Monday, March 28, 2011

ফটোশপ টিউটোরিয়াল : বিটম্যাপ বনাম ভেক্টর, ফটোশপ বনাম ইলাষ্ট্রেটর

ফটোশপ ব্যবহারের আগে প্রয়োজনীয় কিছু তাত্ত্বিক বিষয় জেনে নিন। কম্পিউটারে  যে ইমেজগুলি আমরা দেখে থাকি সেগুলি দুধরনের হয়, বিটম্যাপ এবং ভেক্টর। ফটোশপ কাজ করে বিটম্যাপ ইমেজ নিয়ে অন্যদিকে ইলাষ্ট্রেটর, কোরেল ড্র ইত্যাদি সফটঅয়্যার কাজ করে ভেক্টর নিয়ে। বিটম্যাপকে রঙতুলি দিয়ে আকা ছবি এবং ভেক্টরকে পেনসিলে আকা ছবির সাথে তুলনা করতে পারেন (যদিও পার্থক্য রয়েছে অনেক বিষয়ে)। সরল ভাষায় বিটম্যাপে একটি দাগ দেয়ার পর আপনি সেটা পরিবর্তন করতে পারেন না, ভেক্টরে তাকে বাকানো থেকে শুরু করে সবধরনের পরিবর্তন করা যায়।
বিটম্যাপ ছবি তৈরী হয় পিক্সেল নামের ছোট ছোট ডট দিয়ে। খবরের কাগজের ছবি ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন সেগুলিও ছোট ছোট ডট দিয়ে তৈরী। ডটের ঘনত্ব কম হলে সেগুলি দেখা যায়, বেশি হলে ডট বোঝা যায় না। এই ঘনত্ব যত বেশি ছবির মান তত ভাল।
কম্পিউটার মনিটর কিংবা অন্য যে কোন ডিসপ্লেতে ছবির মাপ হিসেব করা হয় পিক্সেল দিয়ে। আপনার মনিটরের রেজুলুশন যদি ১০২৪-৭৬৮ হয় তাহলে  ১০২৪-৭৬৮ পিক্সেলের একটি ছবি ১০০% ভিউতে পুরো স্ক্রিন জুড়ে থাকবে। প্রিন্টের সময় হিসেব করা হয় ইঞ্চি অথবা সেন্টিমিটারে। ফটোশপে যে কোনটি হিসেব করে ছবির মাপ ঠিক করা যায়, যদিও মনিটরে সবসময়ই দেখা যাবে পিক্সেল হিসেবে।
ফটোশপের নিজস্ব ফাইল ফরম্যাপ PSD (ফটোশপ ডকুমেন্ট)। অর্থাত সরাসরি সেভ কমান্ড দিলে এই ফরম্যাটে সেভ হবে। এই ফরম্যাটে সবচেয়ে ভাল মান পাওয়া যায়। অসুবিধে হচ্ছে এটা ব্যবহারের জন্য ফটোশপই প্রয়োজন হয় এবং ফাইল সাইজ খুব বড় হয়।
সব যায়গায় ব্যবহারের জন্য সাধারন ফরম্যাট জেপেগ (JPG, JPEG)। এতে ফাইলসাইজ সুবিধেমত ছোট করা যায়। অন্য কম্পিউটার, ওয়েব, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদির জন্য উপযোগি। সেভ এ্যাজ কমান্ড দিয়ে এই ফরম্যাটে সেভ করতে হয়।
জেপেগ ফরম্যাটে ছবির মান নষ্ট হয় বলে প্রিন্টের জন্য ব্যবহার করা হয় না। ফটোশপের করা ডিজাইন যদি প্রিন্টের জন্য দিতে হয় তাহলে সরাসরি ফটোশপ অথবা TIFF অথবা অন্য কোন সুবিধেজনক ফরম্যাট ব্যবহার করুন।
বিটম্যাপে ফটোগ্রাফের মত নানারঙা ছবি পাওয়া যায় যা ভেক্টর ফরম্যাটে পাওয়া যায় না। অন্যদিকে বিটম্যাপের সমস্যা হচ্ছে বড় করলে ভেঙে যায় (প্রচলিত ভাষায় ছবি ফেটে যাওয়া)। ভেক্টরে সেটা হয় না। যত বড়ই করা হোক না কেন, মান একই থাকে। একাজে সহায়তা করার জন্য এডবির ভেক্টর ভিত্তিক সফটঅয়্যার ইলাষ্ট্রেটর ব্যবহার করা হয়।
বাস্তব উদাহরন দেখা যাক। আপনি একটি ভিজিটিং কার্ড তৈরী করছেন ফটোশপে। পেছনের আকর্ষনীয় ছবি এবং তার ওপর লেখার সবই ফটোশপের। প্রিন্টের জন্য এটা ব্যবহার করলে যদি সেই কম্পিউটারে নির্দিষ্ট ফন্ট না থাকে তাহলে ফন্ট পরিবর্তন হবে, ফলে আগের সৌন্দর্য থাকবে না। আবার এই সমস্যা এড়াতে ফন্টকে যদি ইমেজে পরিনত করেন তাহলে ভাঙা দেখাবে। ছোট লেখা পড়তে সমস্যা হবে।
এর সমাধান ভেক্টর। সাধারনত ডিজাইনাররা ছবির কাজ করেন ফটোশপে, লেখার কাজ করেন ইলাষ্ট্রেটরে। এথেকে ধরে নিতে পারেন, ইলাষ্ট্রেটরের কাজ ফটোশপে ব্যবহার করা যায়, ফটোশপের কাজ ইলাষ্ট্রেটরে ব্যবহার করা যায়। এক যায়গায় পরিবর্তন করলে সাথেসাথে আরেক যায়গায় পরিবর্তন হয়।
সাধারনভাবে ব্যবহৃত বিটম্যাপের ফাইল এক্সটেনশনগুলি হচ্ছে BMP, JPG, JPE, TIFF, PSD, PCD, PNG, GIF, TGA ইত্যাদি।
আর ভেক্টরের জন্য ফাইল এক্সটেনশন হচ্ছে DWG, AI, CDR, EMF, WMF ইত্যাদি।
ফটোশপ কোন ফরম্যাটে সেভ করবেন সেটা নির্ভর করবে কোথায় ব্যবহার করা হবে তার ওপর। সাধারনভাবে পুনরায় কাজ করা প্রয়োজন হলে অবশ্যই ফটোশপের নিজস্ব ফরম্যাট, মনিটর বা টিভিতে দেখার জন্য JPG, এনিমেশন ভিডিও এডিটিং কাজে TGA, JPG, ওয়েব এর জন্য JPG, GIF অথবা PNG ব্যবহার করা হয়।

8 comments:

  1. vai apnar post ta poree khub e valo laglo..onek kisu janlam..ame photohsop e kaj korar fully ekta knowledge nite chai. seta kivabe possible r valo designer howar jonno ki ki kora uchit? janale upokrito hobo.

    ReplyDelete
  2. ভেক্টর ইমেজ নিয়ে আরো জানতে আগ্রহী।প্রিন্ট করবো (যেমন- বিজনেস কার্ড) এমন কাজগুলোকি ইলাস্ট্রেটরে না ফটশপে ভাল হবে? একটা বিটম্যাপ ইমেজ (লেয়ারড -psd)-কে কি ভেক্টর ইমেজে রূপান্তরিত করা যায়? যদি করা যায় - তার সধারণ পদ্ধতিটা কি? আমি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর এ ইমেজ প্রসেসিং শিখার চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করি আপনার পোস্টগুলো থেকে সহযোগিতা পাব। ধন্যবাদ ...

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রিন্টের জন্য সাধাপরনভাবে যে নিয়ম মানা হয়, ফটোশপে বিটম্যাটম্যাপের কাজ করে তাকে ইলাষ্ট্রেটরে ইমপোর্ট করা এবং টেক্সট যোগ করা সহ অন্যান্য কাজ ইলাষ্ট্রেটরে করা। ফন্টকে আউটলাইন করে ইপিএস ফরম্যাটে ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়।
      বিটম্যাপকে একই মানের ভেক্টরে পরিনত করা যায় না। ইলাষ্ট্রেটরে বিটম্যাপ ট্রেসিং বলে একটি বিষয় রয়েছে। এটা করলে ইমেজ ভেক্টরে পরিনত হয় কিন্তু বিটম্যাপের বৈশিষ্ট নষ্ট হয়। ডিজাইনাররা বিটম্যাপকে ভেক্টরে পরিনত করাকে বলেন আইটলাইন করা (ফন্ট আউটলাইন থেকে আলাদা)। এতে ছবির ওপর পেন টুল দিয়ে নতুন ভেক্টর ড্রইং করা হয়।
      ইলাষ্ট্রেটরে বেশকিছু টিউটোরিয়াল এখানে দেয়া আছে। এর বাইরে বিশেষ বিষয়ে জানা প্রয়োজন হলে জানাবেন। অবশ্যই সেবিষয়ে লেখা হবে।

      Delete
  3. Actually I want the whole Photoshop tutorial downloaded from your website. Can I do that? If I want.How?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সাধারনভাবে ব্লগপোষ্ট ডাউনলোড করা যায় না। যদি এডবি এক্রোব্যাট প্রো এর মত সফটঅয়্যার থাকে তাহলে প্রিন্ট কমান্ড দিয়ে পিডিএফ ফাইল তৈরী করা যায়। ব্লগ থেকে সরাসরি ইবুক তৈরীর জন্য আলাদা সফটঅয়্যার পাওয়া যায় (নাম মনে পড়ছে না)।

      Delete
  4. আপনার বল্গটা এপিক। আমি মাএ পড়া শুরু করেছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই কাজে হাত দেয়ার জন্য। আমি গ্রাফিকস ডিজাইন কিছুটা পারি কিন্তু আমার ক্রিয়েটিভিটিতে দুর্দান্ত সমস্যা আছে। আমি এর জন্য দুইটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি
    (১) কিছু বই পড়বো।
    (২) যদি কোন অভিজ্ঞ গ্রাফিকস ডিজাইনার পাই তার সাথে কাজ করবো।
    আপনি কী আমাকে এমন কিছু বই রিকমান্ড করতে পারেন যা আমার ক্রিয়েটেভিটিতে একটু প্রভাব রাখতে পারে, প্লিজ।
    আমি খুবই খুশি হতাম যদি আপনি আমাকে কোন একটা টিমে কাজের জন্য এবং শিখার জন্য সুযোগ করে দিতে পারতেন।
    ধন্যবাদ ( e-mail address: bul9bul@gmail.com ) ('-')

    ReplyDelete
    Replies
    1. ১. আপনি কোন পর্যায়ে শিখবেন তার ওপর নির্ভর করে কোন বই আপনার জন্য বেশি উপযোগি। একটা কথা মনে রাখতে পারেন, কোন সফটঅয়্যারে যাকিছু করা যায় তার সামান্য অংশই নির্দষ্ট কারো প্রয়োজন হয়। কাজেই সবকিছূ শেখার চেষ্টা করবেন না। জানার চেষ্টা করুন আপনার কতটুকু প্রয়োজন। প্রাথমিক কোন বই কিংবা ভিডিও টিউটোরিয়াল থেকে এই ধারনা পাবেন। এরপর প্রয়োজনীয় টুলগুলো বারবার ব্যবহার করে দক্ষতা অর্জণ করুন।
      ২. পেশাদার ডিজাইনাররা নিজেদের কাজে ব্যস্ত থাকেন বলে সাধারনত অন্যের জন্য সময় দিতে আগ্রহি হন না। অনেকে নিজের কাজের পদ্ধতি অন্যকে জানাতেও পছন্দ করেন না। এর সমাধানের জন্য আপনার মত আগ্রহি দুয়েকজনকে সাথে নিজে নিজেরাই টিম তৈরী করতে পারেন।
      ক্রিয়েটিভির সঠিক ব্যাখ্যা করা কঠিন। সত্যিকারের ক্রিয়েটিভিটি কোথায় বোঝার জন্য দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয়। উদাহরন হিসেবে, যদি লোগো ডিজাইনে ক্রিয়েটিভিটি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে ইমেজ সার্চ করে প্রচলিত লোগোগুলি দেখে নিন (যেমন হাউজিং লোগো)। এদের বৈশিষ্টগুলি লক্ষ করে নিজে নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন। একসময় আপনার নিজেরই নিজস্ব একটি ষ্টাইল তৈরী হবে।

      Delete
  5. Amazing blog, please keep updating your blogs, so that we may learn something from our native blog. Thanks

    ReplyDelete