ সেকেন্ড দেখানোর জন্য আপনার ২৫টি ফ্রেমে (বাংলাদেশের টিভির নিয়মে) ভিন্ন ভিন্ন যায়গায় ছবিটি আকা প্রয়োজন হওয়ার কথা। অথচ এনিমেশন সফটঅয়্যারে দুটি ফ্রেম আকাই যথেষ্ট। প্রথম পফ্রেমে বলটি শুরুতে যেখানে থাকবে সেখানে রাখুন, ২৫ নম্বর ফ্রেমে বলটি যেখানে পীছুবে সেখানে রাখুন। মাঝের ফ্রেমগুলি তৈরী করবে এনিমেশন সফটঅয়্যার। এমনকি এই দুটি কি-ফ্রেমের মাঝখানে কোথাও যদি দিক পরিবর্তন হয়, গতি কম বা বেশি করা প্রয়োজন হয় সেটাও করা যাবে সফটঅয়্যারেই। দুটি কিফ্রেমের মাঝখানের (ইন বিটুইন) ফ্রেমগুলির পরিবর্তনের এই কাজ টুই নামে পরিচিত। ফ্লাশে দুধরনের টুইন রয়েছে। একটি গতি বিষয়ক কাজের জন্য মোশান টুইন, আরেকটি আকার-আকৃতি বিষয়ক কাজের জন্য সেপ টুইন।


মোশান টুইন
মোশান টুইন ফ্লাশের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এনিমেশন পদ্ধতি। একটি উদাহরন দিয়ে মোশান টুইন দেখা যাক।
ছবিতে গাছপালা-মাঠ সহ ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে একটি সুর্য রয়েছে। মোশান টুইন ব্যবহার করে সুর্যকে নিচ থেকে ওপরে ওঠা দেখানো হবে। স্বাভাবিকভাবেই সকালের দৃশ্য।
.          সুর্যকে ষ্টেজে আনুন এবং ১ নম্বর ফ্রেমে যেখানে থাকবে সেখানে পৃথক একটি লেয়ারে রাখুন। যদি একে সিম্বলে পরিনত না করা থাকে তাহলে F8 চাপ দিয়ে সিম্বল তৈরী করুন এবং একটি নাম দিন। এখানে Sun নামে গ্রাফিক সিম্বল তৈরী করা হয়েছে।
.          মোশান টুইন ব্যবহারের কমান্ড টাইমলাইন অথবা ষ্টেজ থেকে ব্যবহার করা যায়। যে কোন পদ্ধতিতেই হোক, সুর্যের ওপর রাইটক্লিক করে সিলেক্ট করুন Create Motion Tween. ফ্লাশ নিজে থেকে ১ সেকেন্ডের মোশান টুইন তৈরী করবে। মোশান টুইন ব্যবহৃত লেয়ারকে নিল রয়ের দেখা যায় (সেপ টুইনকে দেখা যায় সবুজ রঙে)।
.          অন্য লেয়ারগুলি যদি এর সমান না হয়ে তাহলে সেগুলিকে এরসাথে মানানসই করে নিন। উদাহরনে, দ্বিতীয় লেয়ারের জন্য ২৫ নাম্বার ফ্রেম সিলেক্ট করে F5 চাপ দিন। একে যতদুর পর্যন্ত প্রয়োজন ততদুর পর্যন্ত বর্ধিত করতে পারেন নতুন ফ্রেম তৈরী করার কমান্ড F5 দিয়ে।
.          যেখানে সুর্য শেষে অবস্থান করবে সেখানে টাইম স্লাইডার আনুন। কোন লেয়ার সিলেক্ট করা প্রয়োজন নেই।
.          সুর্যকে (অথবা আপনি যাকে এনিমেট করতে চান) ড্রাগ করে নির্দিস্ট যায়গায় সরিয়ে নিন। ফ্লাশ যায়গা পরিবর্তনের এনিমেশনের জন্য একটি কি-ফ্রেম তৈরী করবে। এর গতিপথ একটি ডটেড লাইন সহ দেখা যাবে।
.          এনিমেশনটি প্লে করে দেখুন।

দুটি কিফ্রেমে অথবা এদের মাঝখানে যেকোন সময় আরো কিফ্রেম তৈরী করে গতিপথ, ঘুরানো, বড়-ছোট করা, রং পরিবর্তন করা ইত্যাদি কাজ করা যাবে। সুর্যকে হাল্কা রং থেকে ক্রমে উজ্জল দেখানোর জন্য নিচের কাজগুলি করুন;
.          টাইম স্লাইডারকে দুটি কিফ্রেমের মাঝামাঝি কোথাও আনুন।
.          লেয়ারের ওপর রাইট-ক্লিক করে Insert Keyframe – All সিলেক্ট করুন । এরফলে সবধরনের পরিবর্তন করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
.          যে কিফ্রেমে পরিবর্তন করতে চান সেটা সিলেক্ট করুন।
.          প্রোপার্টিজ প্যানেলে কালার ইফেক্ট অপশনে রং, উজ্জলতা, ট্রান্সপারেন্সি ইত্যাদি পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন।

উদাহরনের মত একটি সুর্যকে সরাসরি এক যায়গা থেকে আরেক যায়গায় নিতে পারেন, আবার যদি সুর্যের চারিদিকে এনিমেশন ব্যবহার করতে চান তাহলে সুর্যের সিম্বলে ডাবল-ক্লিক করে ওপেন করুন। সেখানে এনিমেশনের কাজ করে নিন। মোশান টুইন এনিমেটেড সিম্বলকে ব্যবহার করতে পারে। হেটে যাওয়া মানুষের চুল এনিমেট করতে পারেন এই পদ্ধতিতে।


সেপ টুইন
মোশান টুইন ব্যবহার করা যায় যে কোন ধরনের অবজেক্টে বা সিম্বলে। সেপ টুইনোর জন্য এই নিয়ম নির্দিষ্ট, তাকে অবশ্যই একটি ভেক্টর সেপ হতে হবে। সিম্বল কিংবা গ্রুপ ব্যবহার করা যাবে না। সাধারন মুখকে হাসিমুখে পরিবর্তনের জন্য শুধুমাত্র ঠোটকে পরিবর্তনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন সেপ টুইন, পুরো মুখের ছরি একটি থেকে আরেকটিতে যেতে পারেন না।
.          উদাহরনের ছবির মত একটি সেপ তৈরী করুন।
.          সুবিধেজনক দুরত্বে আরেকটি কিফ্রেম তৈরী করুন।
.          আগের মত একই পদ্ধতিতে রাইট-ক্লিক করে Create Shape Tween সিলেক্ট করুন।
.          পরবর্তী কিফ্রেমে সেপের পরিবর্তন করুন।
.          এনিমেশনটি প্লে করে দেখুন

মোশান টুইন এবং সেপ টুইন, এদেরকে বলতে পারেন টুডি এনিমেশনের বিল্ডিং ব্লক। এদের সমম্বয়েই তৈরী হয় সমস্ত টুডি কার্টুন।

No comments:

Post a Comment