Saturday, November 26, 2011

ফ্রিল্যান্সিং : ক্লায়েন্টের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করুন

ফ্রিল্যান্সার হেসেবে আপনার মুল দায়িত্ব ক্লায়েন্টের চাহিদা পুরন করা। আবারো বলতে হচ্ছে, ক্লায়েন্টকে খুশি করা। কাজ কত ভালভাবে করেছেন, সেটা কত সুন্দর হয়েছে তাতে কিছু যায় আসে না। ক্লায়েন্ট যদি অসুন্দর কাজ পছন্দ করেন তাহলে সেই সুন্দরের দাম পাবেন না। আপনি হয়ত ডিজাইন শেখার সময় শিখেছেন ছোট আকারের ঠিকানা লিখতে হয় স্পষ্ট-সহজ ফন্ট ব্যবহার করে অথচ ক্লায়েন্ট পছন্দ করেন থ্রিডি ইফেক্ট। তিনি না বললেও আপনি যদি বুঝে নিতে পারেন তিনি কি চান তাহলে সহজে তাকে খুশি করতে পারেন।
আপনাকে যখন বহু মানুষের কাজ করতে হয় তখন সাধারনভাবে সকলের সম্পর্কে একধরনের ধারনা তৈরী হয়। আবার বিশেষ ব্যক্তির জন্য বিশেষভাবে জানাও প্রয়োজন হয়। ক্লায়েন্টর মনোভাব যত জানবেন কাজ করা যেমন তত সহজ হবে তেমনি মনোভাব যাচাই করে আগে থেকেই সাবধান থেকে কারো কাজ ছেড়েও দিতে পারেন।
আপনার প্রথম দায়িত্ব অবশ্যই সাধারনভাবে সবচেয়ে ভাল যায়গা সেই বিষয়ে অনলাইন ফোরাম। তারা সাধারনত কোন প্রশ্নগুলি করেন, তারা কোন ধরনের অভিযোগ করেন, কোন ধরনের সহযোগিতা পেলে তারা খুশি হন, বিশেস কোন শব্দগুলি তারা পছন্দ বা অপছন্দ করেন এধরনের বিষয়গুলি আলোচনা করা হয় ফোরামে। যদি লেখক হন লেখকদের ফোরামে, ডিজাইনার হলে ডিজাইন ফোরামে সবসময়ই এধরনের আলোচনা যোগ হতে থাকে। এমনকি বিশেষ সমস্যায় পড়লে তার সমাধান কিভাবে করবেন সে প্রশ্নও করতে পারেন। অন্যরা সহযোগিতা করবে। আপনার কাজের সাথে সম্পর্কিত বহু ব্লগ পাবেন যেগুলি নানাধরনের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে পারে। কাজেই আপনার প্রথম কাজ, যে কাজ করছেন সেই বিষয়ে অন্যের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানা। আর এজন্য সবচেয়ে ভাল যায়গা সেই বিষয়ের ব্লগ বা ফোরাম।
সাধারনভাবে বিশেষ ধরনের ক্লায়েন্ট সম্পর্কে জানার পর বিশেষ কারো সম্পর্কে জানার প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে নিজের যাচাই পদ্ধতি একমাত্র পথ। সহজভাবে এজন্য যা করতে পারেন।

.          ক্লায়েন্টকে প্রশ্ন করুন
তিনি ঠিক কি চান যতটা সম্ভব বিস্তারিত জানতে চান। যদি তিনি আগ্রহ নিয়ে জানান তাহলে তারসাথে কাজ করা সহজ। প্রশ্ন করলে বিরক্ত হন এমন ক্লায়েন্টও পাওয়া যায়। তাদেরকে লিখিতভাবে মুল পয়েন্টগুলি দিতে বলুন।
অবশ্য প্রশ্ন করার সময় বিরক্তিকর প্রশ্ন নিশ্চয়ই করবেন না। কাজের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশ্নই করুন।
.          উদাহরন নিন
তিনি যে কাজ করাবেন সেধরনের কোন কাজ তারকাছে আদর্শ এমন উদাহরন নিন। যেমন লোগো ডিজাইনের ক্ষেত্রে জিজ্ঞেস করতে পারেন কোন লোগো তার পছন্দ। উত্তর পেলে আপনার পক্ষে কাজ করা অনেক সহজ হবে।
.          কাজের নমুনা দেখান
কাজ কিছুটা করার পর তাকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করুন সেটা ঠিকপথে চলছে কি-না। কোন পরিবর্তন করার প্রয়োজন বোধ করেন কি-না। তিনি কাজ দেখার পর আগের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারেন। আপনিও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়তে সাহায্য করতে পারেন।
কেউ নিজের সিদ্ধান্ত থেকে মোটেই সরেন না, কেউ নতুন উদাহরন দেখে খুশি হন, কেউ ক্রমাগত সিদ্ধান্ত পাল্টাতে থাকেন। আপনি জেনে নিন ক্লায়েন্টের মনোভাব কোনটি।

ক্লায়েন্টের মনোভাব জানার পর আপনি কি সিদ্ধান্ত নেবেন এমন প্রশ্ন করতে পারেন।
ক্লায়েন্ট যদি ক্রমাগত সিদ্ধান্ত পাল্টানোর মনোভাব দেখান তাহলে তার কাজ করা কষ্টকর। গোলপোষ্ট যদি ক্রমাগত পরিবর্তন করা হয় আপনি গোল দিতে পারেন না। এধরনের ক্লায়েন্টকে এড়িয়ে চলুন।
যদি বিরক্ত হন তাহলে তার নির্দেশ দেখে দেখে ঠিক সেটাই করতে চেষ্টা করুন। আর যদি তিনি আপনার পরামর্শে খুশি হন তাহলে তারসাথে কাজ করে সবচেয়ে আনন্দ পাবেন।
শেষ কথা হচ্ছে, কখনো ধরে নেবেন না ক্লায়েন্ট কি চান সেটা বুঝে গেছেন। সবসময়ই মনে করুন এটা এমন কিছু বিষয় যা আপনাকে জানতে হবে। এবিষয়ে যত দক্ষ হবেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তত ভাল করবেন।
কিছুটা অপ্রসাংগিক মনে হতে পারে তাহলেও পরের ঠকার অভিজ্ঞতা থেকে শিখে নিজে ঠকার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। স্থানীয়ভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার আগে জেনে নিন ক্লায়েন্ট টাকা ঠিকমত দেবে কিনা। যদি বাকি রাখতে চায় তার কাজ করবেন না। একবার বাকীর সুযোগ পেলে তিনি ক্রমাগত সেপথেই চলবেন। ওডেস্ক-ফ্রিল্যান্সার এর মত সাইটে তারা মধ্যস্থতা করে বলে সেখানে এধরনের ঝুকি নেই। 

ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টারনেটে আয়

No comments:

Post a Comment