৪০ লক্ষ সদস্য
নিয়ে আউটসোর্সিং কাজের সাইট ফ্রিল্যান্সার কি প্রতারনা ব্যবসা করছে ?
কিছুদিন ধরেই
ফ্রিল্যান্সিং জগতে এটা বড় আলোচনার বিষয়। বেশ কয়েকটি ফোরাম এবিষয়ে মুখ্য ভুমিকা
পালন করছে। যারা ফ্রিল্যান্সার সাইটে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা তাদের
অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করছেন। কেউ বলছেন এটা ইন্টারনেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়
প্রতারনার ঘটনা, কেউ বলছেন এই সাইট বন্ধ না করা পর্যন্ত তারা থামবেন না।
ফ্রিল্যান্সার
সাইটের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ এবং এসবের কারনে ফ্রিল্যান্সিং জগতে কি প্রভাব
পরতে পারে তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
যে অভিযোগগুলি
করা হয়েছে;
.
কাজ করার পর
টাকা উঠানোর সময় ফ্রিল্যান্সার নানাভাবে গড়িমসি করে। নানা কারন দেখিয়ে টাকা উঠাতে
বাধা সৃষ্টি করে। এর একটি হচ্ছে পরিচিতি যাচাই। নিজের পরিচয়পত্র, পাসপোর্টের ছবি
ইত্যাদি দেয়ার পরও অনেককে টাকা দেয়া হয়নি।
.
টাকা উঠানোর
জন্য এমপ্লয়ার এর পরিচয় ভেরিফাই করা হয়। কাজ শেষ হয়ে গেছে, তিনি টাকা জমা দিয়েছেন,
সেটা একাউন্টে জমা আছে, এই অবস্থায় এমপ্লয়ারের পরিচিতি কোন গুরুত্ব বহন করে না।
অনেককে এই কারন দেখিয়ে টাকা দেয়া হয়নি।
.
তাদের একাউন্টে
টাকা জমা করার সময় টাকা দিতে হয়, কাজ জমা দেয়ার জন্য টাকা দিতে হয় (এমপ্লয়ার),
টাকা উঠানোর সময়ও ফি দিতে হয়।
.
টাকা উঠানোর
সময় কারো কারো একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
.
বিভিন্ন কারনে
ফ্রিল্যান্সাদের টাকা কেটে নেয়া। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন তাদের ব্যাংকের টাকাও এভাবে নেয়া হয়েছে।
.
ভুয়া প্রোজেক্ট
দেখানো এবং সেখানে অংশগ্রহনের কারনে টাকা নেয়া।
.
যারা ভুক্তভোগি
তারা নানাভাবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেছেন। কোন ব্যক্তির সাথে সরাসরি
যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তাদের কোন ফোন নাম্বার নেই।
.
escrow নামের নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থায় ভুয়া হিসেবে টাকা দেখানো
হয়। এই টাকা ফ্রিল্যান্সার কখনো পান না।
.
এমপ্লয়ার যে
টাকায় কাজ করাতে চান তারথেকে বেশি টাকা আদায় করা হয়।
এধনের বহু
অভিযোগের উল্লেখ করা হয়েছে। ক্রমাগত নতুন নতুন অভিযোগ জমা হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবেই
প্রশ্ন উঠতে পারে, এর ফল কি ?
কোন সাইটের
বিপক্ষে যখন এত বিপুল পরিমান অভিযোগ করা হয় তখন তাকে শতভাগ বিশ্বাস করা কষ্টকর।
একথা ঠিক বহু ফ্রিল্যান্সার এই সাইটের মাধ্যমে কাজ করছেন, তারা এধরনের কোন সমস্যায়
পড়েননি। ব্যক্তিগতভাবে পরিচিতদের কারো খারাপ অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও কারো বিরুদ্ধে
এত অভিযোগ ওঠা উচত না। সেখানে অবশ্যই কিছু গড়মিলের বিষয় রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে
ফ্রিল্যান্সিং জগতে এর কিছু প্রভাব পড়বেই। অনেকে যেমন বলেছেন, তাদের পতন না হওয়া
পর্যন্ত প্রচারনা চালিয়ে যাবেন। ব্যবহারকারীরা আস্থা হারাবেন। তাদেরকে টিকে থাকতে
হলে সমস্যাগুলির মুখোমুখি হতে হবে।
যদি এই সাইট
বন্ধ হয়েও যায় তাহলেও ফ্রিল্যান্সারদের খুব চিন্তিত হওয়ার কারন ঘটবে না। বর্তমানে
ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টি যেখানে দাড়িয়ে আছে সেখান থেকে আরো সামনের দিকে যাওয়াই
স্বাভাবিক। বিপুল পরিমান ফ্রিল্যান্সার যেমন তৈরী হয়েছেন তিমনি অনেকেই এভাবে কাজ
করে সুবিধে পেয়েছেন।
বরং এধরনের
স্পষ্ট প্রতিবাদের কারনে সবাই দায়িত্ব সম্পর্কে আরো সচেতন হবেন, সাইটগুলির সেবার
মান উন্নত হবে, আরো নতুন সাইট তৈরী হবে।
অন্যদিকে
ফ্রিল্যান্সারদের প্রত্যক্ষভাবে প্রতিবাদে অংশগ্রহনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে যোগাযোগ
তৈরী হচ্ছে। এতে সচেতনতা যেমন বাড়বে তেমনি সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে সব ফ্রিল্যান্সিং
সাইটের ওপর। বিকল্প হিসেবে ইল্যান্স এবং ওডেস্ক এর নাম উল্লেখ করা হলেও তাদের
প্রতিটি কার্যকলাপ যে লক্ষ্য করা হবে এটা নিশ্চিত।
সার্বিকভাবে
হিসেব করলে, বিষয়গুলি এভাবে প্রচার পাওয়া ফ্রিল্যান্সারের জন্য সুখবর। শেষফল
ফ্রিল্যান্সারদের পক্ষে যাওয়ার কথা।
No comments:
Post a Comment