Monday, March 28, 2011

প্রযুক্তি ব্যবহার করে আয় : বাংলা ই-বুক প্রকাশনা ও বিক্রি

ই-বুকের ব্যবহার এবং জনপ্রিয়তা যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, ই-বুক পড়ার ব্যবস্থা যেমন হাতের নাগালে আসছে তেমনি বিপরীতভাবে ছাপা বইয়ের চাহিদা কমছে। সারা বিশ্বেরই মানুষ ঝুকছে ই-বুকের দিকে। অধিকাংশ দামী মোবাইল ফোনে ই-বুক পড়া যায়। কারনটাও বোধগম্য। বই ছাপার যা খরচ সেটা এখানে নেই। চাররঙা উচু মানের প্রিন্ট বলুন আর সাদা-কালো সাধারন বই বলুন, ইবুক তৈরীর খরচ একই। শুধুমাত্র সফটঅয়্যার ব্যবহার। চাইলে সাথে শব্দ কিংবা ভিডিও ব্যবহারের সুযোগ। লেখক নিজেই প্রকাশক হতে পারেন, নিজেই ছেপে যতখুশি বিক্রি করতে পারেন। খরচ কম বলে দামও কম। ফলে ক্রেতা-পাঠকও খুশি।
বলা হচ্ছে সারা বিশ্বের কথা, বাংলাদেশ বাদ দিয়ে। কারন বাংলাভাষায় ইবুকের প্রচলন শুরু হয়নি, এমনকি এনিয়ে কেউ কথাবার্তাও বলেন না। কেন বলেন না সেটাও বোধযোগ্য। পাইরেসি।
সফটঅয়্যার পাইরেসিতে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা ৩ এর মধ্যে। সাধারন ছাপা বই পাইরেসি হয়। এবিষয়ে এতটাই কুখ্যাতি সৃষ্টি হয়েছে যে ভারতের জনপ্রিয় লেখকরা তাদের বই বাংলাদেশে বিক্রি করতে বাধা দেন। তাদের আশংকা, এককপি যদি পাইরেট প্রকাশকের হাতে যায় তাহলেই হাজার হাজার কপি হয়ে বিক্রি হবে। সেটা হচ্ছেও।
ছাপা বইয়ের হিসেবটা এমন, ছাপার জন্য কাগজ, ছাপাখানার খরচ, বাধাইয়ের খরচ ইত্যাদি রয়েছে। বেশ লোকজন প্রয়োজন। কাজেই পাইরেসির জন্যও খরচটা খুব কম না। অন্যদিকে সেটা যদি ই-বুক হয় তাহলে তো কথাই নেই। কম্পিউটার ফাইল কপি করার মতই সহজ। যতখুশি কপি করুন।
কাজেই মুল সমস্যা ওই পাইরেসি। এককপি মানুষের হাতে গেলে বিক্রি শেষ। কাজেই বিক্রির জন্য বাংলা ই-বুক এখনও স্বপ্ন।
অন্যরা কিভাবে ব্যবসা করছে জানার আগে একটু দেখে নেয়া যাক এই সমস্যা দুর করার জন্য কি কি করা প্রয়োজন।
.          নিয়মের বাইরে ফাইল বিতরন, পাশওয়ার্ড বিতরন ইত্যাদি বন্ধ করা।
.          ডকুমেন্ট অবৈধ কপি করার বন্ধ করা
.          অবৈধভাবে প্রিন্ট করা বন্ধ করা
.          ব্যবহার সহজ রাখা। বৈধ ব্যবহারকারী যেন হয়রানীর শিকার না হন সেদিকে লক্ষ রাখা।

যদি পিডিএফ ফরম্যাট হয় তাহলে এডবি এক্রোব্যাট ব্যবহার করে যা করা যায় তা হচ্ছে,
.          পাশওয়ার্ড ব্যবহার করা। সেটা না জানলে ডকুমেন্ট ওপেন করা যাবে না।
.          প্রিন্ট বন্ধ করা। ডকুমেন্ট পড়া গেলেও প্রিন্ট করা যাবে না।
(পিডিএফ ছাড়াও টেক্সট ফরম্যাটে ই-বুকের প্রচলন রয়েছে। এজন্য বিশেষ সফটঅয়্যার ব্যবহার করা হয়।) সমস্যা হচ্ছে কেউ যদি ডকুমেন্টের সাথে পাশওয়ার্ডটিও দিয়ে দেয় তাহলে কি করার থাকে ? সেটা না থাকলেও পাশওয়ার্ড ভাঙা যায়। সেটাই বা বন্ধ করবেন কিভাবে ?

যারা ই-বুকের ব্যবসা করছেন তারা কিভাবে কাজটি করেন জেনে নেয়া যাক।
প্রতিটি ডকুমেন্টের জন্য নির্দিস্ট একটি পাশওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়। সেই পাশওয়ার্ড সেই নির্দিষ্ট কম্পিউটারভিত্তিক।  ব্যবহারকারীকে যা করতে হয় তা হচ্ছে,
.          ই-বুক কেনা (অথবা অন্য যা নিয়ম আছে সেটা মেনে সম্মতি দেয়া)। এরফলে তিনি নির্দিস্ট ই-বুক ডাউনলোড করার লিংক পাবেন। সেইসাথে একটি পাশওয়ার্ড।
.          যখন তিনি প্রথমবার সেটি ওপেন করবেন তখন সেই পাশওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। সাথেসাথে পাশওয়ার্ডটি সার্ভারে জানিয়ে দেবে সেটি ব্যবহার করা হয়েছে।
.          ইবুক কপি করে অপরজনকে দিলে তিনি ওপেন করতে গেলে পাশওয়ার্ড চাইবে। যেহেতু পাশওয়ার্ডটি আগেই ব্যবহার করা হয়েছে সেহেতু সেটি আর কাজ করবে না। ফলে যত খুশি কপি করা যাবে কিন্তু ব্যবহার করা যাবে না।

এসব কাজের জন্য সফটঅয়্যার কিনতে পাওয়া যায়। কাজেই আপনি যদি বাংলা ই-বুকের প্রকাশক হয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে তৈরী করে নিতে হবে এমন কথা নেই। ছাপানো বইয়ের তুলনায় বিনিয়োগ সামান্য, প্রয়োজন শুধু উদ্দোগ নেয়া। আপনি এক্ষেত্রে অগ্রনী ভুমিকা রাখতে পারেন।
প্রকাশন এবং বিক্রেতা হিসেবে এজন্য আপনাকে যা করতে হবে;
.          লেখকের সাথে চুক্তি করে বই নেয়া
.          আকর্ষনীয়ভাবে বই তৈরী করা
.          প্রোটেকশনের সফটঅয়্যার ব্যবহার করা
.          অনলাইনে প্রচার এবং বিক্রি শুরু করা।

No comments:

Post a Comment