Thursday, January 5, 2012

ফ্রিল্যান্সারের সেরা সম্পদ

সাধারন ধারনা ব্যবসা করার জন্য মুলধন প্রয়োজন হয়। যার বিনিয়োগ যত বেশি তার ব্যবসা তত ভাল। বাস্তবে কি সেটাই ঘটে ? অনেকে খুব অল্প বিনিয়োগে সফলভাবে ব্যবসা করেন, অনেকে বহু অর্থ বিনিয়োগ করে ক্ষতির সম্মুখিন হন।
ফ্রিল্যান্সারের কাছে ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা। সেখানে তার বিনিয়োগ কি ? কৌশলই বা কি ? এই বিষয়গুলি নিয়ে এই পোষ্ট।
.          বিস্বস্ততা
সাধারনভাবে বলা হয় বাঙালী ভাল ব্যবসায়ী না। বিষয়টি তুলনামুলক। একসময় বাংলাদেশে মাড়োয়ারী ব্যবসায়ী বলে একটি কথা প্রচলিত ছিল। তারা এদেশে এসে সুনামের সাথে সফলভাবে ব্যবসা করেছে। তাদের মুল সম্পদ ছিল বিস্বস্ততা। ক্রেতা বিশ্বাস করত তারা ঠকাবে না, ভেজাল জিনিষ দেবে না, দাম বেশি রাখবে না। বিপরীতভাবে বাঙালী ব্যবসায়ীদের কাছে তাতক্ষনিক লাভ বেশি গুরুত্বপুর্ন। ক্রেতার কাছে যত লাভ করা যায় সেটাই তারা আশা করে। ফল হিসেবে সাময়িকভাবে ব্যবসায়ীর লাভ হলেও ক্রেতা প্রতিমুহুর্তে মনে মনে বলেন, এই বুঝি ঠকাল। তিনি সবসময়ই আরো নির্ভরযোগ্য যায়গা খোজ করেন। সহজ কথায় গুডউইল বা সুনাম বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয় না।
ফ্রিল্যান্সারের জন্য গুডউইল সবচেয়ে বড় সম্পদ। আপনি যে কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন সেটা ঠিকভাবে করবেন, সময়মত কাজ শেষ করবেন এটাই ক্লায়েন্ট আশা করে। কাজেই ফ্রিল্যান্সারের প্রথম লক্ষ নির্ভরশীল হিসেবে নিজের পরিচিতি তৈরী করা। বাস্তবে কাজটি যেভাবে করা হয় তা হচ্ছে, সময় ঠিক রাখা এবং কথা ঠিক রাখা। যে কাজে হাত দেবেন সেকাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যত ভালভাবে করা সম্ভব সেটা করা। যদি সমস্যাও হয় তাহলে তাকে বুঝানো আপনি সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন। ক্লায়েন্ট দক্ষতার সীমাবদ্ধতা মানতে রাজী, গাফিলতি মানতে রাজী নন। তিনি আপনার কন্ট্রাক্ট বাতিল করার সময় আপনার যুক্তি শুনবেন না।
কাজেই আপনার প্রথম দায়িত্ব, কথা দিয়ে কথা রাখা। সময়ে ক্ষতির শিকার হলেও ভবিষ্যত লাভের কথা মাথায় রেখে।
.          সময়ের গুরুত্ব দেয়া
ফ্রিল্যান্সার যখন কোন কাজ শুরু করেন তখনই হিসেব করা হয় কাজটি কখন শেষ হবে। কোন সমস্যার কারনে কাজ সময়মত শেষ করা সম্ভব নাও হতে পারে (অসুস্থতা থেকে শুরু করে নানাবিধ কারনে)। ক্লায়েন্ট এধরনের পরিস্থিতি বোঝেন। কিন্তু গ্রহনযোগ্য কারন ছাড়াই যদি কাজ সময়মত না করেন তাহলে সেটা তিনি মানতে রাজী নন। হয়ত সেই কাজ তার নির্দিষ্ট সময়ে প্রয়োজন, সেই সময় পার হলে কাজের প্রয়োজন নেই।
যখনই কোন কাজ হাতে নেবেন আগেই ঠিক করে নিন কখন নিশ্চিতভাবে কাজ শেষ হবে। সেইভাবে কথা দিন। সময়মত কাজ করে না দিলে সেকাজ হাতছাড়া হবে সেইসাথে আপনার নামের সাথে স্থায়ীভাবে বিষয়টি যোগ হবে। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলি আপনার প্রতিটি কাজের রেকর্ড রাখে। ফলে পরবর্তীতে কাজ পাওয়া কষ্টকর হয়ে দাড়াবে।
সময়মত কাজ করা, সময়মত যোগাযোগ করা, যোগাযোগ করলে সাথেসাথে উত্তর দেয়া এই বৈশিষ্ট ছাড়া ভাল ফ্রিল্যান্সার হওয়া যায় না।
.          দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা
আপনার মনে হতে পারে এটাই শুরুতে থাকা উচিত ছিল। বাস্তবে অনেক ক্লায়েন্টই একে কম গুরুত্ব দেন। তবে একথা ঠিক দক্ষ না হলে এবং অভিজ্ঞতা না বাড়লে কাজ করতে সমস্যা হবে।
বিষয়টি এমন, আপনি জানেন কোন প্রোগ্রামের বিশেষ কাজ কিভাবে করতে হয়। কাজেই ক্লায়েন্ট যা চান আপনি ঠিক সেটাই করে দিতে পারেন। এটা দক্ষতা। আপনি দক্ষতা বাড়াতে পারেন ক্রমাগত শেখার চেষ্টা করে।
আর ক্লায়েন্ট কোন নির্দেশ দিলে আপনি খুব দ্রুত বুঝতে পারেন, এটা অভিজ্ঞতা। ডিজাইন করার সময় ক্লায়েন্ট হয়ত সংক্ষেপে বলবেন আধুনিক কিছু চাই কিংবা ঐতিহ্যবাহী কিছু চাই। আপনাকে সাথেসাথে বুঝে নিতে হবে ঐতিহ্যবাহি এবং আধুনিক দুটি দুধরনের বিষয়। সেখানে রং, গ্রাফিক এলিমেন্ট, ফন্ট সবকিছুই পৃথক। দীর্ঘদিন কাজ করে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়।

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি সাফল্য চান। এই সাফল্য অর্জন করতে হয় অনেক দিনের চেষ্টায়। এই বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি রাখলে নিজের এমন পরিচিতি তৈরী করতে পারেন যেখানে ক্লায়েন্ট আপনার নাম দেখে অন্য কোন প্রশ্ন না করেই কাজ দেবেন।

ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টারনেটে আয়

No comments:

Post a Comment