সাইবার কাফে কে কম বিনিয়োগের ব্যবসা বলা যায় কিনা সেনিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। বাংলাদেশে প্রেক্ষিতে অল্প বিনিয়োগের ব্যবসা। গোটাদশেক কম্পিউটার ব্যবহার করে (কখনো কখনো আরো কম) সাইবার কাফে তৈরী করা হয়। অনেক দেশে এই সংখ্যা কয়েকশত। কম্পিউটার বাড়ার সাথেসাথে বড় যায়গা প্রয়োজন হয়, ফলে বিনিয়োগ আরো বাড়ে।
এই ব্যবসা আপনার জন্য সবিধেজনক কিনা যাচাই করে নিন সামান্য হিসেব করে। যদি ১০টি কম্পিউটার দিনে বারো ঘন্টা ব্যবহার হয়, ঘন্টাপ্রতি ১৫ টাকা করে পান তাহলে প্রতি ঘন্টায় আপনার আয় ১৫০ টাকা, দিনে সর্ব্বোচ্চ ১৮০০ টাকা। একে কি যথেস্ট মনে হচ্ছে ?
নিষ্চয়ই না। যায়গার খরচ, অন্যান্য খরচ বাদ দিলে লাভ একেবারে সামান্য। তারপরও, ধরে নেয়া হয়েছে আপনার প্রতিটি কম্পিউটার সবসময় ব্যস্ত থাকে। বাস্তবে সেটা নাও হতে পারে।
কাজেই, সাইবার কাফে লাভজনক করতে আপনার প্রয়োজনী বেশি কম্পিউটার, বড় যায়গা, দ্রুতগতির ইন্টারনেট এবং অন্যান্য সুযোগ। যদি সেগুলি করা সম্ভব হয় তাহলে এটা লাভজনক তাতে সন্দেহ নেই।
সাইবার কাফে কারা ব্যবহার করেন
সাইবার কাফে বা ইন্টারনেট কাফে হচ্ছে একটি যায়গা যেখানে কেউ অর্থ দিয়ে সময় হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পান। সেটা ব্যবহার করেন কে এটা খুব গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন।
মুলত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সীমিত। অনেকেরই আদৌ ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যবস্থা নেই। কাজেই ক্লায়েন্ট উন্নয়নশীল দেশে বেশি। যারা নিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদেরকেও বিশেষ কাজে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়। কিছু আপলোড-ডাউনলোড করা, কোন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা ইত্যাদি প্রয়োজন ক্রমশই বাড়ছে।
অনেক দেশেই ইন্টারনেট কাফেগুলির বড় ধরনের ব্যবহারকারী যারা অনলাইনে গেম খেলেন। এজন্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রয়োজন হয় যার ব্যবস্থা করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না।
কিভাবে পরিচালনা করবেন
সাইবার কাফে পরিচালনা করার জন্য বিশেষ কোন দক্ষতা প্রয়োজন হয় না। যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন তারা নিজেরাই নিজের কাজ করেন। কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক ঠিক আছে এই নিশ্চয়তা দেয়াই যথেষ্ট।
কোন বিষয়ে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন
কেই যায়গায় যখন অনেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তখন সেখানে বেশকিছু নিয়ম মানা প্রয়োজন হয়। একদিকে কোন ব্যক্তি যখন ব্যক্তিগত কাজ করবেন তখন অন্য কেউ যেন সেখানে উকি না দেন সেটা নিশ্চিত করা, অন্যদিকে তাকে পুরোপুরি চোখের আড়ালে না করা। অবশ্য সবাই এধরনের গোপনীয়তার প্রয়োজনবোধ করেন এমন না। বড় ধরনের সাইবার কাফেতে এজন্য সামান্য কিছু ব্যবস্থা থাকে, বাকিরা এনিয়ে মাথা ঘামান না।
সাধারনভাবে সাইবার কাফেতে এমনভাবে পার্টিশন দেয়া হয় যেন কাজ করার সময় অন্য কেউ মনিটর দেখার সুযোগ না পান। বাকি অংশ খোলা রাখার নিয়ম। অনেকে গোপনীয়তার কারন দেখিয়ে পুরোপুরি ঘেরা যায়গা ব্যবহার করেন, এটা আইনবিরোধী।
ব্যবহারকারী যেন ভাইরাসের আক্রমনের শিকার না হন এজন্য এন্টিভাইরাস ব্যবহার জরুরী। কাজের সময় বিদ্যুত সমস্যা না হওয়ার ব্যবস্থা রাখা জরুরী। ব্যবহারকারী কিছু ডাউনলোড করে ফ্লাশড্রাইভ বা সিডিতে কপি করে নিতে চাইতে পারেন, সে ব্যবস্থা রাখা জরুরী। কারো প্রিন্ট করা প্রয়োজন হলে প্রিন্টার রাখাটাও জরুরী। অর্থাত ব্যবহারকারীর যাকিছু প্রয়োজন সবকিছু ঠিকমত রেখে সেবা দেয়ার ওপরই সাফল্য নির্ভর করে।
লজ্জাজনক হলেও উল্লেখ করা প্রয়োজন, সাইবার কাফেতে চুরি সাধারন ঘটনা। দৃষ্টি না দিলে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, মেমোরী ইত্যাদি খুলে নেয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে। সেদিকেও দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
অন্যান্য আয়ের সম্ভাবনা
সাইবার কাফেতে যেহেতু ইন্টারনেটের সংযোগসহ অনেকগুলি কম্পিউটার থাকে সেহেতু অন্যান্য নানাধরনের কাজ এরসাথে করা সম্ভব। প্রিন্ট, কপি ইত্যাদির পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের ট্রেনিং সহ অন্যান্য ব্যবস্থা রেখে অতিরিক্ত আয় করা যেতে পারে।
No comments:
Post a Comment