ক্লোজ-আপ অর্থ কাছ থেকে উঠানো ছবি। কোন ব্যক্তির শুধুমাত্র মুখের ছবিকে ক্লোজআপ বলতে পারেন। কিংবা একটি ফুলের ছবি। আপনি একেবারে কাছে ক্যামেরা নিয়ে একটি ফুলের ছবি উঠাতে পারেন, আবার জুম লেন্স ব্যবহার করে দুরথেকে ঠিক ততটুকুই ফুলের ছবি উঠাতে পারেন। দুটি ছবি হবে দুধরনের। বাস্তবে এধরনের ছবি উঠানোর সময় বিশেষ কিছু নিয়ম মানা প্রয়োজন হয়।
প্রথমে একেবারে কাছে থেকে ছবি উঠানোর বিশেষ ব্যবস্থার কথা জেনে নেয়া যাক। এজন্য ম্যাক্রো লেন্স বলে একধরনের লেন্স পাওয়া যায়। এর বৈশিষ্ট হচ্ছে খুব কাছে থেকে ফোকাস করা যায়, একেবারে ফুলের সাথে লাগিয়ে। এছাড়াও এপারচার বিষয়ক বৈশিষ্টও রয়েছে। অনেকে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফির জন্য এক্সটেনশন টিউব নামের একধরনের ডিভাইস ব্যবহার করেন। এটা মুলত ক্যামেরা এবং লেন্সের মধ্যে লাগিয়ে দুইয়ের দুরত্ব বাড়ানোর একটি ব্যবস্থা। পাইপ ব্যবহার করে নিজেও তৈরী করে নেয়া যায়। মুল লক্ষ্য হচ্ছে কিছুটা দুর থেকে হলেও ফোকাস করার সময় মনে হবে একেবারে কাছে থেকে ফোকাস করা হয়েছে। একটি মৌমাছির ছবি উঠানোর সময় তার মাথা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, অথচ সামান্য দুরে তার শরীর ঝাপসা হয়ে গেছে।
এখানে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফির কথা বলা হচ্ছে না, বলা হচ্ছে ক্লোজ-আপ ফটোগ্রাফির কথা যা সাধারন ক্যামেরা এবং লেন্স ব্যবহার করে করা যাবে।
একটি গাছের ডালে বসা ফড়িং এর ছবি উঠানোর কথা চিন্তা করুন। আপনি এমনভাবে ছবি উঠাতে পারেন যেখানে শুধুমাত্র ফড়িংটি স্পষ্টভাবে দেখা যাবে, তার পেছনের সবকিছু অষ্পষ্ট ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে কাজ করবে। সাধারনত এটা ফটোগ্রাফারের পছন্দ।
এজন্য যা করবেন, যতটা সম্ভব কাছে যান। এপারচার সর্বোচ্চ যা ব্যবহার করা যায় সেটা সিলেক্ট করুন। ছবি উঠান। এপারচার বেশি করার অর্থ ডেপথ অব ফিল্ড কমানো। আপনি যতটুকু ফোকাস করবেন শুধুমাত্র ততটুকুই স্পষ্ট দেখা যাবে।
অবশ্য কমদামি লেন্সে এপারচার খুব বেশি করার সুযোগ থাকে না। এফ/২ থেকে যে ফল পাবেন এফ/৪ থেকে সেটা পাবেন না, আর এফ/২ লেন্সের দাম বেশি।
অন্যান্য আরো কিছু বিষয় লক্ষ করতে পারেন ক্লোজআপ ছবি উঠানোর সময়।
রৌদের ফুলের ক্লোজআপ উঠানোর সময় আলোছায়ার বড় ধরনের পার্থক্য থাকতে পারে। সব যায়গায় সমান আলো পাওয়ার জন্য একটি সাদা কাগজ থেকে আলো প্রতিফলিত করে ভাল ফল পেতে পারেন।
যদি বাতাস থাকে তাহলে ফুল নড়াচড়া করবে। এপারচার যথেষ্ট বড় করা সাটার স্পিড কম হওয়ার গতিশীলতার কারনে ছবি ঝাপসা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সাটারস্পিড বাড়িয়ে নিন। আইএসও বাড়িয়ে সেটা করতে পারেন। এক্সপোজার পরিবর্তণ করেও করতে পারেন। এমনকি ফ্লাশ ব্যবহার করতে পারেন।
ঘরের মধ্যে ক্লেজআপ ছবি উঠানোর জন্য ট্রাইপড ব্যবহার করুন। একেবারে সামান্য আলোতেও এপারচার প্রায়োরিটি মোড ব্যবহার করে ভাল ছবি পাওয়া যাবে।
আলো প্রতিফলিত হয় এমন কিছুর ছবি উঠানোর সময় এমন দুরত্ব থেকে ছবি উঠান, প্রতিফলনকে এমনভাবে ব্যবহার করুন যেন সেটা ছবির অংশ হিসেবে কাজ করে।
অধিকাংশ এসএলআর ক্যামেরাতেই ছবি উঠানোর আগে ডেপথ অব ফিল্ড দেখে নেয়ার ব্যবস্থা থাকে। এপারচার পরিবর্তণ করে প্রিভিউ দেখে নিন এবং পছন্দমত ডেপথ অব ফিল্ড বের করুন। আপনার উঠানো ছবি সাধারন থেকে ভাল যেমন হতে পারে তেমনি ভাল থেকে অসাধারন হতে পারে।
ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়াল
ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়াল
- ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ডিজিটাল ফটোগ্রাফি
- ভাল ছবি উঠানোর নিয়ম-কানুন
- কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন
- সঠিক এক্সপোজার ব্যবহার
- ট্রাইপড কেন ব্যবহার করবেন
- ফ্লাশ কখন ব্যবহার করবেন না
- ডেপথ অব ফিল্ড ব্যবহার
- জেপেগ বনাম র মোড
- প্যানোরমা ছবি উঠানোর নিয়ম
- পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির নিয়ম
- ফোকাল লেন্থ, এঙ্গেল অব ভিউ এবং নানা ধরনের লেন্স
- ক্যামেরা ব্যাগ – কি দেখে কিনবেন
- সঠিক রঙের জন্য হোয়াইট ব্যালান্স
- মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি
- ফটোগ্রাফির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি
- ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম
- ফটোগ্রাফি থেকে আয়
- ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের নিয়ম
- ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার, মিটারিং মোড
- ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার
- ডিজিটাল ক্যামেরার ফার্মঅয়্যার আপগ্রেড করা
- ক্যানন ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার
- এইচডিআর ফটোগ্রাফি
No comments:
Post a Comment