Thursday, February 28, 2013

ফ্রিল্যান্সারের পরোক্ষ আয়ের পদ্ধতি



ফ্রিল্যান্সারের নিশ্চিত আয়ের ব্যবস্থা নেই। কাজ করলে আয়, কাজ না পেলে আয় নেই এই নিয়মে চলতে হয়। আর কাজ না পাওয়ার কারনের অভাব নেই। কিংবা বলা যেতে পারে, কোন কারন ছাড়াই কাজ না পেতে পারেন।
এধরনের অবস্থা মোকাবেলা করার সাধারন একটি পদ্ধতি পরোক্ষ আয়। এমন কোন আয় যেখানে আপনাকে সরাসরি কাজ করতে হয় না অথচ নিয়মিত আয় আসতে থাকে।
পরোক্ষ আয় প্যাসিভ ইনকাম একটি বড় বিষয়। শুধুমাত্র এই বিষয় নিয়েই বহু ব্লগ-ওয়েবসাইট রয়েছে। সেখানে নির্দিষ্টভাবে পরোক্ষ আয়ের বৈশিষ্টসমুহ পাওয়া যাবে। সংক্ষেপে পরোক্ষ আয়ের বর্ননা দেয়া যেতে পারে এভাবে;
.        যে কাজগুলি নিয়মিত কাজের মত কাজ করতে হয় না।
হয়ত লক্ষ করেছেন পিটিসি বা ক্লিক করে আয় থেকে শুরু করে এফিলিয়েশন ইত্যাদিকে প্যাসিভ ইনকাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কাজেই এই ক্ষেত্রটিও অনেক বড়।


পরোক্ষ আয়ের জনপ্রিয় কয়েকটি পদ্ধতি এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে;
.        এফিলিয়েট মার্কেটিং
যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং-কে মুল আয় হিসেবে ব্যবহার করেন আপনি যদি তাদের মত না হন তাহলে এভাবে আয়ের জন্য কমপক্ষে একটি ওয়েবসাইট (ব্লগ) তৈরী করতে হবে। কাজটি খুব সহজ। প্রায় সমস্ত ফ্রিল্যান্সার নিজস্ব ওয়েবসাইট রাখেন এবং সেখানে লিংক রেখে আয়ের ব্যবস্থা করেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধে হচ্ছে কমবেশি যাই হোক, নিয়মিত আয় আসতে থাকে।
যদি এখান থেকে আয় বাড়াতে চান তাহলে কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ রাখুন
১. এফিলিয়েট মার্কেটিং এক ধরনের বিক্রি। আপনি শুধুমাত্র প্রচার করে যে আয় করতে পারেন, প্রচারের মাধ্যমে বিক্রি করলে (পন্য বা সেবা) তারথেকে অনেক বেশি আয় করতে পারেন।
২. বেশি আয়ের জন্য বেশি ভিজিটর প্রয়োজন। বেশি ভিজিটর পাওয়র জন্য সাইটে গুরুত্বপুর্ন কিছু রাখা প্রয়োজন।
৩. সব এফিলিয়েশন প্রোগ্রাম একই নিয়মে কাজ করে না। কেউ সাথেসাথে টাকা দেন, কেউ নানাভাবে ধোকা দেন। কোন কারন ছাড়াই কোন এফিলিয়েশন বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।
৪. যার এফিলিয়েশন ব্যবহার করবেন তাদের সবগুলি নিয়ম ঠিকভাবে মেনে চলুন
.        নিজের কাজ বিক্রি
আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যে বিষয়ে কাজ করেন সেই বিষয়ে অনেক কাজ করতে হয় যা সরাসরি ব্যবহৃত হয় না। তাদের মধ্যে থেকে বাছাই করা কাজগুলি বিক্রির ব্যবস্থা করুন। ওয়েব সাইটের থিম, টেম্পলেট থেকে শুরু করে ডিজাইন, লেখা যাই হোক না কেন, সেগুলি বিক্রির চেষ্টা করুন। সরাসরি নিজের সাইট থেকে বিক্রি করতে পারেন অথবা কোন মার্কেটপ্লেসে রেখে বিক্রি করতে পারেন। উদাহরন হিসেবে, ফ্রিল্যান্সার সাইটে এধরনের বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে।
.        ই-বুক তৈরী ও বিক্রি
আপনার পছন্দের বিষয়, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি একসাথে করে ই-বুক তৈরী করে বিক্রির ব্যবস্থা করুন।
বাংলাদেশে ই-বুক বিক্রির প্রচলন তেমন নেই। অনলাইনে কেনাকাটার ব্যবস্থা সহজ না হওয়া পর্যন্ত বিক্রির কাজ কঠিন। কিছু সাইট পাশওয়ার্ড প্রোটেক্টেড ই-বুক ডাউনলোডের জন্য দেয়। পরবর্তীতে টাকা দিয়ে পাশওয়ার্ড নিতে হয়। এধরনের আরো নতুন পদ্ধতি উদ্ধাবন করতে পারেন। এই মুহুর্তে ই-বুকের তেমন চাহিদা না থাকলেও একসময় এটা বড় বানিজ্যে পরিনত হবে এটা নিশ্চিত।
ই-বুক তৈরীর কাজ সময় এবং শ্রমসাপেক্ষ। একে সহজ ধরে নেবেন না। বিক্রির জন্য তৈরী ইবুক এর জন্য ভালভাবে পরিকল্পনা করে কাজ করুন।
ই-বুকের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা খুব বেশি। অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে হলে মান ভাল রাখা জরুরী। এছাড়া প্রচারের ব্যবস্থাও গুরুত্বপুর্ন।
অনেক ফ্রিল্যান্সারের জন্য সুবিধেজনক হলেও ই-বুক তৈরী এবং বিক্রি করে নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করা অনেকের জন্যই কঠিন।
অনেকে জনপ্রিয় ইবুক অন্যের মাধ্যমে বিক্রি করেন (এফিলিয়েশন)।

অনেকে এই পদ্ধতিগুলিকে ভাল ফল পেয়ে একেই মুল আয়ের ব্যবস্থায় পরিনত করেন। বাস্তবতা হচ্ছে, এফিলিয়েশন থেকে লক্ষ ডলার আয়ের উদাহরন বিশ্বে থাকলেও বাংলাদেশে নেই। গুগল এডসেন্স থেকে আয়ের যে কথাগুলি বলা হয় সেগুলি বিশেষ কয়েকটি দেশের জন্য বেশি প্রযোজ্য। এদেরকে মুল আয় হিসেবে বিবেচনা না করে আপাতত পরোক্ষ আয় হিসেবে বিবেচনা করাই ভাল।

No comments:

Post a Comment