সাধারনভাবে প্রায় সব ক্যামেরাতেই ছবি সেভ হয় জেপেগ ফরম্যাটে। এর সুবিধে হচ্ছে এই ফাইলের জন্য কম যায়গা প্রয়োজন হয়, খুব সহজে যেকোন সফটঅয়্যারে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। আর সমস্যার দিক হচ্ছে, এতে লস কম্প্রেসন ব্যবহার করা হয়। আপনি ফাইল সাইজ যত ছোট করবেন ছবির মান তত খারাপ হবে। যারা একেবারে নিখুত ছবি পেতে যান তাদের সমস্যা আরো গভীরে। সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় ফাইলসাইজ ব্যবহার করে যা পাওয়া যায় তাতেও সন্তুষ্ট নন তারা। কারন,
মনে করুন সুর্যাস্তের ছবি উঠাচ্ছে। সরাসরি আলো ছাড়াও একধরনের আলোর আভা রয়েছে চারিদিকে। জেপেগ মোডে ছবি উঠানোর সময় সেন্সর সেগুলি ধারন করে। তারপর ক্যামেরার প্রসেসর যখন তাকে জেপেগ ফরম্যাটে কনভার্ট করে তখনই সেটা হারিয়ে যায়। আপনি খালিচোখে যতটা সুন্দর দেখেছেন ছবিতে সেটা পেলেন না।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করা হয় র (Raw) ফরম্যাট। নাম থেকেই ধরে নিতে পারেন এটা আসলে কোন ইমেজ ফরম্যাট না। সেন্সরে যে তথ্য ধরা পড়ে তাকেই সেভ করে রেখে দেয়া।
র-মোডের সুবিধে হচ্ছে মুল দৃশ্যটি আপনি পাচ্ছেন ফাইল হিসেবে। এরপর আপনার পছন্দমত সেখানে পরিবর্তন করে নেবেন। যেহেতু সেখানে সব তথ্যই থেকে যায় সেহেতু কোনকিছু না হারিয়েই আলো-ছায়ার পরিবর্তন করার সুবিধে রয়েছে। কাজেই একেবারে নিখুত ছবি পাওয়া যাবে।
আর সমস্যার দিক হচ্ছে এরজন্য ফাইল সাইজ হয় অনেক বড়। মেমোরী কার্ডে অনেক বেশি যায়গা প্রয়োজন হয়। আর একে সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। এই ফরম্যাট প্রতিটি ক্যামেরার জন্য মডেল ভিত্তিক। আপনাকে এমন সফটঅয়্যার ব্যবহার করতে হবে যে সেই ফরম্যাট ব্যবহার করে। আশার কথা হচ্ছে ক্যামেরা কেনার সময় র-কনভার্টার হিসেবে কোন সফটঅয়্যার দেয়া হয়। আর ইমেজ এডিটিং এর জনপ্রিয় সফটঅয়্যার এডবি লাইটরুম, ফটোশপ ইত্যাদিতে সব মডেলের র-ফরম্যাট ব্যবহারের ব্যবস্থা দেয়া হয়।
ফটোশপের পুরনো ভার্শনে র-ফরম্যাট ব্যবহারের জন্য এডবি ক্যামেরা র (Adobe Camera Raw) নামে একটি সফটঅয়্যার পৃথকভাবে ইনষ্টল করতে হত। ফটোশপ সিএস-৫ এর সাথে এটা নিজেই ইনষ্টল হয়। আপনি র-ফরম্যাটের ইমেজ ওপেন করার সময় নিজে থেকেই সেটা ওপেন হয়। মুল ইমেজের কোনরকম ক্ষতি না করে সব ধরনের পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে সেখানে।
সেখানে কি কি পরিবর্তন করা যায় একবার দেখে নিন।
. ফটোশপ ওপেন করুন এবং একটি র-ফরম্যাটের ছবি উঠানোর জন্য File – Open কমান্ড দিন।
. নির্দিস্ট ফোল্ডার থেকে ফাইলটি সিলেক্ট করুন। ইমেজটি Camera Raw ব্যবহার করে ওপেন হবে।
. এখানে White Balance, Temperature, Tint থেকে শুরু করে Exposure, Recovery, Fill Light, Blacks, Brightness, Contrast, Clarity, Vibrance, Saturation ইত্যাদি বিষয়ের পরিবর্তন করা যাবে স্লাইডার ব্যবহার করে। সাথেসাথে ছবিতে তার প্রিভিউ দেখা যাবে। কোন পরিবর্তনেই মুল ইমেজের কোনরকম পরিবর্তন হবে না বা ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না।
. পছন্দমত পরিবর্তন করার পর Open copy অথবা Done বাটনে ক্লিক করুন।
আপনার ক্যামেরা যদি র-ফরম্যাট সাপোর্ট করে (কমদামী ক্যামেরায় এই ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে) তাহলে র-ফরম্যাটে ছবি উঠান। ছবি উঠানোর সময় সবধরনের সেটিং নিয়ে মাথা না ঘামিয়েই ভালমানের ছবি পাওয়া যাবে।
আর নতুন ক্যামেরা কেনার সময় সেটা র-ফরম্যাট সাপোর্ট করে কিনা জেনে নিন।
· সবসময়ই নতুন নতুন মডেলের ক্যামেরা বাজারে আসছে। কাজেই কিছুটা পুরনো ভার্শনের সফটঅয়্যারে সেই মডেলের জন্য র-সাপোর্ট নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিন।
· এডবি ব্রিজ, এসিডিসি প্রো ইত্যাদি সফটঅয়্যারে র-ফরম্যাটের ইমেজ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
ডিজিটাল ফটোগ্রাফি বিষয়ে অন্যান্য পোষ্ট
- ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ডিজিটাল ফটোগ্রাফি
- ভাল ছবি উঠানোর নিয়ম-কানুন
- কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন
- সঠিক এক্সপোজার ব্যবহার
- ট্রাইপড কেন ব্যবহার করবেন
- ফ্লাশ কখন ব্যবহার করবেন না
- ডেপথ অব ফিল্ড ব্যবহার
- জেপেগ বনাম র মোড
- প্যানোরমা ছবি উঠানোর নিয়ম
- পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির নিয়ম
- ফোকাল লেন্থ, এঙ্গেল অব ভিউ এবং নানা ধরনের লেন্স
- ক্যামেরা ব্যাগ – কি দেখে কিনবেন
- সঠিক রঙের জন্য হোয়াইট ব্যালান্স
- মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি
- ফটোগ্রাফির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি
- ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম
- ফটোগ্রাফি থেকে আয়
- ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের নিয়ম
- ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার, মিটারিং মোড
- ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার
- ডিজিটাল ক্যামেরার ফার্মঅয়্যার আপগ্রেড করা
- ক্যানন ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার
- এইচডিআর ফটোগ্রাফি
No comments:
Post a Comment