Tuesday, August 2, 2011

গুগল এডসেন্স ব্যবহারের লক্ষে ব্লগ তৈরী

ব্লগ বা ওয়েবসাইটে গুগলের এডসেন্স বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা অনেকেরই আয়ের প্রধান উতস। আপনি ব্লগ তৈরী করবেন, গুগলের এডসেন্সের জন্য অনুমোদন নেবেন, তাদের কোড সাইটে ব্যবহার করবেন। ফলে আপনার সাইটের বিষয়ের সাথে মিল রেখে বিজ্ঞাপন দেখা যাবে। সেখানে ভিজিটর ক্লিক করলে আপনার নামে টাকা জমা হবে। ভিহিটর যত বেশি, ক্লিক তত বেশি, বায় তত বেশি। এই আয় হাজার ডলার হওয়ার স্বাধারন ঘটনা, ১০ হাজার ডলার ঘটনারও অভাব নেই।
কাজেই এই বিষয় নিয়ে আগ্রহ থাকবে, আলোচনা হবে, নানারকম ওয়েবসাইট থাকবে এবং অনেকেই এই বিষয়কে ব্যবহার করে আয় করতে চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক। যারা এবিষয়ে নানারকম কথা বলেন তারা হয়ত মিথ্যে বলেন না, তবে অনেক সময় বাড়িয়ে বলেন এতে সন্দেহ নেই। আপনার দায়িত্ব সেখান থেকে মুল বিষয় বের করে কাজে লাগানো।
এধরনের কিছু বিষয় এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে;
.          ইন্টারনেটে আয়ের বিষয়ে ব্লগ করলে ভিজিটর বেশি পাওয়া যায়
যেহেতু এই বিষয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি সেহেতু বেশি মানুষ খোজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কাজেই আপনিও এই বিষয়ে ব্লগ তৈরী করতে পারেন। কিন্তু,
আপনি ইন্টারনেটে আয় লিখে সার্চ করে দেখুন তো। বাংলায় অথবা ইংরেজিতে। ইতিমধ্যেই এবিষয়ে হাজার হাজার সাইট রয়েছে। আপনি নতুন সাইট করে তাদেরকে পেছনে ফেলে সার্চ র‌্যাংকিংএ শুরুতে যাবেন সেটা কতটা বাস্তবসম্মত ? বরং এমন কিছু তো আপনার সাইটের বিষয় হতে পারে যে বিষয়ে ভিজিটরের আগ্রহ রয়েছে। তারচেয়েও বেশি গুরুত্বপুর্ন, আপনি ব্লগ করবেন এমন বিষয়ে যে বিষয় আপনি ভাল জানেন, পছন্দ করেন। কোন কোন কিওয়ার্ড সার্চে বেশি ব্যবহার করা হয় সেটা জানতে পারেন গুগলের এডওয়ার্ডস সাইট থেকে। সেখানে খুজে দেখুন না আপনার কোন বিষয় সেখানে পাওয়া যায় কিনা।
.          অভিজ্ঞের কথা মানুষ শোনে
আপনি ব্লগে ভিজিটর আশা করছেন, তাদের সামনে আপনি বক্তব্য তুলে ধরছেন। তারা আপনার কথা শুনবে কেন ? শুনলে তাদের কি উপকার হবে।
ইন্টারনেটে আয়ের বিষয়কেই উদাহরন হিসেবে দেখুন। আপনি লিখলেন অমুক পথে হাজার ডলার আয় করা যায়। যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি নিজে কত আয় করেন ? বাস্তবতা তো এটাই যিনি স্কুল খুলে বসে লক্ষ টাকা আয়ের কথা বলছেন তিনি নিজে নির্ভর করছেন তারকাছে হাজার টাকার ওপর।
আপনি যে বিষয়েই ব্লগ করুন না কেন, যাই বলুন না কেন, নিজের অভিজ্ঞতা ব্যবহার করুন। নিজে আয় করুন তারপর অন্যকে আয়ের পরামর্শ দিন।
.          ভিজিটরকে বারবার ঘুরাতে হয়
এটা খুব সহজ যুক্তি। আপনার মুল লক্ষ্য যেহেতু ভিজিটর ডেকে আনা তাকে কখনো পুরো তথ্য দেবেন না, পুরো সত্য বলবেন না। এমনভাবে বলবেন যেন তার প্রশ্ন থেকে যায়। ফলে তিনি আবারও আপনার সাইটে আসবেন।
বিপরীতভাবে যদি প্রশ্ন করা যায়, ভিজিটরের যদি উপকার না হয় তাহলে তিনি কতদিন সেই সাইট ব্যবহার করবেন ? একসময় তো তিনি জানবেন সেই সাইট থেকে তিনি উপকৃত হচ্ছেন না।
অবশ্য বিষয়টি একটু গোলমেলে। এই সাইটে মোটামুটি একই বিষয় নিয়ে অনেকগুলি আর্টিকেল লেখা হয়েছে, কিছুটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। কারন একেকজন একেভাবে বোঝেন, কেউ দশটা আর্টিকেল পড়েও মুল বিষয় এড়িয়ে যান। আর যে কোন কাজেরই নানাবিধ দিক থাকে। একই শতভাবে করা যায়, একেজনের জন্য পদ্ধতি একেরকম হতে পারে। সেদিক থেকে একই বিষয়ে বারবার লিখতে পারেন। ইচ্ছে করে কোন বিষয় আড়াল করে রাখা কি যুক্তিসংগত ?
যে ব্যবসায়ী অন্যকে ঠকায় একসময় তাকে ব্যবসা ছেড়ে দিতে হয়।
.          অন্যের উদাহরন থেকে থেকে শিখুন
কোন একজন ব্যক্তি আরেকজনের মত চিন্তা করে না, একইভাবে কাজ করে না। কাজেই আরেকজন কিভাবে সফল হয়েছে দেখে যদি অন্ধভাবে অনুকরন তাহলেই সফল হবেন এমন কথা নেই। বরং সেটা না করে তাকে নিজের মত করে নিন। রবীন্দ্রনাথ অতুলনীয় ব্যক্তি, তাইবলে কেউই আরেকজন রবীন্দ্রনাথ চায় না।
শিখুন অন্যের উদাহরন থেকে, তাকে প্রয়োগ করুন নিজের মত করে।
.          সফল SEO ভিজিটর বাড়ায়
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নানারকম পদ্ধতি যার সাহায্যে ব্লগ বা ওয়েবসাইটের তথ্য সার্চইঞ্জিন, ডিরেক্টরী ইত্যাদিতে পাঠানো হয়। ফল হিসেবে সাইটের প্রচার বাড়ে এবং ভিজিটর বাড়ে। পিপিসি-পিটিসি একাজগুলিও করা হয় সাইটের প্রচার বাড়ানোর জন্যই। কাজেই আপনি সেপথে যেতেই পারেন।
গুগলের বক্তব্য শোনা যাক। সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে সাইট তৈরী করবেন না, একেবারে স্পষ্ট করে বলছে তারা। করলে কি হবে ?
তাদের নির্দিষ্ট ফর্মুলা আছে সাইট যাচাই করার জন্য। কোন সাইটে ভিজিটর কিবাবে আসে (কিওয়ার্ড সার্চ করে নাকি সরাসরি এড্রেস ব্যবহার করে নাকি রেফারেল পদ্ধতিতে), সেইসাথে ভিজিটর সাইটে কতক্ষন থাকে, কতগুলি পেজ দেখে, কোথায় ক্লিক করে এগুলি তাদের জানা তথ্য। এই সবগুলি বিষয় একসাথে করে কোন সাইটের র‌্যাংকিং ঠিক করা হয়। আপনি কত বেশিবার সেখানে তথ্য পাঠালেন তাতে কিছু যায় আসে না। বরং বিপরীত ফল হিসেবে তারা শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়।
সত্যিকারের ভাল সাইটের মুল বৈশিষ্ট যে সাইট ভিজিটর পছন্দ করে, একবার ব্যবহারের পর আবারো ব্যবহার করে, দীর্ঘ্য সময় কাটায়, বিভিন্ন সাইটের সাথে লিংক থাকে ইত্যাদি। আর এই বিষয়গুলি নির্ভর করে সাইটের বিষয়বস্তুর ওপর।
.          ইন্টারনেটে খুব দ্রুত সাফল্যলাভ করা যায়
আপনাকে আগ্রহি করার জন্য এধনের কথা বলা হতে পারে। বাস্তবতা হচ্ছে কোন কোন সার্চ ইঞ্জিনে তথ্য যেতে সময় লাগে ৬০ দিন। কাজেই দুমাস আগে ভিজিটর নাও পেতে পারেন। এরপর যত দিন যাবে ভিজিটর বাড়তে থাকবে। সেই বৃদ্ধির হার নির্ভর করে কি পরিমান তথ্য আপডেট করা হচ্ছে তার ওপর।
বরং সহজভাবে বিষয়টি উল্লেখ করা যাক, গুগল এডসেন্স থেকে হাজার ডলার আয় করতে হলে অন্তত বছরদুয়েক চেষ্টা করতে হবে। এরপর চেষ্টা করলে আরো উন্নতি সম্ভব, কিন্তু সময় কমানোর কোন পদ্ধতি নেই।
সবকথার শেষ কথা, গুগল এডসেন্স অত্যন্ত ভাল সুযোগ। একে সত্যিকারের কাজে লাগানোর জন্য সত্যিকারের উপকারী সাইটই তৈরী করা প্রয়োজন। কোনমতে সাইট তৈরী করে সত্যিকারের সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

No comments:

Post a Comment