Monday, February 20, 2012

ফ্রিল্যান্সারের সহজে বিক্রির ১০ উপায়

ফ্রিল্যান্সারের কাছে বিক্রি বিষয়টি খুবই গুরুত্বপুর্ন। ওয়েব ডিজাইনারের ক্ষেত্রে নিজের তৈরী ওয়ার্ডপ্রেস থিম কিংবা নিজের অভিজ্ঞতায় লেখা ই-বুক কিংবা নিজের উঠানো একটি ছবি ইত্যাদি যদি বিক্রি করতে না পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কাজেও তার প্রভাব পড়ে।  এমনকি নিজের তৈরী ব্লগ আর্টিকেল যদি ভিজিটর আকর্ষন করতে না পারে সেটাও বিক্রির ব্যর্থতা। ব্লগ আয়ের উতস সেকথা মনে রাখলে ভিজিটর পাওয়ার অর্থ বিক্রি করা।
কেউ যখন কিছু কেনেন তখন বেশকিছু বিষয় বিবেচনা করে কেনার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে সাধারনভাবে বিক্রির সময় বিবেচ্য বিষয়গুলি নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সার যখন বিক্রেতা তখন অনায়াসে একে কাজে লাগাতে পারেন।
সব ধরনের বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতাকে দোকান পর্যন্ত আনা বিক্রির বড় একটি ধাপ। ফ্রিল্যান্সারের ক্ষেত্রেও সেবা বা কাজকে ক্লায়েন্টের সামনে তুলে ধরা সমান গুরুত্বপুর্ন। এর পরের ধাপ কেনার বিষয়ে ক্লায়েন্টের সিদ্ধান্ত নেয়া।


এখানে সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে যে বিষয়গুলি কাজ করে তুলে ধরা হচ্ছে।
.          দাম
কিছু কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুমিকা রাখে দাম। অধিকাংশ ক্রেতা মুলত দামের ওপর ভিত্তি করে কেনার সিদ্ধান্ত নেন। অবশ্য পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সারের ক্ষেত্রে বিষয়টি খুব গুরুত্ব বহন করে না। তিনি বিক্রি বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত দাম কমানোর প্রতিযোগিতায় যান না বরং দাম এবং মান দুইয়ের সমতা রাখেন।

.          খ্যাতি
অনেকের কাছে খ্যাতি গুরুত্বপুর্ন বিষয়। নামকরা ব্রান্ডের পন্য কিনে গর্ববোধ করেন। ফ্রিল্যান্সারের ক্ষেত্রে বাস্তবতা হচ্ছে, প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারের নির্দিষ্ট একটি পরিধি থাকে। যত খ্যাতিমানই হোন না কেন সেই পরিধির বাইরে তিনি অপরিচিত।
অন্তত নিজের পরিধির মধ্যে খ্যাতি বাড়ানোর মাধ্যমে বিক্রি বাড়ানো সম্ভব।

.          সহজতা
কোন পন্য কেনা কতটা সহজ তার ওপর বিক্রি অনেকটা নির্ভর করে। বিশ্বখ্যাত কোকাকোলা বিপুল পরিমান ব্যবসা করতে পারে কারন এলাকার ছোট দোকানেও তাদের পন্য পাওয়া যায়। সেখানে পন্য পৌছে দিতে তাদের বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করতে হয়। জিনিষ হাতের নাগালে রাখার সাথে কোকাকোলা নামটি মানুষের কাছে পরিচিত করার কাজটিও করা হয়। সাফল্যের দিক থেকে বিবেচনা করলে তাদের পদ্ধতি ব্যবসার ভাল উদাহরন।
ফ্রিল্যান্সারের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্টের সাথে সহজ যোগাযোগ অনেক সুবিধে দিতে পারে। যিনি আগে কোন ফ্রিল্যান্সারের সাথে কাজ করেছেন তিনি তারসাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।

.          পরিচিতি
সময় যাওয়ার সাথেসাথে ফ্রিল্যান্সারের  নিজস্ব একটি পরিচিতি তৈরী হয়। ফ্রিল্যান্সারের কাছে সেটা অমুল্য সম্পদ। এর ওপর ভিত্তি করে ক্লায়েন্ট প্রথম সিদ্ধান্ত নেন তার কাছে কাজ করাবেন কি-না। সময়ের সাথেসাথে পরিচিতি বৃদ্ধি পাওয়া গুরুত্বপুর্ন।

.          ভীতি
অনেকেই কোন পন্য কেনার সময় ভয় পান। নতুন কোম্পানী কিংবা পন্যের ক্ষেত্রে এই ঘটনা বেশি ঘটলেও অনেক প্রতিষ্টিত কোম্পানীর পন্যও মানুষ নিশ্চিন্তে কেনেন না। ফ্রিল্যান্সারের দায়িত্ব তার কোন বিষয় ক্লায়েন্টের কাছে ভীতিকর কিনা যাচাই করা এবং ভীতি দুর করার ব্যবস্থা নেয়া।

.          প্রত্যাসা
বিজ্ঞাপনে সবসময়ই বাড়িয়ে বলা হয়। বাড়িয়ে বলা অবশ্য এই না যে সেখানে মিথ্যে বলতে হবে। কেউ যখন বলেন সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তখন তিনি এই নিশ্চয়তা দেন না যে তারচেয়ে নির্ভরযোগ্য কেউ নেই। তারপরও মানুষ এধরনের বক্তব্য শুনতে পছন্দ করে। সবচেয়ে ভাল, সবচেয়ে কম দাম, সবার সেরা এইজাতিয় বক্তব্য ক্রেতাকে আগ্রহি করে।

.          বিশ্বস্ততা
ব্যবসায় গুডউইল বলে একটি বিষয় কাজ করে। একারনেই ক্রেতা কিছু কেনার সময় নির্দিষ্ট দোকানে কেনেন। অন্যান্য ব্যবসার মত ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রেও বিশ্বস্ততা অর্জন বড় ভুমিকা রাখে।

.          সম্পর্ক
ক্রেতা-বিক্রেতা সম্পর্ক ব্যবসায় সবসময়ই গুরুত্বপুর্ন। হয়ত লক্ষ্য করেছেন পাশাপাশি দুটি দোকানের এক দোকান ভাল ব্যবসা করে, পাশের দোকান ক্রেতা পায় না। ফ্রিল্যান্সার এই বৈশিষ্টের দিকেও দৃষ্টি দিতে পারেন।

.          মুল্য
দাম সম্পর্কে একবার বলা হয়েছে। বিষয়টি আরেকবার উল্লেখ করা হচ্ছে, ক্রেতা যে টাকা দিচ্ছেন তার বদলে তিনি কি পাচ্ছেন তাকে তুলনা করে দেখা জরুরী। বিক্রেতার কাছে যেমন টাকা গুরুত্বপুর্ন ক্রেতার কাছে তেমনি পন্য গুরুত্বপুর্ন।

.          ফাউ
দামাদামি সবাই পছন্দ করে। বাড়তি কিছু পেতে চেষ্টা করে। বিজ্ঞাপনে সেকারনে এটা কিনলে ওটা ফ্রি ধরনের কথাবার্তা খুব বেশি।
ফ্রিল্যান্সার তার কাজের সাথে অতিরিক্ত হিসেবে কিছু দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন খুব সহজেই।

ক্রেতা যে বিষয়গুলি বিবেচনা করে কেনার সিদ্ধান্ত নেন সেটা যদি জানা থাকে তাহলে ফ্রিল্যান্সার যখন বিক্রেতা (সেবা অথবা কোন পন্য) তখন তারপক্ষেও ভাল করা সহজ। অবশ্য সকলের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি কাজ করে না। ক্লায়েন্ট তো বটেই, ফ্রিল্যান্সারের মনোভাবের কারনেও এদের একটির বদলে অন্যটি বেশি গুরুত্বপুর্ন হতে পারে।
সাধারনভাবে মানুষের মনোভাব পজিটিভ এবং নেগেটিভ দুধরনের বলে হিসেব করা হয়। কারো জন্য একটি কার্যকর কারো জন্য অন্যটি। সহজ উদাহরন হিসেবে, যদি পজিটিভ মনোভাব নিয়ে কাজ করে উন্নতি করতে চান তাহলে কাজের মান, বিশ্বস্ততা ইত্যাদির ওপর জোর দিতে পারেন।
আর যদি বিপরীত মনোভাব কাজ করে তাহলে সাফল্যের জন্য দাম কমানোর দিকে দৃষ্টি দিতে পারেন।

ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টারনেটে আয়

No comments:

Post a Comment