Sunday, October 23, 2011

গ্রাফিক ডিজাইনে টেক্সট ব্যবহারের নিয়ম

ইলাষ্ট্রেটর, কোরেল ড্র, ফটোশপ কিংবা অন্য যে সফটঅয়্যারই ব্যবহার করুন না কেন, ডিজাইনের সময় কিছু টেক্সট ব্যবহার করতেই হয়। অধিকাংশ সময় টেক্সটই মুল বিষয়, বাকি যাকিছু ব্যবহার করা হয় তা দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য। কাজেই সঠিকভাবে টেক্সট ব্যবহার না করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্যহানি ঘটতে পারে অন্যদিকে মুল উদ্দেশ্যই ব্যহত হতে পারে।
গ্রাফিক ডিজাইনারকে সবসময়ই কাজ করতে হয় অন্যকে দেখানোর উপযোগি করে। সেইসাথে যোগ হয় সরাসরি ক্লায়েন্টর পছন্দ অপছন্দ। আপনি হয়ত এমন ক্লায়েন্ট পেয়েছেন যিনি বলছেন, আমাকে ফেসবুকের মত স্পষ্ট লোগো তৈরী করে দিন। অথচ আপনি ভাল করেই জানেন ফেসবুক, মাইক্রোসফট এদের মত লোগো তৈরী করলে তিনি সেটা বিবেচনায় আনবেন না। অনেক সময়ই ক্লায়েন্ট আশা করেন লোগো তার প্রতিস্ঠানকে পরিচিত করবে। অন্তত ফেসবুক কিংবা মাইক্রোসফটের ক্ষেত্রে বিষয়টি বিপরীত। এই লোগোগুলি মানুষ পছন্দ করে এর পেছনের কোম্পানীর কারনে।
আরেক দৃষ্টিতে দেখুন। কোকাকোলার টেক্সট সেপ গোলাকার যা অর্গানিক (এখানে তরল) বুঝায়, অন্যদিকে মাইক্রোসফটের টেক্সট ধারালো যা প্রযুক্তি বুঝায়। অন্তত এই বিষয়টি আপনি আগেই ঠিক করে নিতে পারেন।
ডিজাইনে টেক্সট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনার প্রথম করনীয় তাই এর ব্যাকরন মেনে চলা। ক্লায়েন্ট পছন্দ করুন বা না করুন, ডিজাইনার হিসেবে আপনি এই নিয়মের বাইরে যেতে পারেন না। এখানে টেক্সট ব্যবহারের মুল নিয়মগুলি উল্লেখ করা হচ্ছে।
শুরুতে টেক্সট এর মুল দুটি ধরন একবার লক্ষ করে নিন। টেক্সটকে শেরিফ এবং সানস শেরিফ এই দুই প্রধানভাবে ভাগ করা হয়। শেরি হচ্ছে যার শেষে অতিরিক্ত বারান্দার মত অংশ থাকে, যেমন টাইমস রোমান (ছবিতে ডিরেকশন লেখার কোনা লক্ষ্য করুন)। সানস শেরিফ হচ্ছে এই অতিরিক্ত অংশটুকু নেই, যেমন এরিয়েল (ছবিতে ষ্ট্রাকচার)। প্রথমেই লক্ষ করে নেবেন কোন ধরনের ফন্ট আপনি ব্যবহার করবেন।
এবারে ফন্ট ব্যবহারের প্রধান ৪ নিয়ম জেনে নেয়া যাক।

কন্ট্রাষ্ট
বিশেষ টেক্সট এর প্রধান বৈশিষ্ট সেই অংশটুকু উজ্জলভাবে ফুটে ওঠে। বিষয়টি হতে পারে টেক্সট এর ধরন, আকার, রং, লঅইনের পুরুত্ব, ফাকা যায়গার পরিমান ইত্যাদি যে কোনকিছুর কারনেই। কোন বিশেষ শব্দকে জোরালোভাবে তুলে ধরার জন্য এই বৈশিষ্টগুলি পরিবর্তন করে অন্যদের থেকে পৃথক রাখুন। এমনভাবে রাখুন যেন প্রথমেই দৃষ্টি সেখানে যায়।

রিপিটেশন
একই রং, সেপ, লাইন, ফন্ট, ফন্টের মাপ, ইত্যাদি ডিজাইনের মধ্যে একাধিক যায়গায় ব্যবহার করুন। অন্যকথায় ভিন্ন ভিন্ন যায়গায় ভিন্ন ভিন্ন মাপের টেক্সট, রং, গ্রাফিক এলিমেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না। এদের মধ্যে মিল রাখুন। নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষকে একাধিকবার ব্যবহার করুন।

এলাইনমেন্ট
ডিজাইনে টেক্সট বা অন্য যাকিছু ব্যবহার করুন না কেন, প্রত্যেককে কোনকিছুর সামে মিল করে রাখুন। এক লাইনের সাথে আরেক লাইন, টেক্সট এর সাথে গ্রাফিক এলিমেন্ট ইত্যাদি ব্যবহারের সময় বামদিকে, ডানদিকে বা মাঝখানে মিল করে রাখুন। ইলাষ্ট্রেটরে যে কোন কিছু সরানোর সময় স্মার্ট গাইড বলে দেয় কিসের সাথে কোন যায়গায় এলাইন হচ্ছে। এদিকে দৃষ্টি রাখুন।

প্রক্সিমিটি
একই ধরনের বিষয়গুলি একটি গ্রুপ হিসেবে পৃথক রাখুন। যেমন বর্ননা এবং ঠিকানা দুটি বিষয়, এদেরকে নিজেদের মধ্যে কাছাকাছি রাখুন কিন্তু সমস্ত ডিজাইনে দুটি বিষয়ের মধ্যে দুরত্ব রাখুন। এরফলে ডিজাইন একদিকে সরল মনে হবে অন্যদিকে সহজে অর্থ বোঝা যাবে।

এই নিয়মগুলি সব ডিজাইনার মেনে চলেন। কিন্তু ক্রিয়েটিভ ডিজাইন বিষয়টিই ব্যতিক্রমি। আপনাকে সবসময় নতুন কিছু করতে হয়। দুটি বিষয়কে পরস্পরবিরোধী মনে হতে পারে। আপনি সবকিছু যদি নিয়ম মেনেই করেন তাহলে নতুনত্ব দেখাবেন কিভাবে।
বাস্তবে, নিয়ম আগে। এরপর ক্লায়েন্ট যদি এমন কিছু চান, এমন টেক্সট যা কষ্ট করে পড়তে হবে, অধিকাংশ মানুষ আদৌ বুঝবে না সেটা কি, তেমন করতে পারেন।

ফটোশপ টিউটোরিয়াল



No comments:

Post a Comment