Friday, August 12, 2011

অল্প বিনিয়োগে প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসা - ১

ব্যবসার সাথে প্রয়োজন বিনিয়োগ। অনেক ব্যবসায় বিনিয়োগ এতটাই বেশি যা অধিকাংশ মানুষের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। সেইসাথে ব্যবসার নানারকম ঝুকি যখন রয়েছে। একে প্রতিবন্ধকতা দুর করা যেতে পারে মেধা ব্যবহার করে। যেখানে আর্থিক বিনিয়োগ কম, মেধা এবং পরিশ্রমের প্রয়োজন বেশি।
এধরনের কিছু ব্যবসার ধারাবাহিক উল্লেখ করা হচ্ছে এখানে
ওয়েব ডিজাইন এবং মেইন্টেনেস্স
নাম থেকেই ধারনা পেতে পারেন কি করতে হবে। কারো ওয়েবসাইট তৈরী করা প্রয়োজন হলে করে দেবেন। কোন সমস্যা হলে সেটা ঠিক করে দেবেন।
কোন কোম্পানী অথবা ব্যক্তি, যিনি নিজস্ব ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে চান তারপক্ষে নিজে সেকাজে দক্ষতা অর্জন করে নিজে করা যেমন সম্ভব না, তেমনি বেতন দিয়ে একজন সার্বক্ষনিক কাউকে নিয়োগ দেয়াও সম্ভব না। সেখানেই প্রয়োজন হয় চুক্তিভিত্তিক কোন ব্যবস্থা। আপনি একা বা কয়েকজন মিলে একে ব্যবহার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
কি দক্ষতা প্রয়োজন : মুলত ওয়েব ডিজাইনে দক্ষতা। কয়েকজন একসাথে কাজ করলে ভিন্নভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব। এরমধ্যে থাকতে পারে ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা থেকে শুরু করে ড্রিমওয়েভার-ফ্লাশ ভিত্তিক কাজ। একদিকে প্রয়োজন হবে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব এনিমেশন অন্যদিকে পিএইচপি প্রোগ্রামিং, ওয়েব পেজে শপিং কার্ট যোগ করা, ক্যাটালগ যোগ করা কিংবা ফরম তৈরীর মত কাজ। মুলকথা, নানা ধরনের ওয়েব পেজ তৈরীর জন্য যাকিছু প্রয়োজন সবকিছু। যত বেশি ধরনের কাজ করার সক্ষমতা থাকবে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
কি বিনিয়োগ প্রয়োজন : কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট। সাধারনভাবে এর বাইরে উল্লেখ করার মত কিছু প্রয়োজন হওয়ার কথা না। এমনকি অফিস ভাড়া নেয়ারও প্রয়োজন হয় না। নিজের বাড়িতে একটু যায়গা ব্যবহার করেই ব্যবসা শুরু করা যায়।
কাজের সম্ভাবনা : আপনার এলাকায় যেসব অফিস রয়েছে তাদের সাথে যদি আলাপ করেন দেখবেন অনেকেই নিজের ওয়েব পেজ তৈরী করতে চান। তারা সেটা করছেন না কারন অনেকেরই ধারনা নেই কত সহজে, কত কম খরচে সেটা করা যায়। বাংলাদেশে খুব কম ব্যবসা প্রতিস্ঠানই  নিজস্ব ওয়েব সাইট ব্যবহার করে। এর সুবিধে কি তুলে ধরলে সহজেই কাজ পাওয়া সম্ভব।
জুমলা, ওয়ার্ডপ্রেস এবং এধরনের অন্যান্য সাইটের ফোরামে কিছু সময় কাটালে দেখবেন বহু মানুষ ব্যক্তিগত ব্লগ থেকে শুরু করে বড় ধরনের ওয়েবসাইট তৈরীর প্রস্তাব নিয়ে অপেক্ষা করছেন। তাদের কাজ করে দিতে পারেন। ও-ডেস্ক, ফ্রিল্যান্সার এর মত সাইটে অসংখ্য কাজ রয়েছে ওয়েব ডিজাইনের।
এর বাইরে ব্যক্তিগতভাবে একজন ফটোগ্রাফার ওয়েব এলবাম তৈরী করতে পারেন, ব্যবসা প্রতিস্ঠান তাদের পন্যের পরিচিতি তুলে ধরতে পারেন, এনজিও তাদের কার্যক্রম প্রকাশ করতে পারেন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এধরনের কাজ একবার করে যেমন টাকা পাবেন, পরবর্তিতে সেটা আপডেট করেও নিয়মিত অর্থ পাবেন।
পরিচিতি বাড়লে অনলাইনে বড় কোম্পানীর কাজ পাবেন। তবে শুরুতেই সেটা পাওয়ার আশা করবেন না, যথেষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলে সেজন্য যোগাযোগ না করাই ভাল। ছোট থেকেই বড় হতে হয়।
অতিরিক্ত আয় : ডোমেন এবং হোষ্টিং রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থা করে অনায়াসে অতিরিক্ত আয় করতে পারেন। অনেকেই আমেরিকার বিশ্বসেরা সার্ভারে নিজের সাইট রাখতে চান অথচ সেখানে যোগাযোগ, অর্থ দেয়ার ঝামেলায় যেতে চান না। তাদের স্থানীয় প্রতিনিধি হয়ে ব্যবসা বাড়ানোর সুযোগ এবং অর্থলাভ দুইই সম্ভব।
কিভাবে শুরু করবেন : শুরু করাটাই সবচেয়ে কঠিন। বিনিয়োগ নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা না। ঠিক কি কি কাজ করতে পারেন, কোন ধরনের ক্লায়েন্ট টার্গেট করছেন, কি কাজ করবেন এগুলি ঠিক করুন। একটি প্রোফাইল তৈরী করুন যা ক্লায়েন্টকে দেখানো যায়। সেখানে পরিচিতি, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, কোন ধরনের কাজ করতে পারেন সবকিছু লিখুন। এরপর নিজের ওয়েবসাইট তৈরী করে তার মাধ্যমে সেগুলি জানানোর ব্যবস্থা করুন। অনলাইনে ব্যানার বিজ্ঞাপন দিন। বিভিন্ন ফোরামে যোগ দিন। সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে অন্যদের জানা।
স্থানীয়ভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিন বা  লিফলেট তৈরী করে অন্যদের দিন। পরিচিত কারো মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিস্ঠানের সাথে যোগাযোগ তৈরী করুন এবং সময় চেয়ে তাদের বুঝান ওয়েব সাইট তাদের কি উপকার করতে পারে এবং আপনি কিভাবে তাতে সহায়তা করতে পারেন।
মুল লক্ষনীয় বিষয় : এখানে দক্ষতাই আপনার হাতিয়ার। কাজেই সেটা বাড়ানোই মুল চ্যালেঞ্জ। যদি এমন কাজ প্রয়োজন হয় যা জানা নেই তাহলে সেকাজে দক্ষ কাউকে খুজে বের করুন, তারসাথে যোগাযোগ রাখুন। প্রয়োজনের সময় তারকাছে সেটা করে নেয়ার চুক্তি করুন। সেইসাথে নিজেদের দক্ষতা এবং প্রচার বাড়ানোর চেষ্টা করুন।
শেষকথা : সবকিছু একা করতে চেষ্টা করবেন না। আপনি হয়ত ওয়েব ডিজাইনে দক্ষতা অর্জন করেছেন কিন্তু বাস্তবে অনেক সাইট তৈরীর জন্য একাউন্টেন্ট এমনকি আইনজীবীর পরামর্শও প্রয়োজন হয়। আপনি একা সবকিছু হতে পারেন না।
বাংলা-টিউটর সাইটে এধরনের নানা বিষয়ে পরামর্শ রয়েছে। অন্যান্য বহু সাইট রয়েছে এধরনের পরামর্শ দেয়ার জন্য। সময় নিয়ে সেগুলি পড়ুন, পরিকল্পনা করুন, তারপর কাজে হাত দিন।


No comments:

Post a Comment