ইন্টারনেটে আয় কথাটি বলার সময় সহজ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। অন্তত যারা একে ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার করেন তারা বলেন কত সহজে, ঘরে বসে হাজার ডলার আয় করতে পারেন। আগের পর্বে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আয়ের বেশকিছু সমস্যা। সেখানে আপনার তেমন কিছু করার নেই। যদি কোনভাবে আপনি সমস্যাগুলি এড়িয়ে চলতে পারেন (নিশ্চয়ই সম্ভব, যারা প্রতিদিন নতুন মুভি ডাউনলোড করে তাদের কাছে যেমন ইন্টারনেটের গতি সমস্যা না, যারা কোটি টাকা পাচার করে বলে অভিযোগ তাদের কাছে লেনদেন যেমন সমস্যা না) তাহলে এরপর কি হতে পারে।
আগে দেখে নেয়া যাক ইন্টারনেটে আয়ের পদ্ধতিগুলি কি কি ? একটি অবশ্যই আউটসোর্সিং কাজ করা। যেসব নীতিনির্ধারক আউটসোর্সিং কাজের কথা বলেন তারা ধরেই নেন তৈরী পোষাকের মত তারা কাজের অর্ডার পাবেন, সেখানে হাজার হাজার লোক নিয়োগ দেবেন, সেখান থেকে মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার আয় হবে। এটা স্বপ্ন। বাস্তবতা হচ্ছে আপনি যদি প্রোগ্রামার হন, ওয়েব ডিজাইনার হন, গ্রাফিক ডিজাইনার হন এমনকি ডাটা এন্ট্রি (টাইপিং) করেও আয় করতে পারেন আপনি ওধরনের কারখানায় যোগ দেবেন না। আপনি নিজেই ছোট কাজ খোজ করবেন এবং সেটা করে সরাসরি নিজে আয় করবেন। আপনার সেপথ বন্ধ রাখার আপ্রান চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তারপরও মানুষ এটাই পছন্দ করছে।
কাজেই, একটি পথ হচ্ছে বিশেষ কাজে দক্ষতা অর্জন করে সেই কাজ করা। দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরী করে তার মাধ্যমে আয় করা। এই পদ্ধতি এতটাই লাভজনক যে এরই মধ্যে বিশ্বে বহুকোটি ব্লগ তৈরী হয়েছে। প্রতি মুহুর্তে হচ্ছে।
সাধারনভাবে বিষয়টি হচ্ছে, আপনি একটি ওয়েব সাইট তৈরী করলেন। সেখানে এমন তথ্য রাখলেন যা সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ আছে। তারা যখনই সেই তথ্য খোজ করবেন আপনার সাইটে যাবেন। সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচার করে আপনি বিজ্ঞাপনদাতার কাছে অর্থ পাবেন।
বিজ্ঞাপন পাওয়ার কাজটি সহজ। গুগলের বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক রয়েছে এডসেন্স নামে। একই ধরনের আরেকটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক চিতিকা ক্রমেই ভাল করছে। এছাড়া আছে আমাজন, ই-বে এর মত বিশ্বখ্যাত বিক্রেতা সহ লক্ষ লক্ষ প্রতিস্ঠান যারা প্রচারের জন্য অন্যের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে।
বাংলাদেশের জন্য বাস্তবতা কি দেখা যাক।
বলা হয় বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন শতকরা ১ জন। অন্যান্য পরিসংখ্যানের মত এই পরিসংখ্যান নিয়েও সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক। বাংলাদেশে প্রায় অর্ধেক মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এটা ঠিক, কিন্তু যিনি ব্যবহার করেন তিনি একাই দুই-তিন-চার-পাচটি পর্যন্ত সীম ব্যবহার করেন।
কাজেই, জনসংখ্যার শতকরা ১ জন যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে তখন আপনার সাইটে তারা সবাই আসবেন এমন আশা করা বোকামি। সাধারনত আয়ের লক্ষ রেখে তৈরী করা হয় তথ্যবহুল সাইট। নিজের টাকা খরচ করে ইন্টারনেটে তথ্য খোজা বাঙালীর সংখ্যা আবারো শতভাগের একভাগ। অথচ বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের প্রথম হিসেব হচ্ছে সাইটে গড়ে দৈনিক ১ হাজার ভিজিট থাকতে হবে। বছর তিনেকের ব্লগিং অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সামান্য দুচারটি ব্লগ হয়ত এই পরিমান ভিজিটর পায়।
ভিজিটর সংখ্যা কম থাকার কারনে একদিকে আপনার পক্ষে বিজ্ঞাপন পাওয়া কঠিন, অন্যদিকে সেখান থেকে আয় হওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীন।
বিষয়টি আরেকটু ভালভাবে দেখা যাক।
এডসেন্স এর নিয়ম হচ্ছে আপনি গুগলের কাছে আপনার সাইটের পরিচয় দিয়ে একাউন্টের জন্য আবেদন করবেন। তারা আপনার সাইট যাচাই করবে। অনুমতি দিলে আপনি তাদের দেয়া কয়েক লাইন কোড আপনার সাইটে ব্যবহার করবেন। এরফলে তারা ক্রমাগত আপনার সাইট দেখবে, সেখানে মুল শব্দগুলির সাথে মিল রেখে সেই বিষয়ে বিজ্ঞাপন দেখা যাবে আপনার সাইটে। কোন ভিজিটর যখন সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন তখন আপনি টাকা পাবেন। প্রতি ক্লিকে কয়েক সেন্ট থেকে কয়েক ডলার পর্যন্ত দেয়া হতে পারে। এভাবে মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় সাধারন ঘটনা।
কথা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে আয় নিয়ে। আপনি নিশ্চয়ই বাংলা ভাষায় ওয়েবসাইট তৈরী করবেন মানুষের উপকারের জন্য। ইংরেজি ওয়েবসাইটের যখন অভাব নেই।
আপনার জন্য প্রথম ধাক্কা, গুগল বাংলা ওয়েবসাইটের জন্য এডসেন্স ব্যবহারের অনুমতি দেয় না। আমরা গলা ফাটিয়ে বলতে পারি আমরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, ব্যবহারকারীর সংখ্যা হিসেবে বিশ্বের ৫ম (কিছুদিন আগেও ৭ম ছিল) তারপরও বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ এবং ভারতে কিছু অঞ্চলের বাইরে বাংলা অপরিচিত ভাষা। চেষ্টা থাকা সত্বেও এই সাইটে বানানভুল এড়ানো যায় না।
আপনি যদি ইংরেজি ওয়েবসাইট করতে চান, আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে এমন ব্যক্তির সাথে যারা অনায়াসে লক্ষ বা কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে পারেন। একে প্রতিযোগিতা বলে না।
আপনি হয়ত কোনভাবে এটাও মানিয়ে নিলেন। হিসেব করলেন ১৫ কোটি জনসংখ্যার শতকরা একজন অর্থ ১৫ লক্ষ, তার শতকরা ১ জন অর্থ দেড় লক্ষ, এমনকি তারও যদি শতকরা ১ জন হয় সেটাও বেশ বড় সংখ্যা। তাদের ওপর নির্ভর করে আপনি বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন।
আপনি খুব সহজে আমাজন, ই-বে থেকে শুরু করে অন্য কোম্পানীর বিজ্ঞাপন যোগ করতে পারেন। শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন রাখা আপনার কাজ। ভিজিটর ক্লিক করে তাদের সাইটে যাবেন, এরপর বাকি কাজ তাদের। আপনি মাঝখান থেকে সেখানে ভিজিটর পাঠানোর জন্য টাকা পাবেন।
প্রথম প্রশ্ন, ভিজিটর বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে কেন ?
বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে কিছু কেনা যায় না, অনলাইনে টাকা দেয়া যায় না। কাজেই ক্লিক করার কোন কারন নেই। আপনার আয় হওয়ারও কোন কারন নেই।
এই বর্ননা আরো দির্ঘায়িত করা যেতে পারে। মুল বিষয় এটুকুই। সমস্যার কেন্দ্র এক যায়গায়।
দুই পর্বের এই লেখায় যাকিছু বলা হয়েছে সেগুলি আপনাকে নিরুতসাহিত করার জন্য যথেষ্ট। যদি ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজে আয়ের আশা করেন তাহলে দুরে থাকাই ভাল।
সবাই সহজে পরাজয় মানেন না। যখন কোন পথ থাকে না তখন কিছু মানুষ পথ তৈরী করেন। অন্যদের পথ দেখান। এভাবেই সভ্যতা গড়ে উঠেছে। যদি সেই মনোভাব থাকে তাহলে সমস্যাগুলি জেনে সেগুলি সমাধানের চেষ্টা করবেন এটাই কাম্য।
বাংলাদেশের সমস্যা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ উদাসিন। প্রতিবছর জনসংখ্যার সাথে যোগ হচ্ছে ২৫ লক্ষ মানুষ, কর্মসংস্থানের উপযোগি হচ্ছে তাদের সংখ্যাও এর কাছাকাছি। বছরে ২০ লক্ষ মানুষের কাজের সুযোগ তৈরী করার সামর্থ্য সরকারের নেই। এখনই মানুষ চাকরী পাওয়ার আশা করে না। এরসাথে থাকার যায়গা, কৃষিজমি কমে যাওয়া, শিক্ষা-চিকিতসার সুযোগ কমে যাওয়া, দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধি এসব ঘটতেই থাকবে। এর সমাধান হতে পারে ইন্টারনেট। একেবারে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যাক মানুষ নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করতে পারেন। কাজটি সহজ না। এখানে সরকারের এবং সমাজের সহযোগিতা প্রয়োজন, বিরোধীতা না। এই দল নাকি ওই দল একথা বলে সমাধান হচ্ছে না। ক্ষমতা যার হাতে সমাধান দেয়া তার দায়িত্ব। নাগরিক হিসেবে সেটা আপনার পাওনা। আপনি যদি পাওনা সম্পর্কে সচেতনতা না দেখান, আপনার সমস্যা নিয়ে নেতার মাথা ঘামানোর কোন কারন নেই। তারা খারাপ নেই।
আপনি অবস্থানগত কারনে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে পারেন। কিন্তু সমাজে যখন অভুক্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে তখন আপনি প্রভাবমুক্ত থাকতে পারেন না। এর সহজতম সমাধান হতে পারে ইন্টারনেট ভিত্তিক কাজে সমস্যা দুর করা। পে-পল ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হবে, থ্রিজি চালু করা হবে এসব বলে যুগ পার করে সমাধান হচ্ছে না।
আর ডিজিটাল বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হবে, ধনী দেশে পরিনত হবে বলে যাকিছু বলা হচ্ছে তার যদি অন্য ব্যাখ্যা থাকে তাদের কাছে জেনে নিন।
ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টারনেটে আয়
ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টারনেটে আয়
- কিভাবে ইন্টারনেটে অর্থ উপার্জন করবেন
- টাকা কিভাবে হাতে পাবেন
- কিভাবে বেশি কাজ পাবেন
- গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার পদ্ধতি
- ফাইল আপলোড করে উপার্জন
- ডাটা এন্ট্রি করে উপার্জন
- গুগল এডসেন্সর এর অজানা তথ্য – ১
- গুগল এডসেন্সর এর অজানা তথ্য - ২
- গুগল এডসেন্সর এর অজানা তথ্য - ৩
- পেইড টু ক্লিক, পিটিসি
- রিভিউ লিখে আয়
- এফিলিয়েট মার্কেটিং
- এডসেন্স ব্যবহারের নিয়ম-কানুন
- অন্যের সাইট থেকে উপার্জন
- ই-বুক বিক্রি করে আয়
- ফ্রিল্যান্সিং কাজ কোথায় পাবেন
- গুগল কাষ্টম সার্চ (এডসেন্স ফর সার্চ) থেকে আয়
- এডসেন্স ব্যবহারের নিয়ম, যে ভুলগুলি করবেন না
- ইমেইল মার্কেটিং
- বই বিক্রি করুন গুগলের সাহায্যে
- ইন্টারনেটে আয় সম্পর্কে ১০টি ভুল ধারনা
- ইন্টারনেটে আয়ের ৫টি সেরা পথ
- ফ্রিল্যান্সার থেকে কিভাবে কাজ পাবেন
- ফটোশপ ডিজাইন বিক্রি করে আয়
- ফেসবুক থেকে আয়
- যে কারনে এডসেন্স ব্যবহারের সুযোগ পাবেন না
- ফ্রিল্যান্সিং কাজে সবচেয়ে বড় ভুল
- ফ্রিল্যান্সিং কাজে সাব-কন্ট্রাক্টর ব্যবহার করে বেশি আয়
- পিটিসি এর অজানা তথ্য
- ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হওয়ার ৫ কারন
- সময় বাচানোর সেরা উপায়
- ক্লায়েন্ট ধরে রাখার জন্য কি করবেন
- এডসেন্স এর বিকল্প বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা চিতিকা
- ওয়ার্ডপ্রেস টেম্পলেট বিক্রি করে আয়
- ফ্রিল্যান্সিং কাজে ভাল করার উপায়
- আস্থা অর্জনের ৩ উপায়
- কম সময়ে বেশি কাজ করা
- ফাইলসার্ভে ফাইল আপলোড করে আয়
- ইন্টারনেটে অর্থ আদান-প্রদানের বিভিন্ন পদ্ধতি
- আয় করুন ই-বে থেকে
- ভার্চুয়াল এসিষ্টেন্ট ব্যবহার করে বেশি কাজ করা
- ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি কখন ব্যর্থ
- কিভাবে বাস্তবসম্মত লক্ষ্য স্থির করবেন
- ফ্রিল্যান্সিং কাজের ভাল দিক-মন্দ দিক
- ফ্রিলান্সিং পরিকল্পনার ৩ ধাপ
- ফ্রিল্যান্সিং কাজে নিজেকে প্রফেশনাল হিসেবে তুলে ধরা
- ফ্রিল্যান্সার হতে চান ? নিজেকে প্রশ্ন করুন
- সাফল্যের ৪ সুত্র
- টাকা আয় করুন রিভিউ-মি তে রিভিউ লিখে
- ফ্রিল্যান্সারের প্রধান ৫ সমস্যা এবং সমাধান
- আউটসোর্সিং-ক্রাউসসোর্সিং-ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায়
- ইমেইল মার্কেটিং এ কুশলী হোন
- অনলাইন আয়ের জন্য অফলাইন প্রচার
- ফ্রিল্যান্সিং : গুপ্তধন খুজুন
- ইনবাউন্ড মার্কেটিং
- এফিলিয়েট মার্কেটিং ভাল করার কিছু নিয়ম
- ফ্রিল্যান্সিং কাজে মুল্য নির্ধারন
- ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কেন ফ্রি কাজ করবেন না
- ফ্রিল্যান্সিং কাজে কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ১০ কৌশল
- ফ্রিল্যান্সারের ১০ ভয়
- কিভাবে লেখক হবেন
- ফ্রিল্যান্সিং বা ছোট ব্যবসা কেন পছন্দ করবেন
- ফ্রিল্যান্সারের মেধা এবং যোগ্যতা
HTML na janle ki blog chalano jaay na?
ReplyDeleteব্লগার, ওয়ার্ডপ্রেসের অধিকাংশ কাজ ক্লিক করে করা যায়। জানলে সুবিধে বেশি।
ReplyDeleteDhanyabad.
ReplyDeleteApnar sathe ekmot.
ReplyDelete