Tuesday, February 7, 2012

ফ্রিল্যান্সিং কাজের পরিবেশ ঠিক রাখবেন যেভাবে

প্রায় সমস্ত ফ্রিল্যান্সারই কাজ করেন নিজের বাড়ির কোন যায়গায়। স্বাভাবিকভাবেই পারিবারিক বিষয় সেখানে প্রভাব ফেলে। মনে হতে পারে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও চলে কিন্তু কোন একসময় এটা বড় ধরনের সমস্যা ডেকে আনতে পারে। কাজের মাঝখানে অন্যদিকে দৃষ্টি যাওয়ায় কাজের মানের ওপর প্রভাব পড়তে পারে, অন্যদিকে সময় ব্যয় করায় সময়মত কাজ শেষ না হতে পারে। অনেকের কাছেই এটা রীতিমত রশি টানাটানির মত। একদিক রক্ষা করলে আরেকদিকে সমস্যা তৈরী হয়।
এর সমাধান হতে পারে নির্দিস্ট কিছু সীমানা তৈরী করা। আপনি ঠিক করে নিতে পারেন কোন বিষয়ে কতটুকু মনোযোগ দেবেন। ঠিক কোন কোন বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন উল্লেখ করা হচ্ছে এখানে।


সীমানা উপকারে আসে কেন ?
প্রত্যেকেরই একই সময়ে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারো পক্ষে একই সময়ে দুটোই সামাল দেয়া সম্ভব, কারো পক্ষে সম্ভব হয় না। কাজেই আগে যদি নির্দিষ্ট করে নেয়া যায় কোন কাজে কতটুকু গুরুত্ব দেবেন তাহলে একধরনের মানষিক প্রস্তুতি থাকে যা ফ্রিল্যান্সারের কাজের গতি ঠিক রাখে। অন্যভাবে বললে, আগে থেকেই ঠিক করে নেয়া বিশেষ কোন কারনে কতটুকু ছাড় দিতে হতে পারে।

যে যায়গাগুলি সীমানা নির্দিস্ট করতে পারেন
.          যায়গার সীমানা
যারা ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য নির্দিষ্ট যায়গা ব্যবহার করেন তাদের ফল অন্যদের থেকে ভাল। পৃথক ঘর হলে সবচেয়ে ভাল। এভাবে যায়গা নির্দিস্ট করার অর্থ ফ্রিল্যান্সার যখন সেখানে কাজ করবেন তখন তাকে বিরক্ত করা যাবে না এটা অন্যদের জানিয়ে দেয়া। এমনকি অন্য কেউ যদি সেই যায়গা ব্যবহার করতে চায় তাহলে সেটাও জানিয়ে দেয়া তাতে আপনার কাজের ক্ষতি হবে বলে করা যাবে না। কাজে মনোযোগ দেয়ার জন্য যায়গার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন।
.          ব্যক্তিগত তথ্যের সীমানা
ফ্রিল্যান্সারের তথ্য রাখার সময় পারিবারিক-বন্ধুবান্ধবের তথ্য এবং ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক তথ্য পৃথকভাবে রাখা গুরুত্বপুর্ন। ব্যক্তিগত যোগাযোগের ফোন নাম্বার এক যায়গায় ফ্রিল্যান্সিং যোগাযোগের ফোন নাম্বার আরেক যায়গায় রাখাকে উদাহরন হিসেবে দেখতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ক সমস্ত তথ্যকে অন্যান্য তথ্য থেকে পৃথক রাখলে কাজের সুবিধে পাওয়া যায়।
.          কাজে বিরক্ত না করার সীমানা
কাজের মধ্যে অন্য বিষয় নিয়ে ভাবতে হলে কাজের সবচেয়ে ক্ষতি হয়। কলিং বেল বাজালে দরজা খোলা, ফোনের উত্তর দেয়া এগুলি এর উদাহরন হতে পারে। সীমানা ঠিক করার জন্য কাজের নির্দিস্ট সময় ঠিক করে নিতে পারেন। এই সময়ে এধরনের কাজগুলি অন্যরা করবে এভাবে জানিয়ে দিয়ে কাজে বেশি মনোযোগ দেয়া যায়।
.          কাজের সীমানা ঠিক করা
যারা নতুন ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করেন তাদের সামনে অনেক বড় উদাহরন থাকে। এই পরিমান কাজ করব, এই পরিমান আয় হবে ইত্যাদি। এখানেও সীমানা নির্ধারন করা ভাল। অবশ্যই আপনি অনেক বেশি কাজ করতে পারেন, অনেক বেশি আয় করতে পারেন কিন্তু নিচের দিকে একমি মান ঠিক করে নিন যেটুকু করতে কোন সমস্যা হবে না। এর বেশি যা করা যায় সেটা অতিরিক্ত কৃতিত্ব হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন।
.          সময়ের সীমানা
ইন্টারনেট ব্রাউজ করার সময় কত সময় গেছে লক্ষ্য করেননি, কিংবা গেম খেলতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় কাটিয়েছেন। কাজের বাইরে অন্য যাকিছু করবেন সেখানেও সীমানা ঠিক করে নেয়া ভাল। কোন কাজে কতটুকু সময় ব্যয় করা যেতে পারে আগেই জানা থাকলে কাজে প্রভাব পরে না। কখনো দুঘন্টা অন্যদিকে বেশি ব্যয় হলে জানা থাকে দুঘন্টা কাজ করা হয়নি, হয়ত অতিরিক্ত দুঘন্টা কাজ  করে সেটা পুশিয়ে নিতে হবে।
.          নিজের সময় ঠিক রাখা
ফ্রিল্যান্সিং কাজকে ঠির রেখে অন্যদিকে সময় কমিয়ে দিচ্ছেন। এটা ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য ভাল হলেও স্বাভাবিক জীবনের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। অন্য যাকিছু কাজ আছে তার জন্যও সময় হিসেব করে নিন। সপ্তাহে একদিন ছুটি নেয়া, অন্যান্য কোন কাজে কতটুকু সময় সেটা হিসেব রাখা, এভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব অন্যদিকে নিজের ওপর অতিরিক্ত চাপ যেন না আসে সে বিষয়ে সাবধান থাকা সম্ভব।

অনেকেই মনে করেন ফ্রিল্যান্সিং কাজে সময় নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলে, ওটা যারা সময় হিসেব করে অফিস করেন তাদের জন্য। বাস্তবে ফ্রিল্যান্সারকে সময় নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হয়। অফিস শেষে একজন চাকরীজীবী মনে করতে পারেন তার কোন কাজ নেই, ফ্রিল্যান্সারকে সবসময়ই মনে করতে হয় তার হাতে কাজ আছে যা তাকেই শেষ করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সারের জীবনযাপন অন্যদের থেকে আলাদা। সঠিক হিসেব করে চললে কাজ এবং ব্যক্তিগত-পারিবারিক-সামাজিক জীবন সবই ঠিক রাখা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং এবং ইন্টারনেটে আয়

No comments:

Post a Comment