Thursday, March 31, 2011

মাইক্রোসফট অফিস টিউটোরিয়াল : ওয়ার্ডে ক্যারেকটার, প্যারাগ্রাফ এবং পেজ ফরম্যাটিং

ওয়ার্ড ব্যবহার করে তৈরী ডকুমেন্ট পড়তে সহজ হয় এবং দেখতে সুন্দর হয় সেটি কত সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে তার ওপর। অক্ষরগুলি পাঠযোগ্য, লাইনের দুরত্ব সঠিক, প্যারাগ্রাফগুলি বক্তব্যের সাথে মানানসই এবং পুরো পৃষ্ঠা দেখতে সুন্দর। একাজগুলি কিভাবে করবেন জেনে নিন।
ক্যারেকটার ফরম্যাটিং এর মধ্যে রয়েছে ফন্ট টাইপফেস এবং ফন্ট সাইজ। লেখার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে যিনি সেটা পড়বেন সেটা যেন সহজে পড়তে পারেন। ছাপাখানাগুলি বহু বছর ধরে পর্যবেক্ষন করে কিছু নিয়ম তৈরী করেছে এবিষয়ে। নিয়মগুলি হচ্ছে;
.          ফন্ট যত সরল হয় তত সহজে পড়া যায়। ফন্ট মুলত দুভাবে ভাগ করা হয়। একটি ভাগে কোনা রয়েছে (সেরিফ, টাইমস নিউ রোমান এই ধরনের ফন্ট), আরেকটিতে কোনা নেই (সানস সেরিফ, এরিয়েল এই ধরনের ফন্ট)। লেখা বেশি ছোট করা প্রয়োজন হলে সানস-সেরিফ ফন্ট বেশি ষ্পষ্টভাবে পড়া যায়, অন্যদিকে কিছুটা বড় হলে সেরিফ ফন্ট ব্যবহার করা যায়।
.          ফন্টের আকার নির্দিষ্ট ধরনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে পড়তে সুবিধে হয়। মুল লেখার জন্য (বডি টেক্সট) এর ক্ষেত্রে সাধারনত ১৪ থেকে ১৪ পয়েন্ট ব্যবহার করা হয়। অবশ্য বিভিন্ন ফন্টের জন্য একই পয়েন্টে লেখা বড়-ছোট দেখায়। মুল লেখা খুব বড় কিংবা খুব ছোট করতে নেই।
.          লেখার বিভিন্ন ধরনের ফন্ট ব্যবহার করতে নেই। একই ধরনের বক্তব্য সবসময় একই ফন্ট টাইপফেস এবং একই ফন্টসাইজ ব্যবহার করতে হয়। কোন শব্দ বা বাক্যকে বিশেষভাবে পৃথক করার জন্য বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। সেখানেও সব যায়গায় একই নিয়ম মানা উচিত।


ক্যারেকটার ফরম্যাটিং : কোন কাজ কিভাবে করবেন
লেখা শুরু আগে কিংবা লেখার পর এই পরিবর্তন করতে পারেন। লেখার পর পরিবর্তনের জন্য আগে লেখাটুকু সিলেক্ট করে নিন। লেখা শুরুর আগে ব্যবহারের জন্য যেখানে লেখা শুরু হবে সেখানে কার্সর আনুন।
টুলবারে ফন্টের টাইপফেস, ফন্টসাইজ, বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন ইত্যাদি করার জন্য বাটন রয়েছে। এছাড়া এজন্য কিবোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করতে পারেন। আর শর্টকাট মনে রাখা কিংবা টুলবার ব্যবহারে যদি সমস্যা মনে হয় তাহলে ডায়ালগ বক্স ব্যবহার করে একই যায়গায় সবধরনের পরির্তনের কাজ করতে পারেন।
ফন্ট বিষয়ক ডায়ালগ বক্স পাওয়ার জন্য মেনু থেকে Format - Font সিলেক্ট করুন।
ছবির মত ডায়ালগ বক্স পাওয়া যাবে। ফন্টের নাম, ফন্টষ্টাইল (বোল্ড, ইটালিক, আন্ডারলাইন), সাইজ, রঙ ছাড়াও সুপারস্ক্রিপাট, সাবস্ক্রিপ্ট, স্যাডো, আউটলাইন, স্মলক্যাপ অলক্যাপ,  ইত্যাদি অপশন পাওয়া যাবে। যে কোন পরিবর্তনের সাথেসাথে এখানে প্রিভিউ দেখা যাবে।
যাকিছু পরিবর্তন করতে চান করার পর ওকে বাটনে ক্লিক করুন। এই পরিবর্তনকে যদি ডিফল্ট হিসেবে ব্যবহার করতে চান তাহলে ডিফল্ট বাটনে ক্লিক করুন।

প্যারাগ্রাফ ফরম্যাটিং
প্যারাগ্রাফ ফরম্যাটিং এর মধ্যে রয়েছে এলাইনমেন্ট, ইন্ডেন্ট, লাইনস্পেস ইত্যাদি বিষয়। প্যারাগ্রাফ ফরম্যাটিং ডায়ালগ বক্স ওপেন করার জন্য মেনু থেকে Format – Paragraph সিলেক্ট করুন।
প্যারাগ্রাফকে বামে, ডানে, মাঝখানে অথবা দুপাশে এলাইন করার জন্য এলাইনমেন্ট অংশ থেকে পছন্দমত অপশন সিলেক্ট করুন।
ইন্ডেন্ট হচ্ছে বামদিকের মার্জিন থেকে প্যারাগ্রাফটি কতটুকু দুরত্বে থাকবে সেটা ঠিক করা। কখনো কখনো বিশেষ প্যারাগ্রাফকে মার্জিন থেকে কিছুটা ভেতরে রাখা হয়। এরনাম লেফট ইন্ডেন্ট, আর ব্যবহার কম হলেও কখনো কখনো মার্জিনের বামে প্যারাগ্রাফ আনা হয়, যার নাম রাইট ইন্ডেন্ট। নির্দিষ্ট ধরনের পরিবর্তনের জন্য পাশের মান কমবেশি করুন। প্রতি ক্লিকে ০.১ ইঞ্চি পরিবর্তন হবে। অথবা একবারে সরাসরি মান টাইপ করে দিন।
স্পেসিং বলতে দুটি প্যারাগ্রাফের মধ্যেকার ফাকা যায়গা বুঝায়। সাধারনত এক লাইন থেকে আরেক লাইনের যে দুরত্ব (লাইন স্পেসিং), তারথেকে এই দুরত্ব কিছুটা বেশি হয়। এঠিক করতে পারে ওপরের প্যারাগ্রাফের জন্য (প্যারাগ্রাফের নিচের দিকে যায়গা পরিবর্তিন হবে), অথবা নিচের প্যারাগ্রাফের জন্য (প্যারাগ্রাফের ওপরের অংশে পরিবর্তন হবে)।
লাইন স্পেসিং হচ্ছে প্যারাগ্রাফের প্রতিটি লাইনের মধ্যেকার ফাকা যায়গার পরিমান। ডাবল স্পেস বলতে দুটি লাইনের মধ্যে একটি ফাকা লাইন থাকা বুঝায়। সাধারনভাবে সিংগেল স্পেস বেশি ব্যবহার করা হয় বলে এটাই ডিফল্ট কাজ করে। ইচ্ছে করলে পরিবর্তন করে নিতে পারেন। প্রতিটি পরিবর্তনের সাথেসাথে প্রিভিউ দেখা যাবে।

পেজ ফরম্যাটিং
পেজ ফরম্যাটিং বলতে কাগজের মাপ, কাগজটি লম্বালম্বি (প্রোট্রেট) নাকি আড়াআড়ি (ল্যান্ডস্কেপ) থাকবে, চারিদিকের মার্জিন ইত্যাদি ঠিক করা বুঝায়। পেজ ফরম্যাটিং ডায়ালগ বক্স পাওয়ার জন্য মেনু থেকে File – Page setup  সিলেক্ট করুন।
এখানে তিনটি ট্যাব রয়েছে। প্রথম ট্যাব মার্জিন ব্যবহার করে কাগজের বামে, ডানে, ওপরে, নিচে কতটুকু করে মার্জিন থাকবে বলে দিন। উল্লেখ করা যেতে পারে বিষয়টি আপনার কম্পিউটারে ব্যবহৃত প্রিন্টারের সাথে সম্পর্কিত। যেমন আপনার প্রিন্টার যদি ০ (শুন্য) মার্জিন ব্যবহারে সক্ষম না হয় আপনি মার্জিন ০ করার সুযোগ পাবেন না।
ছাপানো পৃষ্ঠা বাধাইয়ের জন্য অনেক সময় মার্জিনের যায়গা ছাড়াও অতিরিক্ত কিছুটা যায়গা রাখা হয়। এই অংশ গাটার নামে পরিচিত। এই যায়গা রাখার জন্য গাটার অংশে পরিবর্তন করুন।
ওরিয়েন্টেশন অংশে প্রোট্রেট অথবা ল্যান্ডস্কেপ সিলেক্ট করুন। প্রিন্ট করার সময় সেভাবেই প্রিন্ট হবে।
এখানকার যে কোন পরিবর্তন নিজে থেকে পুরো ডকুমেন্ট ব্যবহৃত হবে। আপনি ইচ্ছে করলে ডকুমেন্টের বিশেষ একটি অংশে ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য এজন্য সেই অংশকে পৃথকভাবে চিহ্নিত (সেকশন ব্রেক ব্যবহার) করতে হয়।
পেপার ট্যাব থেকে প্রিন্ট করার জন্য ব্যবহৃত কাগজের মাপ ঠিক করে নিন। এখানে বেশকিছু প্রিসেট রয়েছে বহুল ব্যবহুত লেটার, এ৪ ইত্যাদি)। এর বাইরে বিশেষ মাপের জন্য সেই মাপ টাইপ করে দিন।
প্রিন্ট করার সময় কাগজ কোথা থেকে ব্যবহৃত হবে সেটা বলে দিন এখান থেকে। অনেক প্রিন্টারে একাধিক যায়গা থাকে কাগ দেবার জন্য (যেমন লেজার প্রিন্টার)। আপনি একটি চিঠির প্রথম পৃষ্ঠার জন্য রঙিন লেটারহেড, বাকিগুলির জন্য সাধারন কাগজ ব্যবহার করতে পারেন এখানে সিলেক্ট করে।
 লে-আউট ট্যাবে সাধারনত পরিবর্তন প্রয়োজন হয় না। আপনি ইচ্ছে করলে লেখাটি কাগজের কোথায় কোথায় এলাইন করা হবে বলে দিতে পারে, যেমন ওপরে, মাঝখানে অথবা নিচে।

** এই টিউটোরিয়ালে ওয়ার্ড ২০০৩ ভার্শন ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য ভার্শনে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে।



অন্যান্য টিউটোরিয়াল


মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহার

ওয়ার্ডে টেবিল ব্যবহার
হেডার-ফুটার, পেজ নাম্বারিং
ক্লিআর্ট, পিকচার, ওয়ার্ড আর্ট এবং ড্রইং

ওয়ার্ড কাষ্টমাইজেশন
থিম-টেম্পলেট ব্যবহার


No comments:

Post a Comment